নাগাল্যান্ডে সেনার গুলিতে নিহতদের পরিবারে শ্মশানের নীরবতা। এই ক্ষত তাড়াতাড়ি শুকোনোর নয়। যেমন নিজের যমজ সন্তানকে হারিয়ে ক্ষোভে ফুঁসছেন এমনই এক হতভাগ্য বাবা। যাঁর দুই যমজ সন্তান লাংওয়াং এবং থাপওয়াং রুজি-রুটির জন্য মন জেলার খনিতে কাজ করতেন।
২৫ বছরের দুই তরুণ রবিবার একটি বিয়ের অনুষ্ঠানে অংশ নিয়ে গ্রাম থেকে ৬ কিমি দূরে খনিতে কাজে যাচ্ছিলেন। সেই যে যাওয়া আর বাড়ি ফেরা হল না তাঁদের। ওটিং গ্রামে দুই যমজ ভাই-সহ ৬ জনের মৃত্যু হয় সেনার গুলিতে। আরও দুজন ডিব্রুগড়ের হাসপাতালে মৃত্যুর সঙ্গে পাঞ্জা লড়ছেন।
ওটিং গ্রামের বাসিন্দাদের আয়ের উৎস হল খনিতে কাজ করা। ১৫ বছর ধরে খনিতে কাজ করেন গ্রামের অধিকাংশ বাসিন্দা। লাংওয়াং এবং তাঁর ভাইও খনিতে শ্রমিকের কাজ করতেন। সারা সপ্তাহ কাজের পর শনিবার তাঁরা পিক আপ ট্রাকে চেপে বেশ কিছুটা দূরে চার্চে যেতেন। রবিবার চার্চে পরিষেবা দিতেন তাঁরা।
দুই যমজ সন্তানকে হারিয়ে তাঁদের বাবা ক্ষোভে ফুঁসে বলছেন, "আমার কোনও অনুভূতি বলে কিছু নেই। ক্ষতিপূরণের টাকা দিয়ে বিচার হয় না। দোষী সেনা অফিসারদের শাস্তি চাই, ব্যস!"
আরও পড়ুন ‘অত্যন্ত দুঃখজনক, ভুল করে গুলি চলেছে’, নাগাল্যান্ড-কাণ্ডে সংসদে বিবৃতি অমিত শাহের
রবিবার এই সেনার গুলিতে ছজনের মৃত্যুর খবর চাউর হতেই সেনার সঙ্গে সংঘর্ষ বাঁধে গ্রামবাসীদের। তাতে আরও সাতজন গ্রামবাসীর মৃত্যু হয়। তাঁর মধ্যে ৩৮ বছরের হোকুপও ছিলেন। যাঁর বিয়েতে গোটা গ্রাম শরিক হয়েছিল ওই যমজ ভাই-সহ। গ্রামের বাসিন্দা টি নাহওয়াং কান্না চেপে রেখে বলেন, "হোকুপের যেখানে বিয়ে হয়েছিল, সেখানেই ওঁকে কবর দেওয়া হল। ভাবুন, এমন খুশির দিনে কেউ ভাবতে পেরেছিল এটা হবে।"
সোমবার নিহত ১৩ জন গ্রামবাসীর দেহ গ্রামে আনা হয়। সেখানে গ্রামবাসীরা নিহতদের শেষ শ্রদ্ধা জানান। তারপর সামান্য দূরে কবরস্থানে দেহগুলি কবর দেওয়া হয়। নিহতদের যোদ্ধা হিসাবে তকমা দিয়েছে ওটিং গ্রাম।
ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা এখন টেলিগ্রামে, পড়তে থাকুন