সহিষ্ণুতা না। ভারতে আসলে ঐক্যেরই অভাব আছে। দেশের বর্তমান পরিস্থিতি দেখে এমনটাই মনে করছেন নোবেলজয়ী অধ্যাপক অমর্ত্য সেন। উদ্বিগ্ন এই অধ্যাপক তাঁর সেই ভয়কে গোপন করেননি। রাজনৈতিক নেতৃত্ব থেকে প্রশাসনের অনেক শীর্ষকর্তা তাঁর কথায় ভ্রু কোঁচকাতে পারেন। এটা বুঝেও মুখ বন্ধ রাখেননি তিনি। অমর্ত্য সেনের স্পষ্ট স্বীকারোক্তি, 'হ্যাঁ, আমি বলব যে এখন ভয় পাওয়ার কারণ আছে। দেশের বর্তমান পরিস্থিতি এখন আমার কাছে ভয়ের কারণই হয়ে উঠেছে।'
সল্টলেকে প্রতীচী ট্রাস্টের এক অনুষ্ঠানে যোগ দিতে বৃহস্পতিবার তিনি কলকাতায় এসেছিলেন। উদ্বোধন করেন অমর্ত্য রিসার্চ সেন্টারের। এরপর অংশ নেন 'ব্যাক টু স্কুল' শীর্ষক আলোচনায়। সঙ্গে ছিলেন অনিতা রামপাল, জিন ড্রিজ, কে শ্রীনাথ রেড্ডি ও একে শিবকুমার। সেখানেই দেশের রাজনৈতিক, সামাজিক পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করতে শোনা যায় নোবেলজয়ী অধ্যাপককে।
আরও পড়ুন- কানহাইয়া লালের খুনের প্রতিবাদে বিক্ষোভে উত্তাল রাজস্থান, তড়িঘড়ি পরিবারের সঙ্গে সাক্ষাৎ গেহলটের
অনুষ্ঠানে দীর্ঘ বক্তব্য রাখেন তিনি। তার প্রথমার্ধে তুলে ধরেন বৈচিত্র্যময় ভারতের ঐক্যের ঐতিহ্যের কথা। তুলে আনেন প্রাচীন ভারতের ইতিহাস। যে ভারত আর্যভট্টের ভারত। যে ভারত বিজ্ঞান চর্চায় গোটা বিশ্বে নজির গড়েছিল। যে ভারত বৈদিক অঙ্কের পারদর্শিতায় গোটা বিশ্বকে মুগ্ধ করেছিল। পরবর্তীতে অল-বিরুনিদের প্রসঙ্গে টেনে সেই গৌরবময় ভারতকে বিশ্বের চোখে কেমন লাগত, সেই প্রসঙ্গকে তিনি তুলে ধরার চেষ্টা করেন।
এরপর সেই প্রসঙ্গ ধরে অমর্ত্য সেন চলে আসেন আধুনিক ভারতে। যেখানে তিনি অতীতের ছায়াও খুঁজে পাচ্ছেন না-বলে বোঝানোর চেষ্টা করেন। রীতিমতো চাঞ্চল্যকর বক্তব্য রেখে তিনি বলেন, 'আজ যদি আমাকে কেউ প্রশ্ন করেন, আপনি কি কোনও কিছু নিয়ে ভীত? আমি বলব হ্যাঁ। ভয় পাওয়ার যথেষ্ট কারণ আছে। কারণ, আমি চাই দেশ ঐক্যবদ্ধ থাকুক। এটা কোনও সহিষ্ণুতার ব্যাপার না। আমি চাই, দেশ আগের মতই ঐক্যবদ্ধ থাকুক। সেই জন্য আমাদের ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে। ঐক্যবদ্ধ হতে হবে। এটা দেশবাসীর আরও বেশি করে বোঝা দরকার।'