Gulabo Sitabo movie cast: ফারুক জাফর, আমিতাভ বচ্চন, আয়ুষ্মান খুরানা, বিজয় রাজ়, ব্রিজেন্দ্র কালা, সৃষ্টি শ্রীবাস্তব
Gulabo Sitabo movie director: সুজিত সরকার
Gulabo Sitabo movie rating: ২/৫
সুজিত সরকার-জুহি চতুর্বেদী জুটির নতুন উপহার 'গুলাবো সিতাবো', যে ছবির মূল প্রেক্ষাপট লখনৌয়ের এক জরাজীর্ণ 'হাভেলি'। এই প্রথম 'স্ট্রিমিং প্ল্যাটফর্ম' মারফত দেখা যাচ্ছে কোনও নতুন বড় বলিউড ছবি, করোনা মহামারী জনিত 'থিয়েটার বনধ'এর আবহে।
সেই হাভেলির নাম ফতিমা মহল, যার স্ব-নিযুক্ত রক্ষক হলেন তিরিক্ষি মেজাজের মির্জা চুন্নন নবাব (অমিতাভ)। তাঁর সঙ্গে খটাখটি লেগেই থাকে একদল ভাড়াটের, যাঁরা দিব্বি শিকড় গেড়ে বসেছেন ফতিমা মহলে। এঁদের নেতৃত্বে রয়েছেন বাঁকে (আয়ুষ্মান)। এই হলো মূল কাহিনী। জটিলতার স্বার্থে আমদানি করা হয়েছে প্রত্নতত্ত্ব বিভাগের এক ধূর্ত কর্মী (রাজ়), এক গোলমেলে উকিল (কালা), বাঁকের মা ও বোন, এবং মির্জার চেয়েও তিরিক্ষি তাঁর স্ত্রী ফতিমা বেগম (জাফর)-এর মতো চরিত্রের।
এই ধরনের পটভূমিতে সাধারণত অত্যন্ত স্বচ্ছন্দ সুজিতের দীর্ঘদিনের সহযোগী, চিত্রনাট্য লেখিকা জুহি চতুর্বেদী। তাঁর লেখা 'ভিকি ডোনর' এবং 'পিকু' দুইই ছিল দৈনন্দিন জীবন নিয়ে অসামান্য কমেডি; প্রথমটিতে আমরা পাই নতুন ধাঁচের এক বলিউড হিরো; দ্বিতীয়টি বাঙালির পাকযন্ত্রকে তার যোগ্য গুরুত্ব অর্পণ করে, অমিতাভ বচ্চন এবং তাঁর জেলুসিল-প্রীতির মাধ্যমে। এই দুইয়ের সঙ্গে মেলে করুণরসে সিঞ্চিত 'অক্টোবর', এবং তিনে মিলে প্রমাণ করে যে কাহিনীই আসল রাজা।
আরও পড়ুন: 'অনলাইন রিলিজে সিনেমা হলের ম্যাজিক কই!'
কিন্তু গুলাবো সিতাবো-র এই জটলা - যার মধ্যে রয়েছেন এক উচ্ছল তরুণী এবং জমি-লোলুপ হাঙ্গর-সদৃশ এক ব্যক্তি - ঠিক পর্দার বাইরে বেরিয়ে আমাদের মনে স্থান পায় না। ছবির কিছু কিছু অংশ হালকা হাসির উদ্রেক করে বটে, বিশেষ করে কালার বিরসবদনের কার্যকলাপ। অথবা রাজ়ের চরিত্রের সংলাপ, "হাম সরকার হ্যায়, হামেঁ সব পতা হ্যায়"। বা জাফরের কোটরগত চোখের সজ্ঞান দৃষ্টি। তবে এগুলি সবই মুহূর্ত মাত্র। কোনও একটি চরিত্রও ধারাবাহিকভাবে চিত্ত আকর্ষণ করে না: ছবিটা পুরো দেখি বটে, কিন্তু এদের কাউকেই সঙ্গে রাখি না।
বরং জীর্ণ, প্রাচীন, ভেঙে পড়া বাড়িটার একটা আলাদা চরিত্র রয়েছে - যে বাড়ির অজস্র ঘুলঘুলির মতো ঘরে বাসা বেঁধেছেন কয়েক প্রজন্মের ভাড়াটে। তাঁদের ভাষায়, তাঁদের ব্যবহৃত শব্দবন্ধে রয়েছে লখনৌয়ের পথের ধারের স্বাদ, যা আপনার মুখে হাসি ফোটাতেই পারে।
এই প্রথম একসঙ্গে কাজ করছেন তাঁরা, কিন্তু হতাশাজনক রকমের নীরস অমিতাভ এবং আয়ুষ্মানের রসায়ন। মির্জার একমুখ দাড়ি, মোটা কাঁচের চশমা, এবং গোলাকার নকল নাক, সব মিলিয়ে হাসির খোরাক হতে পারত। তিরিক্ষি মেজাজের আড়ালে যে লুকিয়ে আছে সোজা সরল একটা মানুষ, তা বোঝাতে বড্ড দেরি করে ফেলেন পরিচালক, তাও আবার অন্যের মুখ দিয়ে বলাতে হয় কথাটা। বেশিরভাগ সময়েই চোখে পড়ে মির্জার অতি আরোপিত অভিনয়। নিরক্ষর 'আটা চক্কি' মালিকের ভূমিকায় যথাযথ আয়ুষ্মান, কিন্তু তিনি তো বরাবরই সাধারণ মানুষের ভূমিকায় অনবদ্য, এখানে যেন সেই ঝকঝকে ভাবটা নেই। ক্লাইম্যাক্সে ভিন্ন স্বাদের ছোঁয়া আছে বটে, কিন্তু তা 'না ঘরকা না ঘাটকা'।
চতুর্বেদীর লেখায় যে প্রাণবন্ত হাসি এবং তীক্ষ্ণ ব্যঙ্গ দেখতে অভ্যস্ত আমরা, তার প্রায় কিছুই এই ছবিতে পাই নি। বরং কিছু চরিত্রের নাম (যেমন জমির দালালের নাম 'মুনমুন জি'), বা তাদের বিবরণ (একজনকে বলা হয় 'তৎপুঞ্জিয়া'), মায় ছবিটার নাম পর্যন্ত (লোকশিল্পে ব্যবহৃত দুই জনপ্রিয় পুতুলের নামে) ছবির চেয়ে বেশি হাস্যরস বহন করে। ছবির কাহিনী এবং তার কথন, দুইই বড্ড মাঝারি হয়ে থেকে যায়।
ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা এখন টেলিগ্রামে, পড়তে থাকুন