Hathras Stampede: ফের শিরোনামে উত্তরপ্রদেশের হাথরস। ২০২০ সালে এই হাথরসেই এক দলিত নাবালিকার গণধর্ষণে মৃত্যুর ঘটনায় উত্তাল হয়েছিল গোটা দেশ। এবার যোগী রাজ্যের এই শহরে ধর্মীয় অনুষ্ঠানে পদপিষ্ট হয়ে মৃত্যু হল অন্তত ১১৬ জনের। গোটা ঘটনায় প্রশ্নের মুখে প্রশাসনের ভূমিকা।
জানা গিয়েছে, হাথরস জেলার সিকান্দ্রা রাউ তহসিলের অন্তর্গত রতিভানপুর গ্রামে একটি ধর্মীয় অনুষ্ঠানে এই মর্মান্তিক ঘটনা ঘটেছে। এটাওয়ার পুলিশ সুপার রাজেশ কুমার সিং জানিয়েছেন, হতাহতের দেহ স্থানীয় হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। আহতদের চিকিৎসা চলছে। মৃতদের দেহ শনাক্তকরণের কাজ চলছে।
স্থানীয় সূত্রে খবর, ধর্মীয় অনুষ্ঠান শেষ হতেই বিশৃঙ্খলার সৃষ্টি হয়। বিপুল সংখ্যক ভক্ত অনুষ্ঠানে উপস্থিত হওয়ায় পরিস্থিতি খারাপ হয়। হুড়োহুড়ির চোটে অনেকে মাটিতে পড়ে যান, তাতেই পদপিষ্টের ঘটনা ঘটে। নিহতের মধ্যে বহু মহিলা এবং বেশ কয়েকটি শিশুও রয়েছে। কীভাবে কেন এই ঘটনা ঘটল তা তদন্ত হচ্ছে বলে জানিয়েছেন পুলিশ সুপার।
জানা গিয়েছে, ধর্মীয় অনুষ্ঠানে শিবকথা চলছিল। ওই ধর্মীয় প্রচারক সাকার বিশ্ব হরি ভোলে বাবার ব্যানারে দুই দশকেরও বেশি সময় ধরে এই ধরনের অনুষ্ঠান করে আসছিলেন। অনুষ্ঠানে তিনি ও তাঁর স্ত্রী ভাষণ দিচ্ছিলেন। তা শেষ হতেই হলের ছোট দরজা দিয়ে সবাই একসঙ্গে বেরনোর চেষ্টা করেন। তাতেই ঘটে বিপত্তি। মৃতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা। আহতদের মধ্যে অনেকেই আশঙ্কাজনক। তাঁদের চিকিৎসা চলছে।
পুলিশ সুপার জানিয়েছেন, গোটা ঘটনার বিবরণ জেনেছেন মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ। তিনি ইতিমধ্যেই একটি তদন্ত কমিটি গঠন করার নির্দেশ দিয়েছেন। পুলিশ সূত্রে খবর, মৃতদের বেশিরভাগই মহিলা। আলিগড় রেঞ্জের ডিআইজি শলভ মাথুর বলেছেন, অনুষ্ঠানের আয়োজকদের বিরুদ্ধে একটি এফআইআর নথিভুক্ত করা হয়েছে। তিনি বলেন, 'হাতরাস জেলার সীমান্তে জমায়েতের জন্য অনুমতি দেওয়া হয়েছিল। সিকান্দারা রাউয়ের এই সৎসঙ্গে কমপক্ষে ১৫ হাজার লোকের উপস্থিতি ছিল। আমরা পদদলিত হওয়ার সঠিক কারণ জানি না। তবে বেশিরভাগ মৃত্যু শ্বাসরোধের ফলে হয়েছে।'
পুলিশ জানিয়েছে, ইটা-র পাটিয়ালি তহসিলের অন্তর্গত বাহাদুর নাগরী গ্রামের বাসিন্দা ভোলে বাবা প্রায় ২৭ বছর ধরে এই অঞ্চলে এবং পার্শ্ববর্তী জেলাগুলোতে ধর্মপ্রচার করতেন। আসল নাম নারাইন সাকার হরি। তিনি প্রায় ২৭ বছর আগে সরকারি চাকরি ছেড়ে দেওয়ার পরে ধর্মীয় প্রচার শুরু করেছিলেন।
ইটার চিফ মেডিকেল অফিসার (সিএমও), উমেশ কুমার ত্রিপাঠী বলেছেন, 'এখনও পর্যন্ত আমাদের ইটা মেডিকেল কলেজ মর্গে ২৭টি মৃতদেহ রয়েছে। নিহতদের মধ্যে ২৫ জন নারী ও দু'জন পুরুষ। আহত বেশ কয়েকজনকে মেডিকেল কলেজে ভর্তি করা হয়েছে। অনুমান অন্তত ১৫০ জন আহত এখনও মেডিকেল কলেজে ভর্তি। রোগীদের রাখার জন্য মেডিকেল কলেজের সামর্থ্য কম পড়ছে। সেই কারণে আমরা বেসরকারি হাসপাতালগুলোকে পদদলিতদের জন্য শয্যা বরাদ্দ করতে বলেছি।'