নয়াদিল্লি যতটা ভেবেছিল, ততটা কিন্তু লাভ হচ্ছে না। রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের জেরে বিশ্বব্যাপী খনিজ তেলের দাম লাফিয়ে বাড়েছে। প্রায় প্রতিদিনই বাড়ছে দাম। আমেরিকার নেতৃত্বে বাকি বিশ্বের এক বিরাট অংশ রাশিয়া থেকে তেল আমদানিতে নারাজ। উদ্দেশ্য একটাই, রাশিয়াকে আর্থিক দিক থেকে চাপে রাখা। কিন্তু, ভারতের সঙ্গে রাশিয়ার যা সম্পর্ক, সেকথা মাথায় রেখে ওই পথে হাঁটেনি নয়াদিল্লি। আমেরিকা বারবার বারণ করেছে। তার পরও মোদী সরকার কথা শোনেনি। রাশিয়া থেকে লাগাতার তেল আমদানি করে চলেছে। কিন্তু, শেষ পর্যন্ত হিসেব কষে দেখা যাচ্ছে, ভারতের খুব বেশি লাভ হয়নি। লাভের অঙ্কটা ব্যারেল প্রতি মাত্র দুই ডলার।
বর্তমানে ভারত বিশ্বের তৃতীয় বৃহত্তম অপরিশোধিত খনিজ তেলের ক্রেতা। তার প্রেক্ষিতেই নয়াদিল্লি এখন বোঝার চেষ্টা করছে, গত নয় মাসে ঠিক কতটা লাভ করল? কারণ, যতই হোক ভারত বাকি বিশ্বের চেয়ে কম মূল্যে অপরিশোধিত তেল পাচ্ছে। সেই হিসেবে এপ্রিল থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত ভারত ব্যারেলপ্রতি তেল কিনেছে ৯৯.২ ডলারে। তবে, এই তেলের সবটাই ভারত রাশিয়া থেকে কেনেনি। রাশিয়ার পাশাপাশি অন্যান্য দেশ থেকেও কিনেছে। তবে, রাশিয়া থেকে যতটুকু তেল কিনেছে, তা না-কিনলে ভারতকে ওই তেলের জন্য দিতে হত ব্যারেলপ্রতি ১০১.২ ডলার।
আরও পড়ুন- মদ কেলেঙ্কারিতে আরও বিপাকে সিসোদিয়া, বিচার বিভাগীয় হেফাজতের নির্দেশ!
গত তিন ত্রৈমাসিকে বা নয় মাসে ভারত ১২৬.৫১ বিলিয়ন ডলার তেল কিনেছে। রাশিয়া ছাড়া অন্যান্য দেশ থেকেও তেল কিনেছে ভারত। তার মধ্যে রাশিয়া থেকে তেল কিনেছে ২২ বিলিয়ন মার্কিন ডলার। ভারত যদি ওই তিন ত্রৈমাসিকে রাশিয়া থেকে তেল না-কিনে অন্যান্য দেশ থেকে কিনত, তাহলে দিতে হত ১২৯ বিলিয়ন মার্কিন ডলার। যা যত অর্থ দেওয়া হয়েছে, তার চেয়ে দুই শতাংশ বেশি। হিসেব বলছে, এপ্রিল থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত, ভারত রাশিয়া থেকে গড়ে অপরিশোধিত তেল আমদানি করেছে ব্যারেলপ্রতি ৯০.৯ ডলারে। অন্য দেশের থেকে তেল আমদানি করলে তার জন্য ভারতকে এই সময়ে আরও ১০.৩ মার্কিন ডলার ব্যারেলপ্রতি বেশি অর্থ দিতে হত।