পঞ্জাবের মুখ্যমন্ত্রী পদে চরণজিৎ সিং চান্নির কাঁধেই আস্থা রাখল কংগ্রেস। বিধানসভা নির্বাচনের প্রথম দফার ঠিক আগে চান্নিকেই মুখ্যমন্ত্রী পদপ্রার্থী হিসেবে ঘোষণা করলেন কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধী। অমরিন্দর সিং পরবর্তী অধ্যায়ে পঞ্জাবে কংগ্রেস সরকারের টালমাটাল পরিস্থিতি দক্ষতার সঙ্গেই সামলেছেন চান্নি। তারই পুরস্কার হিসেবে চান্নির প্রতি আস্থা রাখল কংগ্রেস হাইকমান্ড।
চান্নির বদলে অন্য কাউকে মুখ্যমন্ত্রী পদপ্রার্থী করলে দলে গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব উসকে উঠতে পারে। সেই উসকে ওঠার সম্ভাবনাকে কার্যত নষ্ট করে দিয়ে রবিবার রাহুল গান্ধী বলেন, '১০-১৫ দিনের মধ্যে কোনও নেতা তৈরি হয় না। লড়াই এবং সংগ্রামের মধ্যে দিয়ে নেতার জন্ম হয়। সিধু, চান্নি, জাখর- প্রত্যেকেই কঠিন পথ পেরিয়ে এসেছেন এবং শিখেছেন। হাজারো হিরের মধ্যে থেকে একটি হিরেকে বেছে নেওয়া সবসময়ই কঠিন। তাছাড়া চান্নিকে মুখ্যমন্ত্রী পদপ্রার্থী হিসেবে বেছে নেওয়াটা আমার সিদ্ধান্ত না। পঞ্জাববাসী এই সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। তাই আমার কাছে বিকল্প থাকলেও আমি সিদ্ধান্ত নিতে পারিনি। কারণ, পঞ্জাবের জনগণ একজন গরিব ঘরের মুখ্যমন্ত্রী চেয়েছেন। আর, আমি কেবলমাত্র তাতে সম্মত হয়েছি মাত্র।'
রাহুলের এই ঘোষণার আগে পঞ্জাবের কংগ্রেস সভাপতি নভজ্যোৎ সিং সিধু বলেন, দলের নির্দেশ সকলেই মেনে চলতে হবে। মুখ্যমন্ত্রী পদপ্রার্থী কে হবেন, তা সম্পূর্ণই দলের ব্যাপার। সিধু নিজেও মুখ্যমন্ত্রী পদপ্রার্থীর দৌড়ে ছিলেন। দলের নির্দেশ মেনে চলার কথা বললেও তিনি যে মুখ্যমন্ত্রী পদপ্রার্থী হওয়ার ব্যাপারে আগ্রহী ছিলেন, তা অবশ্য গোপন করেননি এই প্রাক্তন ক্রিকেটার-রাজনীতিবিদ।
আরও পড়ুন আরও তিনবার হত্যার চেষ্টা হয়েছিল ওয়াইসিকে, প্রকাশ্যে বিস্ফোরক তথ্য
সিধু বলেছেন, 'আমি রাহুল গান্ধীর সিদ্ধান্ত মেনে নিয়েছি। আমাকে যদি সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষমতা দেওয়া হত, তবে আমি মাফিয়াদের ধ্বংস করে দিতাম। জনগণের জীবনযাত্রার উন্নতি ঘটাতাম। যদি ক্ষমতা দেওয়া না-হয়, তবে আপনারা যাঁকে মুখ্যমন্ত্রী বানাবেন, তাঁর সঙ্গেই আমি হাসিমুখে পথ হাঁটব।'
আরও পড়ুন ‘যাঁরা শীর্ষে তাঁরা দুর্বল মুখ্যমন্ত্রী চান’, সিধুর মন্তব্যে অস্বস্তি বাড়ল কংগ্রেসে
দেশের হাতে গোনা কয়েকটি কংগ্রেসশাসিত রাজ্যের মধ্যে পঞ্জাব। তাই পঞ্জাবের ক্ষমতা ফের দখলে রাখতে মরিয়া কংগ্রেস। কিন্তু, বর্তমান পঞ্জাবে মাদক মাফিয়াদের বাড়বাড়ন্ত বারবার সেরাজ্যের প্রশাসনকে চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দিয়েছে। রাজ্যের যুবশ্রেণির অনেকেই মাদকে আসক্ত হয়ে পড়েছে। এই পরিস্থিতি থেকে বেরিয়ে আসতে চাইছেন পঞ্জাবের বাসিন্দারা। চান্নি সেই পরিস্থিতি কিছুটা হলেও নিয়ন্ত্রণে এনেছেন বলেই দাবি কংগ্রেসের।
পাশাপাশি, চান্নির জমানায় পঞ্জাবের কৃষকরাও কেন্দ্রীয় কৃষি আইনের বিরুদ্ধে আন্দোলনে সাফল্য পেয়েছেন। গোটা পরিস্থিতি বিবেচনা করেই মুখ্যমন্ত্রী পদপ্রার্থী হিসেবে চান্নির বিকল্প খুঁজে পেল না হাইকমান্ড। এমনটাই মনে করছেন কংগ্রেসের অনেকেই।