Advertisment

Explained: Pakistan National Election: পাকিস্তানের ভোট পিছোতে চায় সেনেট, পিছনে কোন মতলব?

Senate of Pakistan: আইনসভার উচ্চকক্ষে প্রস্তাবটি পাস হয়েছে। ১০০ সাংসদের মধ্যে মাত্র ১৫ জন উপস্থিত ছিলেন। এই প্রস্তাব পাশের জেরে পাকিস্তানের সাধারণ নির্বাচন বিলম্বিত হতে পারে। নির্বাচন কখন করানো উচিত, তার কোনও উল্লেখ প্রস্তাবে নেই।

author-image
IE Bangla Web Desk
New Update
Pakistan elections delay

পাকিস্তানের পার্লামেন্ট ভবন। (ছবি: উইকিমিডিয়া কমন্স)

  • ৮ ফেব্রুয়ারি পাকিস্তানে সাধারণ নির্বাচন হওয়ার কথা।
  • সেনেটে রয়েছেন ১০০ জন সদস্য।
  • নির্বাচন না-হলে, পাকিস্তানের অর্থনীতি চরমতম বিপর্যয়ের মধ্যে পড়বে বলেই আশঙ্কা।
Advertisment

পাকিস্তানের পার্লামেন্টের উচ্চকক্ষ সেনেট (Pakistan’s Senate) শুক্রবার (৫ জানুয়ারি) একটি প্রস্তাব পাস করেছে। যাতে ৮ ফেব্রুয়ারি হতে চলা পাকিস্তানের জাতীয় নির্বাচনে বিলম্ব ঘটানোর কথা বলা হয়েছে। অধিবেশন চলাকালীন সেনেটের ১০০ জন আইন প্রণেতার মধ্যে মাত্র ১৫ জন উপস্থিত ছিলেন। এই প্রস্তাব পাশের জেরে পাকিস্তানের সাধারণ নির্বাচন বিলম্বিত হতে পারে।

অতিরিক্ত ঠান্ডা
বেলুচিস্তান এবং খাইবার পাখতুনখোয়ার (Khyber Pakhtunkhwa) বেশিরভাগ অঞ্চলে জানুয়ারি এবং ফেব্রুয়ারি শীতলতম মাস। সেই কারণে নির্বাচন স্থগিত করার কথা আছে প্রস্তাবে। কারণ হিসেবে প্রস্তাবে বলা হয়েছে, ওই সময় ভোট হলে, অতিরিক্ত ঠান্ডার কারণে সব ভোটার ভোট দিতে আসতে পারবেন না। নির্দল সিনেটর দিলাওয়ার খান এই প্রস্তাব পাকিস্তানের সেনেটে উত্থাপন করেছেন। দিলওয়ার বলেছেন, বিভিন্ন রাজনৈতিক দলও জানিয়েছে যে, ওই সময় প্রচণ্ড ঠান্ডা থাকবে। তাতে নির্বাচনী প্রক্রিয়া চালাতে অসুবিধা হবে।

আরও পড়ুন- Ram Lalla for Ayodhya: অযোধ্যার রামমন্দিরের রাম লালার মূর্তির কারিগর, চেনেন অরুণ যোগীরাজকে?

নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বেগ
এর পাশাপাশি, নিরাপত্তার উদ্বেগকে কারণ হিসেবে দেখিয়েও নির্বাচন বিলম্বিত করার অনুরোধ করা হয়েছে প্রস্তাবে। তাতে বলা হয়েছে, সম্প্রতি জমিয়তে উলেমা-ই-ইসলাম-ফজল (জেইউআইএফ) প্রধান মওলানা ফজলুর রহমান, জাতীয় পরিষদ সদস্য মহসিন দাওয়ার এবং অন্যান্য রাজনৈতিক নেতাদের ওপর হামলার চেষ্টা হয়েছে। এই উল্লেখ করে প্রস্তাবে বলা হয়েছে, 'পাকিস্তানের স্বরাষ্ট্র দফতর বিশিষ্ট রাজনীতিবিদদের জীবনহানির আশঙ্কার কথা জানিয়েছে। রাজনৈতিক দলগুলো একটি অবাধ এবং নিরপেক্ষ নির্বাচনের অধিকার প্রয়োগের ক্ষেত্রে ইতিমধ্যেই চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হয়েছে।'

আরও পড়ুন- Bangladesh elections: যে কোনও পরিস্থিতিতে হাসিনার প্রত্যাবর্তন, কেন চাইছে ভারত?

