বিদেশি মুদ্রা আইন লঙ্ঘনের অভিযোগে দেশজুড়ে একযোগে তল্লাশি চালাল সিবিআই। দেশের ৪০টি স্থানে মঙ্গলবার এই তল্লাশি চালানো হয়েছে। যে সব রাজ্যগুলোয় তল্লাশি চালানো হয়েছে, তার মধ্যে রয়েছে দিল্লি, রাজস্থান, চেন্নাই, হায়দরাবাদ, কোয়েম্বাত্তুর, মাইসুরু-সহ বেশ কয়েকটি এলাকা। এই সব এলাকার বিভিন্ন ব্যবসায়ী থেকে স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার কর্তাদের বাড়ি ও অফিসে তল্লাশি চালানো হয়েছে। গোটা তল্লাশি পর্ব চলছে একযোগে। ইতিমধ্যে তল্লাশিতে এক বিরাট হাওয়ালা চক্রের হদিশ মিলেছে বলেই সিবিআই সূত্রে খবর।
তদন্তে জানা গিয়েছে, বিভিন্ন স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা বিদেশি মুদ্রা আইন (FCRA) লঙ্ঘন করেছে। আর, সেই অর্থের পরিমাণ বিরাট অঙ্ক। সিবিআই কর্তারা এই ব্যাপারে বেশ কয়েকজনকে জিজ্ঞাসাবাদ করেছেন। তাঁদের মধ্যে বেশ কয়েকজন সরকারি আধিকারিক আছেন। এমনকী, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের আধিকারিকরাও ঘটনার সঙ্গে জড়িত বলেই সন্দেহ করছেন সিবিআই কর্তারা। এই ব্যাপারে সিবিআইয়ের এক কর্তা জানিয়েছেন, 'প্রায় হাফডজন সরকারি আধিকারিককে ইতিমধ্যে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে। আরও কয়েকজনকেও জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে। তদন্ত চলাকালীন ন্যূনতম পক্ষে ২ কোটি টাকার হাওয়ালা কেলেঙ্কারির হদিশ মিলেছে।'
ঘটনার সঙ্গে এনজিও সংস্থাগুলো তো বটেই, বিভিন্ন দালালচক্রও জড়িত বলেই জানতে পেরেছেন সিবিআই কর্তারা। স্বেচ্ছাসেবী সংস্থাগুলোকে বিদেশি মুদ্রা আইনের মাধ্যমে আর্থিক লেনদেনের সুযোগ করে দিতে চলছিল ঘুষের আদানপ্রদান। সেই চক্রের পরদাও ইতিমধ্যে তদন্তে ফাঁস হয়ে গিয়েছে। গত মাসেই এভাবে বেআইনি বিদেশি মুদ্রা লেনদেনের অভিযোগে বেশ কয়েকটি আন্তর্জাতির সংস্থার এফসিআরএ রেজিস্ট্রেশন বাতিল করে দিয়েছিল কেন্দ্রীয় সরকার। এর মধ্যে বেশ কয়েকটি খ্রিস্টান মিশনারি সংস্থাও রয়েছে। তারপরও বর্তমানে দেশের ১৬,৮৯০টি স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা FCRA আইনে নথিভুক্ত। এমনটাই জানিয়েছে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক।
আরও পড়ুন- গ্রেনেড হামলা, খালিস্তানের দাবি ঘিরে পঞ্জাবে তুঙ্গে চাপানউতোর, আপের নিশানায় বিরোধীরা
কেন্দ্রে নরেন্দ্র মোদীর সরকার ক্ষমতায় আসার পর ২০,৬৭৯টি স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার FCRA রেজিস্ট্রেশন বাতিল করে দিয়েছে। আরও ১২,৫৪০টি স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার FCRA রেজিস্ট্রেশনের মেয়াদ ফুরিয়ে গিয়েছে। এখনও যে সব সংস্থাগুলো এই আইনে নথিভুক্ত, তাদের আর্থিক কাজকর্মের ওপর কড়া নজরদারি চালাচ্ছে কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থাটি। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের কর্তাদের দাবি, এই সব বেআইনি আর্থিক কার্যকলাপের সাহায্যেই দেশে জঙ্গি এবং সন্ত্রাসবাদী কার্যকলাপকে চাগিয়ে তোলা হয়।
Read story in English