রাম-জন্মভূমি বাবরি মসজিদ মামলার শুনানি আগামী ৬ অগাস্ট থেকে শুরু হবে সুপ্রিম কোর্টে। এলাহাবাদ হাইকোর্টের ২০১০ সালের ৩০ সেপ্টেম্বরের রায়কে চ্যালেঞ্জ করে যে আবেদনগুলি জমা পড়েছিল, সেগুলির শুনানি চলবে প্রতিদিন। মধ্যস্থতাকারীরা ব্যর্থ হওয়ার পর এই সিদ্ধান্তের কথা জানিয়েছে শীর্ষ আদালত। মধ্যস্থতাকারী প্যানেলের জমা দেওয়া রিপোর্টের উপর ভিত্তি করেই এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসকে একটি সূত্র জানিয়েছে মধ্যস্থতাকারী কমিটি গত সপ্তাহে সব পক্ষের কাছে গ্রহণযোগ্য একটি সম্ভাব্য সমাধানের চেষ্টা করেছিল। বৃহস্পতিবারই যেহেতু রিপোর্ট জমা দেওয়ার শেষ তারিখ ছিল কমিটির তরফ থেকে সব পক্ষকে জানানো হয় যে মধ্যস্থতা সফল না হওয়ায় এ প্রক্রিয়া সরকারি ভাবে বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। সূত্র জানিয়েছে মধ্যস্থতা প্রক্রিয়ায় সব পক্ষেরই সুবিধা হলেও তারা কোনও সিদ্ধান্তে পৌঁছতে পারছে না।
ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস জানতে পেরেছে, গত ৮ মার্চ সুপ্রিম কোর্ট যে মধ্যস্থতাকারী প্যানেল তৈরি করে দিয়েছিল, তারা এতদিনে সব পক্ষের উপস্থিতিতে একটিই বৈঠক করতে পেরেছে। ৪১ জন ব্যক্তির উপস্থিতিতে সেটিই ছিল মধ্যস্থতাকারী প্যানেলের প্রথম বৈঠক। এরপর কমিটি আরও বেশ কিছু সভা করেছে অনেকগুলি শহরে। তার মধ্যে রয়েছে দিল্লি, লখনউ ও অযোধ্যার মত গুরুত্বপূর্ণ শহরও। সুপ্রিম কোর্ট মধ্যস্থতাকারীদের যে প্যানেল তৈরি করে দিয়েছিল, তাতে ছিলেন শীর্ষ আদালতের প্রাক্তন বিচারপতি এফএমআই কলিফুল্লা, আর্ট অফ লিভিং প্রতিষ্ঠাতা শ্রী শ্রী রবিশংকর এবং প্রবীণ আইনজীবী শ্রীরাম পঞ্চু।
গত ১৮ জুলাই দেশের প্রধান বিচারপতি রঞ্জন গগৈ, বিচারপতি এস এ বোবডে, ডি ওয়াই চন্দ্রচূড়, অশোক ভূষণ, আব্দুল নাজিরকে গঠিত সুপ্রিম কোর্টের সাংবিধানিক বেঞ্চ মধ্যস্থতাকারী কমিটিকে বলে ১ অগাস্টের মধ্যে মধ্যস্থতাপ্রক্রিয়ার অবস্থা জানাতে বলে। অযোধ্যা জমি নিয়ে যে সিভিল মামলা হয়েছিল তাতে একজন বাদী ছিলেন গোপাল সিং বিশারদ। তাঁর ছেলে গোপাল সিংয়ের আবেদনের ভিত্তিতে ওই নির্দেশ দিয়েছিল বেঞ্চ।
অযোধ্যার বাসিন্দা গোপাল সিং বিশারদ ১৯৫০ সালে ফৈজাবাদের সিভিল বিচারকের দ্বারস্থ হয়ে বলেন রাজ্য সরকার তাঁকে তাঁর আরাধ্য মূর্তিতে পূজা করতে দিচ্ছেন না। মূর্তি সরানোর সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে ইনজাংশন চেয়েছিলেন তিনি।
এই গোপাল সিংয়ের ছেলে রাজেন্দ্র সিং শীর্ষ আদালতে মধ্যস্থতা প্রক্রিয়ার সমাপ্তি ঘোষণা করে শুনানি শুরু করার জন্য আবেদন জানান। তিনি বলেন, প্রাথমিক ভাবে মধ্যস্থতা নিয়ে আপত্তি থাকলেও আবেদনকারী এই প্রক্রিয়ায় পূর্ণোদ্যমে অংশগ্রহণ করেছিল। তবে এই পাঁচ মাস সময়ের মধ্যে অনুষ্ঠিত তিনটি বৈঠকে কোনও পক্ষ থেকেই কোনও নির্দিষ্ট প্রস্তাব আসেনি এবং মধ্যস্থতা প্রক্রিয়ার কোনও অভিমুখ দেখা যাচ্ছে না।
২০১০ সালের ৩০ সেপ্টেম্বর এলাহাবাদ হাইকোর্ট রায় দেয় রাম জন্মভূমি- বাবরি মসজিদের বিতর্কিত ২.৭৭ একর জমি নির্মোহী আখড়া,উত্তর প্রদেশের সুন্নি কেন্দ্রীয় ওয়াকফ বোর্ড এবং রামলীলা বিরাজমনের মধ্যে সমান ভাবে বণ্টন করে দেওয়া হবে।
Read the Full Story in English