ইরফান খান (Irrfan Khan) মানেই অভিনয়ের একটা গোটা প্রতিষ্ঠান। জীবদ্দশায় যে কটা ছবি উপহার দিয়ে গিয়েছেন দর্শকদের, তার প্রত্যেকটাতেই নিজের অভিনয়গুণে মুগ্ধ করেছেন। শুধু বলিউড নয়, পশ্চিমী ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রিতেও নেহাত তাঁর গুণমুগ্ধের সংখ্যাটা কম ছিল না। সেই অভিনেতাই ২০১৯ সালের এপ্রিল মাসে চিরকালের জন্য দুনিয়া থেকে বিদায় নেন। তবে মৃত্যুর এতগুলো দিন পেরিয়ে আজও তিনি অনুরাগী তো বটেই বরং সহকর্মীদের মনেও একইরকমভাবে সমুজ্জ্বল। এক স্মৃতিচারণায় নাসিরুদ্দিন শাহ (Naseeruddin Shah) জানালেন, ইরফান নাকি মৃত্যুর মাসখানেক আগেই তাঁকে জানিয়েছিলেন যে, খুব শিগগীরির তিনিই ইহজগতের মায়া ত্যাগ করে বিদায় নিতে চলেছেন।
নিউরো এন্ডোক্রিন টিউমারের সঙ্গে প্রকৃত যোদ্ধার মতো লড়াই করেও শেষ রক্ষা হয়নি। ক্যানসারই কাল হল। দুবছর ধরে মার্কিন মুলুকে ইরফান যুঝেছিলেন কর্কট রোগের সঙ্গে। নাসিরুদ্দিন শাহ বলছিলেন, "ইরফান আগে থেকেই জেনে গিয়েছিলেন যে, খুব শিগগিরিই এরকম একটা কিছু ঘটতে চলেছে। ওঁর সঙ্গে এই নিয়ে বহুবার ফোনেও কথা হয়েছে। এমনকী চিকিৎসার জন্য যখন লন্ডনে গিয়েছিল, তখনও আমি ওঁকে ফোন করতাম। কী অদ্ভূত! আর ক্যানসারে আক্রান্ত হওয়ার পর ওঁ যেভাবে গোটা বিষয়টাকে নিজে থেকে সামলেছিল, তা সত্যিই ভীষণ শিক্ষণীয়।"
<আরও পড়ুন: বিয়ে করলেন সায়ন্তনী, ‘শাঁখা-পলা, সিঁদুর পরে অভিভূত’ বলছেন নবপরিণীতা অভিনেত্রী>
"আমাকে ইরফান বলত, 'আমি রোজ পর্যবেক্ষণ করছি, কীভাবে মৃত্যু এগিয়ে আসছে। অন্তমি লগ্ন আসছে জেনেও কটা লোক সুযোগ পায় এটা দেখার? আমি তো একপ্রকার মৃত্যুকে স্বাগত-ই জানাচ্ছি", সাক্ষাৎকারে এক নাগাড়ে বলে চলেছিলেন নাসিরুদ্দিন শাহ। সহকর্মী ইরফান প্রসঙ্গে বলতে গিয়ে বর্ষীয়ান বলিউড অভিনেতা এও জানালেন যে, "ওঁর চলে যাওয়াটা সত্যি অপূরণীয় ক্ষতি। কিন্তু এটা তো আমাদের কারও হাতে ছিল না। শরীর যখন নিজে থেকে কাজ করা বন্ধ করে দেয়, তখন সেটা কারও নিয়ন্ত্রণে থাকে না।" সম্প্রতি ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস-এর এক সাক্ষাৎকারে এমন অজানা কথা শেয়ার করেছেন নাসিরুদ্দিন।
প্রসঙ্গত, ইরফানের অকাল প্রয়াণে কেঁদেছিল শিল্পীমহল-সহ গোটা ভক্তকূল। আর কোনওদিন প্রিয় অভিনেতাকে পর্দায় দেখতে পাবেন না, একটাই আক্ষেপ। অথচ, আরও কত সিনেমা উপহার দেওয়ার ছিল তাঁর। সিনেদর্শকরা চিরকাল মিস করবেন পর্দায় ইরফান খানের উপস্থিতি। তবে, তাঁর অভিনীত সিনেমাগুলির মধ্য দিয়েই চিরকাল ইরফান ফিনিক্স পাখির মতো জেগে উঠবেন। ফিরে আসবেন অভিনয়ের মধ্য দিয়েই। নাসিরুদ্দিন শাহের সুরেও যেন সেই কথাই ধরা পড়ল।
ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা এখন টেলিগ্রামে, পড়তে থাকুন