বুধবার সকালে রাজ্যে এসে পৌঁছল ২ লক্ষের বেশি কোভিডশিল্ড ডোজ। রাজ্যের বরাতের পর এই টিকা বুধবার সকাল ৯টা নাগাদ এসে পৌঁছেছে কলকাতা বিমানবন্দরে। এই টিকা হাতে আসায় রাজ্যে টিকাকরণের গতি বাড়বে বলে আশা চিকিৎসা মহলে।
রাজ্যে এখন ৪৫ উর্ধ্বদের দ্বিতীয় টিকাকরণের পাশাপাশি ১৮-৪৪ বছরের টিকা দেওয়ার কর্মসূচি চলছে। সূত্রের খবর, এই দ্বিতীয় ধাপের টিকাকরণের জন্য রাজ্যের হাতে মজুত টিকার পরিমাণ কমে আসছিল। পুণের সেরাম ইনস্টিটিউট অফ ইন্ডিয়া থেকে এসে পৌঁছনো এই টিকা সেই সঙ্কট আপাতত মেটাবে বলেই মনে করা হচ্ছে।
প্রসঙ্গত এর আগেও এই ১৮ থেকে ৪৪ বছর বয়সিদের টিকাকরণের জন্য কোভ্যাক্সিন ও কোভিশিল্ড টিকা এসেছিল এক দফায়। বুধবার দ্বিতীয় দফায় টিকা এল রাজ্যে। তবে এই দ্বিতীয় দফার টিকা কেন্দ্র সরবরাহ করেনি। পুণের সেরাম ইনস্টিটিটিউটের কাছ থেকে সরাসরি রাজ্যই কিনেছে।
দেশে টিকার আকালের মধ্যেই ব্রিটেনে চলে গিয়েছেন সেরাম কর্তা আদার পুনাওয়ালা। এদিকে, দেশে ভ্যাকসিনের জোগান অপর্যাপ্ত হওয়ায় টিকাকরণ প্রক্রিয়া শ্লথ গতিতে এগোচ্ছে। বারবার বিরোধীরা কেন্দ্র এবং সেরামকে নিশানা করে অভিযোগ করেছে, দেশবাসীকে বঞ্চিত করে টিকা বিদেশে রফতানি করা হয়েছে। মঙ্গলবার সেই অভিযোগ খণ্ডণ করলেন সেরাম কর্তা। সাফ জানিয়ে দিলেন, দেশবাসীকে বঞ্চিত করে কখনও বিদেশে ভ্যাকসিন রফতানি করেন সেরাম।
পাশাপাশি তিনি আরও জানান, “ভারতে টিকাকরণ প্রক্রিয়া মসৃণ রাখতে সবরকম চেষ্টা করতে অঙ্গীকারবদ্ধ সেরাম ইনস্টিটিউট। তিনি বলেছেন, আমরা ২০ কোটি টিকার ডোজ সরবরাহ করেছি মার্কিন ওষুধ সংস্থাগুলির দুমাস পর অনুমোদন পাওয়া সত্ত্বেও। যত ডোজ উৎপাদন ও সরবরাহ হয়েছে, সেই নিরিখে সেরাম বিশ্বের শীর্ষ তিনটি সংস্থার একটি। আমরা উৎপাদন প্রক্রিয়া অব্যাহত রেখেছি এবং ভারতবাসীকেই প্রাধান্য দিয়েছি। এই বছরের শেষে কোভ্যাক্স কর্মসূচিতে অন্যান্য দেশে রফতানি শুরু করব আশা করি।”
তাঁর দাবি, “ভারত-সহ গোটা বিশ্বে করোনা অতিমারী ভয়ঙ্কর রূপ ধারণ করেছে। গত কয়েক দিন ভারত সরকার এবং সেরাম-সহ অন্য টিকা প্রস্তুতকারী সংস্থাগুলির গভীর আলোচনা চলছে বিদেশে টিকা রফতানি নিয়ে। কিন্তু তার আগে কয়েকটি বিষয়ে স্বচ্ছতা থাকা আবশ্য়ক। এবছর জানুয়ারি মাসে আমাদের কাছে প্রচুর সংখ্যক টিকার ডোজ মজুত ছিল। তারপর টিকাকরণ যখন শুরু হয় তখন দেশে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা কম ছিল। সেইসময় স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ-সহ অনেকে ভেবেছিলেন অতিমারী হয়তো শেষের দিকে। একইসঙ্গে বিশ্বের অন্যান্য দেশে তখন করোনা সঙ্কট মারাত্মক ছিল। সাহায্যের জন্য তারা আর্তি জানাচ্ছিল।”
অপরদিকে, মঙ্গলবার স্বাস্থ্য দফতরের প্রকাশিত বুলেটিন অনুযায়ী রাজ্যে দৈনিক সংক্রমণের সংখ্যা ছিল ১৯ হাজারের কিছু বেশি। তবে মৃত্যু সংখ্যা এখনও দেড়শোর আশপাশেই। মঙ্গলবার করোনায় আক্রান্ত হয়ে ১৪৫ জনের মৃত্যু হয়েছে রাজ্যে।