ভুল সময়ে ভুল কবিতা পড়া হয়েছে, নিদান দিল আইআইটি কানপুরের প্যানেল। গত বছর ক্যা বিরোধী বিক্ষোভের সময়ে ছাত্ররা ফৈয়াজ আহমেদ ফৈয়াজের কবিতা আবৃত্তি করেছিলেন। সে নিয়ে কানপুর আইআইটি একটি প্যানেল তৈরি করেছিল।
প্যানেলের বক্তব্য যে পাঁচ শিক্ষক ও ৬ ছাত্র এ বিক্ষোভে অংশ নিয়েছিলেন. তাঁদের ভূমিকা অনাকাঙ্ক্ষিত ছিল এবং প্যানেলের প্রস্তাব আইআইটি তাঁদের কাউন্সেলিং করুক।
নাগরিকত্ব বিক্ষোভে ফৈয়াজের কবিতা, ইকবাল বানোর গান
জামিয়া মিলিয়া ইসলামিয়ার নাগরিকত্ব আইন বিরোধী বিক্ষোভরত ছাত্রছাত্রীদের উপর পুলিশি হামলার পর, ওই ছাত্রছাত্রীদের সমর্থনে গত ১৭ ডিসেম্বর এক ছাত্র বিক্ষোভে ফৈয়াজের কবিতা হাম দেখেঙ্গে আবৃত্তি করা হয়েছিল। সে নিয়ে আইআইটিতে একটি অভিযোগ দায়ের করা হয়। আইআইটি এ ব্যাপারে একটি ৬ সদস্যের কমিটি গঠন করে।
অভিযোগ করেছিলেন আইআইটি-র অস্থায়ী শিক্ষক ভাশি মন্ত শর্মা। তাঁর দাবি ছিল ওই কবিতা আবৃত্তিতে তাঁর ধর্মীয় ভাবাবেগে আঘাত লেগেছে।
দেশদ্রোহিতা থেকে তাজমহল: আইআইটি কানপুরের সেই শিক্ষকের কিছু মণিমুক্তো
এর আগে ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসকে অভিযোগকারী শিক্ষক বলেন, "কী করে এমন কবিতা আবৃত্তি করা যেতে পারে যেখানে বলা হয়েছে প্রতিমা টেনে নামানো হবে! এর মাধ্যমে ভারতে মুঘলদের প্রবেশের কথা বলা হয়েছে এবং তাতে আমার ধর্মীয় অনুভূতি আহত হয়েছে।"
কমিটির উপর দায়িত্ব ছিল ওই সমাবেশে এবং সোশাল মিডিয়ায় কোনও জ্বালাময়ী, ন্যক্কারজনক ও ভয় দেখানোর মত কোনও ভাষা ব্যবহার করা হয়েছে কিনা, তা খতিয়ে দেখা।
কমিটির চেয়ারপার্সন তথা ডেপুটি ডাইরেক্টর মণীন্দ্র আগরওয়াল ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসের কাছে গত সপ্তাহে রিপোর্ট জমা পড়বার কথা স্বীকার করে নিয়েছেন। ফৈয়াজের কবিতা আবৃত্তি নিয়ে তিনি বলেন, "কমিটি মনে করেছে যে সময়ে, যে জায়গায় ওই কবিতা পড়া হয়েছে তা যথাযথ ছিল না। যিনি ওই কবিতা পড়েছিলেন তিনি এই প্রেক্ষিত মেনে নিয়েছেন এবং দুঃখপ্রকাশ করে একটি নোটও দিয়ে বলেছেন যে যদি কারও অনুভূতি আহত হয়ে থাকে, তাহলে তিনি দুঃখিত। ফলে ব্যাপারটা শেষ হয়ে গিয়েছে।"
ফৈয়াজ আহমেদ ফৈয়াজের কবিতা নিয়ে বিতর্ক দুর্ভাগ্যজনক: গুলজার
প্যানেলের এমনটা মনে হল কেন, সে নিয়ে জিজ্ঞাসা করা হলে তিনি বলেন, "ওটা একটা ক্রান্তিকালীন পরিস্থিতি ছিল। বিভিন্ন ভাবনার লোকেরা বিভিন্ন প্রেক্ষিত নিয়ে ওখানে হাজির হয়েছিলেন, এবং তাঁর বিক্ষুব্ধ ছিলেন। ওরকম সময়ে এমন কিছু করা উচিত নয় যাতে মানুষ আরও ক্ষুব্ধ হতে পারে। একটা সাধারণ, দৈনন্দিন দিনে আমি অনেক কিছু করতে পারি, কিন্তু ওরকম একটা পরিস্থিতিতে তেমন করতে পারি না।"
আগরওয়াল স্পষ্ট করে দেন, কবিতার অর্থের বিষয়ে তাঁরা মাথা ঘামাননি।
আগরওয়াল বলেছেন, "আইআইটি সকাল ১১টা বা দুপুর বারোটায় জানিয়েছিল যে পারমিশন প্রত্যাহার করে নেওয়া হয়েছে এবং শহরের প্রশাসন ১৪৪ ধারা লাগু করেছে। কিন্তু সে তথ্য বেশিরভাগ ছাত্রছাত্রীদের কাছে পৌঁছয়নি, তাঁরা ভেবেই নিয়েছিলেন দুটোর সময়ে মিছিল বেরোবে।"
"বেশ কিছু ফ্যাকাল্টি মেম্বার অনুমতি প্রত্যাহার ও ১৪৪ ধারার কথা জেনেও মিছিলে অংশ নেন। অনেকেই কুরুচিকর ভিডিও পোস্ট করেছেন সোশাল মিডিয়ায়। কিছু ভুল খবরও পোস্ট করা হয়েছে। আইআইটি এ নিয়ে জানানো সত্ত্বেও সেগুলি শোধরানো হয়নি। এগুলিকেও চিহ্নিত করেছে কমিটি।"