চন্দ্রপৃষ্ঠে রেলওয়ে ট্র্যাক স্থাপন করা হবে। চাঁদে এবার কু-ঝিক-ঝিক করে চলবে ট্রেন! নাসার সম্পূর্ণ পরিকল্পনা পড়ে চোখ কপালে উঠতে বাধ্য।
নাসা চাঁদের পৃষ্ঠে একটি উড়ন্ত রোবট ট্রেন তৈরির পরিকল্পনা ঘোষণা করেছে। নাসার এই পরিকল্পনা বিজ্ঞানী মহলে সাড়া ফেলে দিয়েছে। নাসা জানিয়েছে, চাদে তাঁরা রেলস্টেশন তৈরি করতে আগ্রহী। সেই মতো ভাবনাচিন্তাও শুরু হয়েছে। সব কিছু ঠিকঠাক থাকলে আগামী দশকে চাঁদে ট্রেন ছোটাবে নাসা।
আমেরিকান মহাকাশ সংস্থা নাসা যখন থেকে আবার চাঁদে মানুষকে অবতরণের পরিকল্পনা করেছে, তখন থেকেই গোটা বিশ্বের নজর সেদিকেই । এবার নাসা চায় তার বিজ্ঞানীরা চাঁদে একটি ঘাঁটি তৈরি করে সেখানে দীর্ঘ সময় অবস্থান করুক। এ জন্য নানা ধরনের প্রস্তুতি ও প্রকল্প নিয়ে কাজ চলছে। এখন নাসা চাঁদের পৃষ্ঠে একটি উড়ন্ত রোবট ট্রেন তৈরির পরিকল্পনা ঘোষণা করেছে।
একটি ব্লগ পোস্টে ইউএস স্পেস এজেন্সির "ফ্লেক্সিবল লেভিটেশন অন এ ট্র্যাক (ফ্লোট)" নামের একটি প্রকল্পের বর্ণনা দেওয়া হয়েছে।এই প্রকল্পের উদ্দেশ্য চাঁদে পৌঁছানো মহাকাশচারীদের একটি রোবোটিক পরিবহন ব্যবস্থা প্রদান করা। একটি বিবৃতিতে, নাসা বলেছে যে ২০৩০-এর মধ্যে চাঁদে একটি স্থায়ী ঘাঁটি পরিবহন ব্যবস্থা খুবই গুরুত্বপূর্ণ হতে চলেছে।
নাসার প্রাথমিক নকশা দেখায় যে FLOAT সিস্টেম শুধুমাত্র মেশিনের উপর নির্ভর করবে। চৌম্বকীয় রোবট চাঁদে পৌঁছাবে এবং তাদের মধ্যে গাড়ি বসানো হবে। এই ট্রেনগুলি ঘন্টায় প্রায় ১.৬১ কিলোমিটার বেগে চলবে। প্রকল্পের মূল উদ্দেশ্য হল যে সমস্ত এলাকায় মহাকাশচারীরা সক্রিয় থাকবে সেখানে পরিবহন পরিষেবা প্রদান করা। FLOAT সিস্টেম চাঁদের ধুলোবালি ও কঠিন পরিবেশে কাজ করবে। প্রয়োজন অনুসারে, NASA এই সিস্টেমটি পুনরায় কনফিগার করবে। বিশেষ বিষয় হল ফ্লোট সিস্টেম তৈরি করা হচ্ছে নাসার জেট প্রপালশন ল্যাবরেটরিতে (জেপিএল)। বর্তমানে, ক্যালিফোর্নিয়ায় সিস্টেমের বিভিন্ন অংশ পরীক্ষা করা হচ্ছে।
নাসা জানিয়েছে, চাঁদে গবেষণার প্রয়োজনেই রেললাইন বসানোর কথা ভেবেছে। তারা জানিয়েছে, চাঁদের ট্রেনে বহন করা হবে বিভিন্ন পেলোড। মুন মিশনে পৃথিবী থেকে একাধিক পেলোড পাঠানো হয় চাঁদে। সেগুলোর মাধ্যমেই সেখানে গবেষণার কাজ চলে। সেই পেলোড এক জায়গা থেকে অন্য জায়গায় পরিবহনের কাজ করবে চাঁদের এই ট্রেন। মহাকাশযান থেকে সরাসরি চাঁদের মাটিতে বসানো হবে রেললাইন।
নাসার বক্তব্য, চাঁদের এই রেললাইনে বিভিন্ন আকারের পেলোড পরিবহণ করা যাবে। গতি থাকবে প্রতি সেকেন্ডে ০.৫ মিটার। প্রতি দিন কয়েক কিলোমিটার রাস্তা পেরোতে পারবে পেলোডগুলো। এতে থাকবে সোলার প্যানেলের একটি পাতলা স্তর। যা সূর্যের আলো থেকে শক্তি উৎপন্ন করবে। নাসার মতে, ফ্লোট রোবটে কোনো চলন্ত যন্ত্রাংশ থাকবে না। তারা ট্র্যাকের উপরে উড়ে যাবে যাতে চন্দ্র পৃষ্ঠ তাদের কোন ক্ষতি করতে না পারে। চাঁদে চলমান ট্রেনটি সাধারণ ট্রেনের মতো হবে না।
২০২৬ সালের মধ্যে আবার চাঁদে মানুষ পাঠানোর প্রস্তুতি নিচ্ছে নাসা আর্টেমিস। চাঁদে রেলপথ নির্মাণের উদ্দেশ্য ভবিষ্যতের মহাকাশ মিশনের জন্য চাঁদে একটি স্থায়ী ঘাঁটি তৈরি করা। যাতে আগামী সময়ে চাঁদে গবেষণা ও অন্যান্য কাজে কোনো সমস্যা না হয়। নাসার একটি ব্লগ পোস্টে, জেট প্রপালশন ল্যাবরেটরির রোবোটিক্স ইঞ্জিনিয়ার এথেল স্ক্লার প্রকল্পটি সম্পর্কে তথ্য দিয়েছেন।