আত্মদর্শন থেকে নতুন সংকল্প। রাজস্থানের উদয়পুরের চিন্তন শিবির কংগ্রেসকে অনেক কিছুই দিয়েছে। যদিও বহু প্রাসঙ্গিক বিষয় সেখানে এড়িয়ে যাওয়া হয়েছে। অন্তত এমনই অভিযোগ হার্দিক প্যাটেলের। দলনেত্রী সনিয়া গান্ধীকে তিনি যে পদত্যাগপত্র পাঠিয়েছেন, তাতে তো অন্তত তেমনটাই দাবি করা হয়েছে। পাতিদারদের সংরক্ষণের দাবিতে আন্দোলন চালানো, 'পাতিদার আনামত আন্দোলন সমিতি'র নেতা হার্দিক ছিলেন গুজরাত কংগ্রেসের অন্যতম ভরসা। দল থেকে হার্দিকের পদত্যাগ তাই কংগ্রেসের কাছে বড় ক্ষতি।
কিন্তু, তার চেয়েও বড় প্রশ্নচিহ্ন তুলে দিয়েছে তাঁর পদত্যাগপত্র। যেখানে দলত্যাগী এই নেতা প্রশ্ন তুলেছেন রাজনীতির প্রতি রাহুল গান্ধীর দায়বদ্ধতা নিয়েই। উদয়পুরের চিন্তন শিবিরে রাহুলকে সামনে রেখেই আগামীর পথে এগোনো কংগ্রেসের কাছে যা রীতিমতো বড় ধাক্কা। হার্দিক তাঁর পদত্যাগপত্রে অভিযোগ করেছেন, প্রয়োজনের সময় রাহুল গান্ধীকে পাশেই পান না কংগ্রেসের নেতা ও কর্মীরা। রাহুলের কাছে পৌঁছতেই পারেন না। তার ওপর রাহুল ঘনঘন বিদেশে ঘুরে বেড়ান।
এই অবস্থায় সম্মিলিতভাবে সিদ্ধান্ত গ্রহণের রাস্তাতেও হাঁটতে পারছে না কংগ্রেস। কারণ, গান্ধী পরিবারকে কংগ্রেসের কারও কাছে জবাবদিহি করতে হয় না। তাঁরা একতরফা ভাবে সিদ্ধান্ত দলের ওপর চাপিয়ে দেন। চিন্তন বৈঠকে দলের এই সব ভুল-ত্রুটি নিয়ে কোনও আলোচনাই হয়নি। কিছু বিষয় যা তিনি দলের কাছে আলোচনার জন্য রেখেছিলেন, তা-ও এড়িয়ে যাওয়া হয়েছে সুকৌশলে। এমনটাই হার্দিক প্যাটেল তাঁর পদত্যাগপত্রে অভিযোগ করেছেন। স্বভাবতই তিন দিনের চিন্তন শিবিরের সাফল্য নিয়ে হার্দিকের এই অভিযোগের বাণ, কংগ্রেসের কাছে বড় আঘাত।
আরও পড়ুন- কেন্দ্রের বিরুদ্ধে আন্দোলনকারী কৃষকরা আপ সরকারের বিরোধিতায় পথে, চণ্ডীগড় অবরোধের হুমকি
২০১৯ সালে হার্দিক কংগ্রেসে যোগ দিয়েছিলেন। বহু আশা জাগানো সেই যোগদান, তিন বছর পর যেন উল্কাবেগে বাস্তবের জমিতে আছড়ে পড়ল। চিন্তন শিবিরে সংগঠনের সকল স্তরে তরুণদের তুলে আনার ওপর জোর দিয়েছে কংগ্রেস। নেতৃত্বে তরুণদের তুলে এনে কংগ্রেসকে তারুণ্য উপহার দেওয়ার সংকল্প করেছেন দলের নেতৃত্ব। ২৮ বছর বয়সী গুজরাত কংগ্রেসের সদ্যপ্রাক্তন কার্যকরী সভাপতি সেক্ষেত্রে ছিলেন দলের আদর্শ মুখ।
কিন্তু, হার্দিকের অভিযোগ, তিনি বারবার চাইলেও, কংগ্রেস নেতৃত্ব তাঁকে উল্লেখযোগ্য ভূমিকা গ্রহণের সুযোগ দেননি। তাঁর বক্তব্যকেও গুরুত্ব দেয়নি। এই সব বিষয়কে মাথায় রেখেই হার্দিক পদত্যাগপত্রে লিখেছেন, 'কংগ্রেস আজ দেশের প্রায় প্রতিটি রাজ্যে প্রত্যাখ্যাত হয়েছে। কারণ দল এবং তার নেতৃত্ব জনগণের কাছে একটি মৌলিক রোডম্যাপ উপস্থাপন করতে পারেনি।'
Read full story in English