ভোট কখন করানো উচিত, উল্লেখ নেই
প্রস্তাবে নিরাপত্তা বাহিনী এবং নাগরিকদের ওপর বিশেষ করে খাইবার পাখতুনখোয়া (কেপি) এবং বেলুচিস্তানে (Balochistan) হামলার সংখ্যা বৃদ্ধির কথা উল্লেখ করা হয়েছে। প্রস্তাবে বলা হয়েছে, 'গোয়েন্দা সংস্থা দুটি প্রদেশে (খাইবার পাখতুনখোয়া এবং বেলুচিস্তান) নির্বাচনী সমাবেশে জঙ্গি হামলার হুমকির ব্যাপারে সতর্ক করেছে।' আর, এই সব কারণ দেখিয়েই নির্বাচন পিছিয়ে দেওয়ার প্রস্তাব করা হয়েছে। যদিও নির্বাচন কখন হওয়া উচিত, তা প্রস্তাবে উল্লেখ করা হয়নি। নির্দল সিনেটর তথা প্রস্তাবের উত্থাপনকারী দিলাওয়ার খান, পাকিস্তানের সংবাদ সংস্থাকে পরে বলেছেন যে তাঁরা চান উপযুক্ত সময়ে নির্বাচন হোক। দুই থেকে চার মাস পরে আবহাওয়ার উন্নতি হলে নির্বাচন করানো যেতে পারে।

আরও পড়ুন- Bangladesh Election 2024: কেন বাংলাদেশের নির্বাচন নিয়ে মাথা ঘামাচ্ছে ভারত, কতটা প্রয়োজন?

তাহলে কি ভোট পিছিয়ে গেল?
না। পাকিস্তানের পার্লামেন্টের উচ্চকক্ষ দ্বারা গৃহীত প্রস্তাব সেদেশের নির্বাচন কমিশনকে মানতেই হবে, এমন কোনও বাধ্যতামূলক ব্যাপার নেই। পাকিস্তানের নির্বাচন কমিশন এখনও বিষয়টি নিয়ে কোনও মন্তব্য করেনি। পাকিস্তান মুসলিম লিগ-নওয়াজ (পিএমএল-এন), পাকিস্তান পিপলস পার্টি (পিপিপি) এবং পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফ (পিটিআই)-সহ সমস্ত প্রধান রাজনৈতিক দলের নেতারাও এই প্রস্তাবের সমালোচনা করেছেন। পিটিআই-এর ব্যারিস্টার নেতা গওহর খান বলেছেন, '১৪ জন সিনেটর তাঁদের ব্যক্তিগত মতামতের ভিত্তিতে একটি প্রস্তাব পাশ করেছেন। যা পাকিস্তানের সাধারণ নির্বাচন আয়োজন ঠেকানোর জন্য যথেষ্ট নয়।'

আরও পড়ুন- Bangladesh Election 2024: বাংলাদেশ নির্বাচনে হাসিনাকে সমর্থন করছে ভারত-চিন, কিন্তু কেন?

নির্বাচন পিছিয়ে গেলে কী হতে পারে?
পাকিস্তানের সংবাদমাধ্যমের বিশ্লেষণ অনুসারে, সেদেশের সাধারণ নির্বাচন পিছিয়ে গেলে তার প্রভাব পড়তে পারে সংবিধান, রাজনীতি এবং অর্থনীতিতে। কারণ, নির্বাচন বিলম্বিত করার কোনও সাংবিধানিক ভিত্তি নেই। দুই, নির্বাচনে স্থগিতাদেশ পাকিস্তানে রাজনৈতিক অস্থিরতা বাড়াবে। তিন, সেনেটের অর্ধেক সদস্যের আসনে মার্চে নতুন করে নির্বাচন হওয়ার কথা। যদি তার আগে পাকিস্তানের সাধারণ নির্বাচন না-হয়, তাহলে সেনেটের সদস্য সংখ্যা সামান্য থাকবে। কারণ, যাঁদের আসনে নির্বাচন হওয়ার কথা, তাঁদের মেয়াদ ফুরিয়ে যাবে। সেক্ষেত্রে, গুটিকয়েক সিনেট সদস্যই গোটা পাকিস্তান চালাবে। চার, শুধু তাই নয়। পাকিস্তানের অর্থনীতিকে সচল রাখার জন্যও আন্তর্জাতিক মুদ্রা ভাণ্ডারের সঙ্গে বৃহত্তর এবং দীর্ঘমেয়াদি আলোচনা চালাতে একটি নির্বাচিত সরকারের দরকার। না-হলে, জুনের মধ্যেই পাকিস্তানের বৈদেশিক মুদ্রার ভাণ্ডার শেষ হয়ে যাবে। যাতে, গোটা পাকিস্তান অর্থনৈতিক বিশৃঙ্খলার মুখে পড়বে। আর, এই সব কারণেই নির্বাচন স্থগিত করা পাকিস্তানের পক্ষে বিরাট ঝুঁকির ব্যাপার হয়ে যাবে।

election commission Indian army pakistan India Election Pakistan Army
Advertisment