দ্য ওয়্যারের পেগাসাস-কাণ্ডের তদন্ত রিপোর্টে আরও চাঞ্চল্য। আড়ি পাতার চেষ্টা হয়েছিল রিলায়্যান্স এডিএ গোষ্ঠীর কর্ণধার অনিল অম্বানির ফোনেও। এছাড়াও নিশানা করা হয়েছিল রিলায়েন্স গোষ্ঠীর অন্যতম কর্তা টোনি জেসুদান, রাফাল-নির্মাতা ফরাসি সংস্থা দাসোর ভারতীয় কর্তা বেঙ্কট রাও পোসিনা ও বোয়িংয়ের মতো আরও কয়েকটি প্রতিরক্ষা সরঞ্জাম নির্মাতার প্রধানদের ফোনও। হ্যাকের তালিকায় নাম রয়েছে কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থা সিবিআই-য়ের প্রাক্তন ডিরেক্টর অলোক বর্মা, সংস্থার প্রাক্তন দুই শীর্ষ কর্তা রাকেশ আস্থানা ও একে শর্মাও।
ভারতে রাফালের অফসেট পার্টনারের দায়িত্ব পেয়েছিল অনিল আম্বানির সংস্থা রিলায়েন্স এডিএ। ২০১৯ লোকসভা ভোটের আগে থেকেই কংগ্রেসের অভিযোগ ছিল যে, নিজের ঘনিষ্ঠ শিল্পপতি অনিল আম্বানিকে আর্থিক সুবিধা পাইয়ে দিতেই ফরাসী সংস্থা দাসো অ্যাভিয়েশনের কাছ থেকে বাড়তি দামে রাফাল কিনেছিল মোদী সরকার। তদন্ত রিপোর্টে উল্লেথ ২০১৮ সাল থেকে ২০১৯ সাল পর্যন্ত শিল্পপতি অনিল আম্বানির ফোনে আড়ি পাতা হয় পেগাসাস স্ফাই ওয়্যার দিয়ে।
নিউজ ওয়েবপোর্টাল দ্য ওয়্যার’য়ের পক্ষ থেকে বৃস্পতিবার এক প্রতিবেদনে জানানো হয়, ‘বেনজিরভাবে মধ্যরাতে অভ্যুত্থানের মাধ্যমে সিবিআইয়ের অধিকর্তার পদ থেকে অলোক বর্মাকে সরিয়ে দেওয়ার কয়েক ঘন্টা বাদেই তাঁর ফোনে আড়িপাতা শুরু হয়। অপসারিত সিবিআই অধিকর্তা কাদের সঙ্গে যোগাযোগ করেন, রাফাল যুদ্ধবিমান ক্রয় সংক্রান্ত কেলেঙ্কারি নিয়ে কী গোপন তথ্য ফাঁস করেন, তার উপরে নজরদারি রাখতেই ফোনে আড়ি পাতা শুরু হয়। শুধু অপসারিত সিবিআই অধিকর্তার ফোনেই নয়, আড়িপাতা হয়েছিল তাঁর স্ত্রী, কন্যা ও জামাতার ফোনেও নজরদারি চালানো হয়েছিল।’
কংগ্রেস সহ বিরোধীদের অভিযোগ, রাফাল যুদ্ধবিমান কেনা নিয়ে মোদী সরকারের মুখোশ খুলে দিতে তদন্তের নির্দেশ দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন সিবিআইয়ের তৎকালীন ডিরেক্টার অলোক বর্মা। আর তা জানতে পেরেই ২০১৮ সালের ২৩ অক্টোবর মধ্যরাতে নজিরবিহীনভাবে অপসারিত করা হয়েছিল তাঁকে।
এছাড়াও একই সময়ে সিবিআইয়ের প্রাক্তন ডিরেক্টর অলোক বর্মার ডেপুটি রাকেশ আস্থানারফোনও ট্যাপ করা হয়েছিল বলে রিপোর্টে উল্লেখ। এই দু'জনের সঙ্গে যোগায়োগ করা হলে কেুই মুখ খুলতে চাননি। আস্থানা জানিয়েছেন, তিনি বাইরে থাকায় পেগাসাস রিপোর্ট পড়তে পারেননি।
পেগাসাস স্পাই ওয়্যার কে কেন্দ্র করে উত্তাল ভারত। মোদী সরকারকে নিশানা করে সংসদ অচল করছেন বিরোধিরা। উল্লেখ্য, এনএসও বহু দেশকে ফোন হ্যাক করার সরঞ্জাম বিক্রি করেছে। এলএসও জানিয়েছে, সরকার বা সরকারি সংস্থা ছাডা় তারা কাউকে পেগাসাস বিক্রি করেনি। সম্প্রতি পেগাসাস তথ্যভাণ্ডার থেকে সম্প্রতি ৫০ হাজার ফোন নম্বরের তালিকা ফাঁস হয়েছে। অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল, ফরবিডেন স্টোরি প্রথমে সেই তথ্য ভাণ্ডার পায়। পরে বিশ্বের ১৬টি সংবাদ সংস্থা তা হাতে পায়। ভারতে নিউজ পোর্টাল দ্য ওয়্যার প্রকাশিততালিকায় কেন্দ্রীয় মন্ত্রী থেকে বিরোধী দলনেতা, সাংবাদিক থেকে নির্বাচন কমিশনারের নাম রয়েছে।
Read in English
ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা এখন টেলিগ্রামে, পড়তে থাকুন