গত ২-৩ বছরে, ভোজ্য তেলের মত বেশ কিছু পণ্যের দামে অস্থিরতা দেখা দিয়েছে। রাষ্ট্রসংঘের খাদ্য ও কৃষি সংস্থার আন্তর্জাতিক উদ্ভিজ্জ তেলের মূল্যসূচক অনুযায়ী ভোজ্য তেলের দাম ২০১৪-২০১৬ সালে ছিল ১০০। করোনাকালে বিশ্বব্যাপী যখন লকডাউন তুঙ্গে, সেই সময় ২০২০ সালের মে মাসে সেই মূল্য ৭৭.৮ পয়েন্টে নেমে এসেছিল। ইউক্রেনে রাশিয়ার আগ্রাসনের পর, ২০২২ সালের মার্চে তা সর্বকালের সর্বোচ্চ ২৫১.৮-এ পৌঁছেছিল। ফের ২৯ মাস বাদে তা যথেষ্ট কমেছে। ২০২৩-এর এপ্রিলে উদ্ভিজ্জ তেলের মূল্য কমে হয়েছে ১৩০ পয়েন্ট।
দাম বেড়েছিল তেলের
উদ্ভিজ্জ যে তেল গত এক বছরে সর্বোচ্চ মূল্যবৃদ্ধি ও পতনের সাক্ষী হয়েছে তা হল সূর্যমুখী। কারণ, ইউক্রেন এবং রাশিয়া ২০২১-২২ সালে একসঙ্গে বিশ্বে মোট উৎপাদিত এই তেলবীজের প্রায় ৫৮% উত্পাদন করেছিল। কিন্তু, ইউক্রেন এবং রাশিয়ার যুদ্ধ কৃষ্ণসাগর বন্দর দিয়ে এই তেলবীজের রফতানি বা সরবরাহ বন্ধ করে দেওয়ায় সূর্যমুখী তেলের দাম ব্যাপক বেড়ে যায়। ২০২২ সালের জানুয়ারিতে ভারতে আমদানি করা অপরিশোধিত সূর্যমুখী তেলের দাম গড়ে প্রতিটন সিআইএফ (উৎপাদন খরচ ও মাল বহনের) ছিল ১,৪৭৫ মার্কিন ডলার।
কার দাম কত?
অপরিশোধিত সয়াবিন তেলের টনপ্রতি দাম ছিল ১,৫০৬ মার্কিন ডলার। আর, আরবিডি (পরিশোধিত, ব্লিচড এবং ডিওডোরাইজড) পামোলিনের টনপ্রতি দাম ছিল ১,৪৯০ মার্কিন ডলারের নীচে। ২০২২ সালের এপ্রিলের মধ্যে, সূর্যমুখী তেলের গড় মূল্য ছিল টনপ্রতি ২,১৫৫ মার্কিন ডলার, সয়াবিন তেলের গড় মূল্য ছিল টনপ্রতি ১,৯০৯ মার্কিন ডলার, আর পামোলিনের গড় মূল্য ছিল টনপ্রতি ১,৭৪৮ মার্কিন ডলার।
চুক্তির জের
যাইহোক, রাশিয়া এবং ইউক্রেনের মধ্যে ২২ জুলাই স্বাক্ষরিত ব্ল্যাক সি গ্রেইন ইনিশিয়েটিভ চুক্তির মধ্যে দিয়ে পরিস্থিতির পরিবর্তন হয়। রাষ্ট্রসংঘ এবং তুরস্কের মধ্যস্থতায় চুক্তিটি অনুযায়ী তিনটি মনোনীত ইউক্রেনীয় বন্দরের মাধ্যমে শস্য ও খাদ্যসামগ্রী বহনকারী জাহাজের নিরাপদ চলাচলের ছাড়পত্র মেলে। এই করিডোরটি খোলার ফলে ইউক্রেনে জমে থাকা সূর্যমুখী তেল, খাবার এবং বীজগুলোকে বাইরে পাঠানোর ব্যবস্থা করা সম্ভব হয়।
আরও পড়ুন- কর্ণাটকের উপমুখ্যমন্ত্রী হয়েছেন শিবকুমার, কী এই পদের গুরুত্ব?
দাম কমেছে
শুধু তাই নয়, আন্তর্জাতিক উদ্ভিজ্জ তেলের দাম ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধের আগেকার সময়ের চেয়েও নীচে নেমে যায়। ভারতে বর্তমানে সূর্যমুখী তেল টনপ্রতি প্রায় ৯৫০ মার্কিন ডলার সিআইএফ মূল্যে আমদানি করা হচ্ছে। যা বাজারে সূর্যমুখী তেলের প্রতিযোগী সয়াবিন তেলের চেয়েও (টনপ্রতি প্রায় ৯৯০ মার্কিন ডলার) কম।