গত কয়েকদিন ধরেই বিরূপ ছিল প্রকৃতি। অতি বৃষ্টিতে ব্যাহত ছিল জনজীবন। তবে, মেঘ কেটে গিয়েছে। রোদ মেলেছে হিউস্টনে। তারই মাঝে মার্কিন দেশের এই শহরে পৌঁছে গিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী মোদী। তাঁর সফর ঘিরে উচ্ছ্বাস, উন্মাদনা গোটা হিউস্টনজুড়ে। প্রকৃতির এই ভোলবদলই যেন ইঙ্গিত দিচ্ছে ভারত-মার্কিন সম্পর্কের ডানা মেলার কথা। আমেরিকার 'শক্তি হাব' বলে পরিচিত এই শহর। সেখানে চোখ মেললেই নজরে আসবে বড় বড় ইলেকট্রনিক্স বোর্ডে '৫৬ ইঞ্চি' ছাতির মুখ। তাতে লেখা ভারতীয়দের বাড়ি হিউস্টনে প্রধানমন্ত্রী মোদীকে স্বাগত।
আরও পড়ুন: ফের বড় ধাক্কা! রাজীব কুমারের আগাম জামিনের আর্জি খারিজ
মোদীর সফর ঘিরে সাজ সাজ রব। চূড়ান্ত প্রস্তুতি প্রায় সম্পন্ন হিউস্টনের এনআরজি স্টেডিয়ামে। মোদীর সঙ্গেই অনাবাসী ভারতীয়দের এই অনুষ্ঠানে হাজির থাকবেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। যাতে এই অনুষ্ঠানের গুরুত্ব কয়েকগুণ বেড়েছে। বলা হচ্ছে, পোপের সভার পর এত বড় আকারের সভার সাক্ষী থাকবে হিউস্টন। হট কেকের মত শেষ অনুষ্ঠানে প্রবেশের জন্য টিকিট। ৫০ হাজার মানুষ আজ দেখবেন ও শুনবেন মোদী-ট্রাম্পের ভাষণ। টিকিটের চাহিদা অবশ্য এখনও তুঙ্গে। বিক্রি করা হয়েছে ৫১ হাজার টিকিট। ভাগ্য সুপ্রসন্ন থাকলে ওয়েটিং লিস্টে নাম থাকা মানুষগুলো ইতিহাসের সাক্ষী থাকতে পারবেন। আমেরিকায় সময় রবিবার বিকেলে অনুষ্ঠানের কথা থাকলেও দেশবাসীর কথা ভেবে পরে এগিয়ে আনা হয় 'হাউডি মোদী' শো।
টেক্সাস ইন্ডিয়া ফোরামের সদস্যা ও এদিনের অনুষ্ঠানের অন্যতম সংগঠক প্রীতি দেওরার এখন দম ফেলার ফুসরত নেই। এরই মাঝে তাঁর কাছে জানতে চাওয়া হয়, ইতিহাস হতে চলা এই অনুষ্ঠানে কে আগে বক্তব্য রাখবেন? ভারতের প্রধানমন্ত্রী, নাকি মার্কিন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প? সেখানেও রয়েছে চমক। খোলসা করতে চাইলেন না প্রীতি। শুধু বললেন,'অপেক্ষায় থাকুন, সারপ্রাইজ রয়েছে।'
Howdy Houston!
It’s a bright afternoon here in Houston.
Looking forward to a wide range of programmes in this dynamic and energetic city today and tomorrow. pic.twitter.com/JxzWtuaK5x
— Narendra Modi (@narendramodi) September 21, 2019
২০১৪ সালে প্রধানমন্ত্রী হওয়ার পর এর আগেও দু'বার নরেন্দ্র মোদী আমেরিকায় এসে অনাবাসী ভারতীয়দের অনুষ্ঠানে তাঁর বক্তব্য পেশ করেছেন। ওই বছরই ম্যাডিশন স্কোয়ার গার্ডেন ও ২০১৫ সালে সান যোশে বক্তব্য রাখেন মোদী। তবে, এবারেরটা ব্যাপ্তি ও গুরুত্বের বিচারে সম্পূর্ণ অন্য মাত্রা বহন করছে। দ্বিতীয়বার বিপুল শক্তি নিয়ে ক্ষমতায় এসেছে বিজেপি। বালাকোট, এয়ার স্ট্রাইক, কাশ্মীরে ৩৭০ ধারা রদের পর বিদেশের মাটিতে এত বড় সংখ্যায় দর্শকের সামনে, প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের উপস্থিতিতে নিজের কথা বলবেন প্রধানমন্ত্রী। পাকিস্তানকে কীভাবে মোকাবিলা করা হবে? সেসব জানতে উদগ্রীব ভারতীয়রা। বুঝে নেওয়া যাবে আমেরিকার মনোভাবও।
নিরাপত্তা বলয়ে মুড়ে ফেলা হয়েছে হিউস্টন। এরই মাঝে সোনা যাচ্ছে, বেশ কিছু মানুষ মোদীর বিরোধিতা করে বিক্ষোভ প্রদর্শন করতে পারেন। সংগঠকরা বলছেন, 'এলাকা সিল করে দেওয়া হচ্ছে। ফলে, অপ্রীতিকর ঘটনার কোনও ঝুঁকি নেই।'
আরও পড়ুন: EXCLUSIVE: ‘মমতার সঙ্গে কেন কথা বলব? বিজেপিতে যোগ দিতে যাইনি’
হিউস্টন বিশ্বের অন্যতম শক্তি হাব। ভারত-মার্কিন বাণিজ্যেও বড় ভূমিকা নেয় এই শহর। পরিসংখ্যান বলছে, এই দুই রাষ্ট্রের মধ্যে ৭ বিলিয়ন ডলার মূল্যের বাণিজ্য হয় টেক্সাস থেকে। মোদী-ট্রাম্প ও মোদীর সঙ্গে শক্তি সংস্থার আধিকারিকদের বৈঠকের পর তা আরও বৃদ্ধি পাবে বলে আশাবাদী অনাবাসী ভারতীয়রা।
Read the full story in English