মধ্যবয়স্ক এক বিধবাকে বাড়ির সামনে থেকে তুলে নিয়ে গিয়ে ধর্ষণের চেষ্টার ঘটনায় তুমুল চাঞ্চল্য ছড়ালো গাজোলে। ওই মহিলার চিৎকার শুনে গ্রামবাসীরা ছুটে এসে দুই অভিযুক্তকে হাতেনাতে ধরে ফেলে। ঘটনার সময় আরো এক অভিযুক্ত সুযোগ বুঝে ওই এলাকা থেকে পালিয়ে যায় বলে অভিযোগ । আর তারপরেই দুই অভিযুক্তকে মহিলার ওপর নির্যাতন ও ধর্ষণের চেষ্টা অভিযোগ তুলে ব্যাপক গণপিটুনি দেয় ক্ষিপ্ত জনতা। রবিবার রাত দশটা নাগাদ ঘটনাটি ঘটেছে গাজোল থানার সালাইডাঙ্গা গ্রাম পঞ্চায়েতের পূর্ব অনন্তপুর এলাকায়।
গত রাতেই গণপিটুনির হাত থেকে ওই দুই যুবককে উদ্ধার করে পুলিশ । এরপর তাদের চিকিৎসার জন্য ভর্তি করানো হয় মালদা মেডিকেল কলেজে। পাশাপাশি নির্যাতিতা ওই মহিলাকে প্রাথমিক চিকিৎসার জন্য গাজোল গ্রামীণ হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়। পরে তাদের ছেড়ে দেওয়া হয়। সোমবার ধৃত দুইজনকেই মালদা আদালতে পেশ করেছে পুলিশ।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, ধৃত দুইজনের নাম ওহিদুর রহমান ও রফিকুল ইসলাম । পাশাপাশি মজনু রহমান নামে আরও এক যুবক পলাতক রয়েছে। এই তিনজনের বাড়ি পূর্ব অনন্তপুরে। একই গ্রামের বাসিন্দা ওই বিধবা মহিলা। এদিন রাতে হঠাৎই ঝড় বৃষ্টি শুরু হয়। সেই সময় বাড়ি থেকে বেরিয়ে দুটি ছাগল, একটি গোরুর বাছুরকে আনতে যায় ওই মহিলা। সেই সময় সুযোগ বুঝেই প্রতিবেশী তিন যুবক ওই মহিলার মুখ চেপে পাশের ভুট্টার খেতে নিয়ে গিয়ে ধর্ষণের চেষ্টা চালায় বলে অভিযোগ । সেই সময় বাঁধা দেওয়ায় ওই মহিলাকে ব্যাপক মারধর করা হয়।
জানা গিয়েছে, দীর্ঘদিন আগেই ওই মহিলার স্বামী মারা গিয়েছেন । ৪০ বছর বয়সী ওই মহিলার দুই ২০ এবং ২২ বছর বয়সী সাবালক ছেলে রয়েছে। তারাও বাইরে কাজ করেন। ঘটনার দিন বাড়িতে দুই ছেলে ছিল না।
এদিকে এই ঘটনার পর আক্রান্ত এই মহিলার সঙ্গে গাজোল গ্রামীণ হাসপাতালে গিয়ে দেখা করেন সংশ্লিষ্ট এলাকার বিধায়ক চিন্ময় দেব বর্মন। তিনি বলেন, ঘটনাটি অত্যন্ত নিন্দনীয় । যারা ওই মহিলার ওপর হামলা চালিয়েছে তাদের দুইজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। আরো একজন পলাতক। প্রত্যেকের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানানো হয়েছে।
গাজোল থানার পুলিশ জানিয়েছে, ওই মহিলাকে বেশ কিছুক্ষণ ধরে নির্যাতন চালানো হয়। ধর্ষণের চেষ্টা করে তিন অভিযুক্ত। গ্রামবাসীদের তাড়া খেয়ে একজন পালিয়ে যায়। বাকি দুইজন ধরা পড়ে যায়। তাদের ব্যাপক গণপিটুনি দেয় ক্ষিপ্ত জনতা। রীতিমতো আধমরা অবস্থায় ওই দুজনকে জনরোষ থেকে উদ্ধার করা হয়। পরে তাদের মেডিকেল কলেজে প্রাথমিক চিকিৎসা করিয়েই সোমবার মালদা আদালতে পেশ করা হয়েছে। বাকি অভিযুক্তের খোঁজ চালানো হচ্ছে।