Advertisment

'ফার্মহাউজ' মুখ্যমন্ত্রী', কে চন্দ্রশেখর রাও-কে তেলেঙ্গানায় একযোগে নিশানা বিজেপি-কংগ্রেসের, কেন?

তেলেঙ্গানার রাজনীতির সঙ্গে বর্তমানে 'ফার্মহাউজ' শব্দটি অঙ্গাঙ্গিভাবে জড়িয়ে গিয়েছে।

author-image
IE Bangla Web Desk
New Update
Why BJP and Cong are calling KCR farmhouse CM , 'ফার্মহাউজ' মুখ্যমন্ত্রী', কে চন্দ্রশেখর রাও-কে তেলেঙ্গানায় একযোগে নিশানা বিজেপি-কংগ্রেসের, কেন?

তেলেঙ্গানারা মুখ্যমন্ত্রী কে চন্দ্রশেখর রাও।

ভোটের প্রচারে তেলেঙ্গানার মুখ্যমন্ত্রী কে চন্দ্রশেখর রাওকে (কেসিআর) প্রায়ই বিরোধিরা "ফার্মহাউজ মুখ্যমন্ত্রী" বলে কটাক্ষ করছেন। গত কয়েকদিন ধরে, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী এবং কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ বিজেপির জনসভায় বারবার জনতাকে জিজ্ঞাসা করেছেন যে, তাঁদের একটি "ফার্মহাউজ মুখ্যমন্ত্রী"র দরকার আছে কিনা। তারপরই দক্ষিণী এই রাজ্যে ক্ষমতাসীন ভারত রাষ্ট্র সমিতির (বিআরএস) বিরুদ্ধে ভোট দেওয়ার আবেদন করছেন।

Advertisment

কংগ্রেস নেতা প্রিয়াঙ্কা এবং রাহুল গান্ধীও মুখ্যমন্ত্রী কেসিআরের নিন্দা করেছেন এবং ভোটারদেরকে "কেসিআরকে স্থায়ীভাবে ফার্মহাউজে পাঠাতে" অনুরোধ করেছেন। কংগ্রেস সভাপতি মল্লিকার্জুন খাড়গে দাবি করেছেন যে কেসিআর "ফাম্রহাউজ থেকে সরকার চালান।"

তেলেঙ্গানার রাজনীতির সঙ্গে বর্তমানে 'ফার্মহাউজ' শব্দটি অঙ্গাঙ্গিভাবে জড়িয়ে গিয়েছে।

সত্যি-ই কি কেসিআরের ফার্মহাউজ আছে?

হায়দ্রাবাদ থেকে প্রায় ৬৫ কিলোমিটার দূরে মেদক জেলার ইরাভেল্লি গ্রামে টানা ১২০ একর ফসলি জমির মালিক তেলেঙ্গানার মুখ্যমন্ত্রী কেসিআর। এই বিস্তৃত জমিতে নানা ফসলের চাষ হয়। নিজেকে কৃষক বলেই সর্বত্র দাবি করেন মুখ্যমন্ত্রী। প্রায়ই তাঁর পদধুলি পড়ে এখানে।

২০১৫ সালের ডিসেম্বসে এই ফার্মহাউজেই পাঁচ দিনের আয়ুথা চণ্ডী মহা-যজ্ঞম পালন হয়েছিল। প্রায় ১৫০০ পুরোহিত সেই যজ্ঞ করেছিলেন। নবগঠিত তেলেঙ্গানার সফলতার পথে বাধা দূর করে শান্তি ও সমৃদ্ধি আনতে এবং মুখ্যমন্ত্রীর ক্ষমতায়ন, তাঁর সৌভাগ্যের জন্য ওই বিরাট যজ্ঞ হয়েছিল।

আমন্ত্রিতদের আনতে মুখ্যমন্ত্রী হেলিকপ্টার এবং চার্টার্ড বিমান ভাড়া করেছিলেন। ওই অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করেছিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী, তৎকালীন অন্ধ্রপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী চন্দ্রবাবু নাইডু, শ্রী শ্রী রবি শঙ্কর এবং বহু ধর্মীয় প্রধান এবং অন্যান্যরা।

কী বলছে বিরোধী দলগুলো?

