Advertisment

বস্তার হামলার চক্রী মাও নেতা হিডমা, ছত্তিশগড় জঙ্গলে সে নিছক এক ছায়া মানুষ

তার নাম নিয়েও ধন্দে রাজ্য পুলিশ। কোথাও পুলিশ তাকে চেনে মান্ডবি নামে। কোথাও আবার মাদ্ভি নামে। কিন্তু মাও করিডরের নিরাপত্তা বাহিনীর ত্রাস এই হিডমা এখন রাজ্য পুলিশের হিট লিস্টে।

author-image
IE Bangla Web Desk
New Update
NULL

হিডমার এই ছবি রয়েছে পুলিশের কাছে।

বস্তার মাও হামলায় শহিদ ২২ জওয়ান। নির্বাচনী প্রচার কাটছাঁট করে জওয়ানদের শ্রদ্ধা জানাতে রায়পুর পৌঁছেছেন স্বরাষ্ট্র মন্ত্রী অমিত শাহ। গোয়েন্দা সুত্রের খবর, ২০১৩-র ঝিরামঘাঁটি হামলার পর এতবড় মাও হামলার নেপথ্যে নিশ্চয় কোনও পরিণত মস্তিষ্ক। আর সেই মস্তিষ্কের খোঁজে নেমেই উঠে এসেছে বছর ৪০-এর হিডমার নাম। সুত্রের খবর, মাওবাদীদের ১ ব্যাটালিয়নের মাথা হিডমা। পাশাপাশি দণ্ডকারণ্য জোনাল কমিটির সদস্য এই মাও নেতা।

Advertisment

মাওবাদীদের গ্রিন করিডর হিসেবে পরিচিত সুকমা, দক্ষিণ বস্তার, বিজাপুর এবং দান্তেওয়ারায় প্রভাব আছে হিডমার গ্রুপের। যদিও এখনও পর্যন্ত একজন পৌরাণিক কমান্ডার হিসেবে হিডমাকে চিনে এসেছে ওই এলাকার স্থানীয় বাসিন্দারা। এক ছায়া মানুষ হিসেবে মাও করিডর ধরে যাতায়াত এই হিডমার। ফলে তার বর্তমান পরিচিত হিসেবে সন্দিহান কেন্দ্রীয় গোয়েন্দারা। তাই তাকে ধরতে ২০ লক্ষ টাকা মাথার দাম ধার্য করেছে ছত্তিশগড় সরকার। কমবেশি ২০ লক্ষ টাকা মাথার দাম ধার্য করেছে পড়শি রাজ্য এবং কেন্দ্রীয় সংস্থাগুলো।

কেন্দ্রীয় গোয়েন্দাদের কাছে হিডমার যে ছবি, সেখানে হালকা দাড়ির এক যুবকের উল্লেখ আছে। সেই যুবক কাঁধে একে-৪৭ নিয়ে দাঁড়িয়ে। সেই ছবির বিচারে হিডমার বর্তমান বয়স ৩৫-৪৫-এর মধ্যে। তথ্য ঘেঁটে জানা গিয়েছে, জগরগুণ্ডা থানা এলাকার এক আদিবাসী পরিবারের সন্তান হিডমা। সুকমা-বিজাপুর সীমান্তের পুবার্তি গ্রামে তার জন্ম।

তার নাম নিয়েও ধন্দে রাজ্য পুলিশ। কোথাও পুলিশ তাকে চেনে মান্ডবি নামে। কোথাও আবার মাদ্ভি নামে। কিন্তু মাও করিডরের নিরাপত্তা বাহিনীর ত্রাস এই হিডমা এখন রাজ্য পুলিশের হিট লিস্টে। এমনটাই কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সুত্রে খবর।

গোয়েন্দা সুত্রে খবর, মাওবাদীদের কেন্দ্রীয় কমিটির নেতা বাসবরাজুর চেয়েও বেশি জনপ্রিয় হিডমা। যৌথ বাহিনীর অত্যাধুনিক প্রযুক্তির সঙ্গে তাল মিলিয়ে লড়াই করার দক্ষতা হিডমা ও তার ব্যাটালিয়নের রয়েছে। সাম্প্রতিক হামলায় সেই অনুমান আরও নিশ্চিত হয়েছে। তাই যেনতেন প্রকারে হিডমাকে ধরে মাওবাদীদের কোমর ভেঙে দিতে সক্রিয় যৌথ বাহিনী। আর সেই লক্ষ্য থেকেই বস্তারের জঙ্গলে ঢুকে শহিদ ২২ জওয়ান।

এযাবৎকাল একাধিকবার তাকে গ্রেফতারের নীল নকশা তৈরি হলেও বারবার ব্যর্থ হয়েছে যৌথ বাহিনী। কারণ তাকে ঘিরে থাকা ত্রিস্তরীয় সুরক্ষা বলয়। ত্রিস্তরীয় সুরক্ষা বলয় ঘিরে রাখে হিডমাকে। সে জনপথ থেকে নিজেকে লুকিয়ে রাখে এবং গভীর জঙ্গলে স্বচ্ছন্দ বোধ করে। বেশিদিন এক এলাকায় থাকে না হিডমা ও তার সঙ্গীরা। যেহেতু ছোট থেকেই জঙ্গলে মানুষ এই মাওবাদী নেতা, এলাকার ভৌগলিক অবস্থান সম্পর্কে সরগর তাই তাকে সহজে স্পট করা অসম্ভব।

পাশাপাশি ছত্তিশগড়ের সুকমা, বিজৌর এবং দান্তেঅওয়ারায় মোবাইল নেটওয়ার্ক তথৈবচ। ফলে তার অবস্থান সম্পর্কিত কোনও খবর বাইরে যায় না। এলাকার সড়ক পরিকাঠামো অন্তরায় হয়ে দাঁড়িয়েছে। যেহেতু মাওবাদীদের ব্যাটালিয়ন ১ সশস্ত্র বাহিনী। তাই এই বাহিনীকে পরাস্ত করতে অত্যাধুনিক অস্ত্রসম্ভার প্রয়োজন যৌথ বাহিনীর। সেই সম্ভার নিয়ে ভাঙাচোরা রাস্তা দিয়ে হিডমা অবধি পৌছনো প্রতিবন্ধকতা।

পুলিশ সুত্রে খবর, ২০১৭ সালে তারা একবার হিডমার খুব কাছে এসেছিলেন, কিন্তু তারপরেও তাকে ধরতে ব্যর্থ হয়েছিল বাহিনী।

Maoist CRPF Bastar Chattishgarh Naxal Massacre Sukma Hidma
Advertisment