বিরোধী দল কংগ্রেস এবং বিজেপি নেতৃত্ব ফার্মহাউজে কেসিআর-এর "ঘনঘন পরিদর্শন" নিয়ে কটাক্ষ ছুড়ে দিয়েছেন। মুখ্যমন্ত্রীর সহজে দেখা মেলে না। ভোটারদের কাছে সেই বার্তা তুলে ধরতেই দেশের এই দুই সর্বভারতীয় দলের "ফার্মহাউজ" উপমা টানা। অভিযোগ উঠেছিল যে, মুখ্যমন্ত্রী কেসিআর প্রায়শই তাঁর দলের বিধায়কদের কাছেই "অনুপলব্ধ" থাকেন।

সোমবার, গাজওয়েলের তুপ্রানে প্রধানমন্ত্রী মোদী জনতাকে জিজ্ঞাসা করেছিলেন যে, তাঁরা কি এমন একজন মুখ্যমন্ত্রীকে ভোট দিতে চান যিনি মানুষের সঙ্গে দেখাই করতে চান না?

তেলেঙ্গানা কংগ্রেসের প্রধান রেভান্থ রেড্ডি, গত ১৭ নভেম্বর দলের ইশতেহারের প্রকাশের সময় দাবি করেছিলেন যে, "ফার্মহাউজে যাওয়ার পরিবর্তে, কেসিআরের জনতার সঙ্গে দেখা করা উচিত। বলেছিলেন, "কেসিআর ফার্মহাউজে বেশি সময় কাটান এবং মানুষের সঙ্গে দেখা করেন না। কংগ্রেস যখন সরকার গঠন করবে, আমরা ঘন ঘন সিএম প্রজা দরবার করব"। এই কংগ্রেস নেতা প্রগতি ভবনের নাম বদলে তা সকলের জন্য অবাধ করে দেওয়ার প্রতিশ্রুতিও দিয়েছিলেন।

কি বলছে বিআরএস?

মুখ্যমন্ত্রীর দীর্ঘদিনের বন্ধু, বিআরএসের পলিটব্যুরোর সদস্য ও রাজ্য পরিকল্পনা বোর্ডের ভাইস-চেয়ারম্যান বি বিনোদ বলেছেন যে, "কেসিআর শুধু ছুটি কাটাতে তাঁর ফার্মহাউজে যান না, সঙ্গে বহু কাজও নিয়ে যান। বিআরএস সরকার বাস্তবায়ন করছেন এমন বিভিন্ন স্কিম ও প্রোগ্রাম পর্যালোচনা করার জন্য মুখ্যমন্ত্রীকে একা অনেকটা সময় ব্যয় করতে হয়। এই প্রোগ্রামগুলির সাফল্যের হার খুবই বেশি, এই প্রকল্পগুলির বাস্তবায়ন ও সাফল্যকে সমালোচনামূলকভাবে পর্যালোচনা করাই মুখ্যমন্ত্রীর অভ্যাস। এটা রাজনৈতিক বিষয় নয়, কেসিআর এমনই। সবকিছু করতেই তাঁর খুব সূক্ষ্ম বিশ্লেষণ এবং মূল্যায়ণের প্রয়োজন হয়। তাঁর জোর শুধু নীতি প্রণয়নের ওপর নয়, বাস্তবায়নেও। তিনি ফার্মহাউজে গিয়ে সেই কাজটাই করে থাকেন"।

কোনও তুকতাক?

মুখ্যমন্ত্রীর ঘনঘন ফার্মহাউজে যাওয়া নিয়ে বিরোধীদের নিশানা মূলত এর আগে কেসিআরের বেশ কিছু পদক্ষেপের জের বলেই মনে করা হয়। পূর্বে মুখ্যমন্ত্রী তাঁর অফিস সহ বাসস্থান- প্রগতি ভবনের বাস্তু সংস্কার করেছিলেন। পুরনো সেক্রেটারিয়েট বিল্ডিং থেকে কাজ করতেন না তাঁর পরিচিতদের অনিচ্ছার কারণে।

এমনকী ২০২০ সালের জুলাই মাসে পুরনো সেক্রেটারিয়েট বিল্ডিংটি ভেঙে ফেলা হয়। এপ্রিল মাসে একটি নতুন, ৬৩৫-কক্ষ বিশিষ্ট সচিবালয়ের উদ্বোধন করা হয় এবং সেটির নামকরণ হয় ডঃ বি আর আম্বেদকর ভবন।

মুখ্যমন্ত্রীর ফার্মহাউজে যাওয়ার সঙ্গে কোনও সংস্কার জড়িয়ে থাকার সম্ভাবনার বিষয়টি উড়িয়ে দিয়েছেন বিআরএস নেতৃত্ব।

CONGRESS Priyanka Gandhi modi bjp amit shah Telengana KCR rahul gandhi
Advertisment