Advertisment

'হাতে সময় বেশি নেই, এখনই মোদী হস্তক্ষেপ করুন', কাতারে ৮ নৌ-সেনার মুক্তির কাতর আর্জি

বিদেশ মন্ত্রক বলেছে, ‘আমরা মৃত্যুদণ্ডের রায়ে গভীরভাবে মর্মাহত'।

author-image
IE Bangla Web Desk
New Update
Indian Navy officers in Qatar get death penalty, Indian Navy, Indians abroad, Qatar news, Qatar death sentence, Indian Navy, Qatar, death penalty, navy death penalty indian express

কাতারে ভারতীয় নৌবাহিনীর ৮ প্রাক্তন অফিসারের মৃত্যুদণ্ড ঘোষণা হতেই, চরম অস্বস্তিতে বিদেশ মন্ত্রক।

প্রধানমন্ত্রীকে অবশ্যই হস্তক্ষেপ করতে হবে, বেশি সময় বাকি নেই। প্রাক্তন নৌবাহিনী অফিসারের বোনের কাতর আর্জি। কাতারে ভারতীয় নৌবাহিনীর ৮ প্রাক্তন অফিসারের মৃত্যুদণ্ড ঘোষণা হতেই, চরম অস্বস্তিতে বিদেশ মন্ত্রক। এর মাঝেই বোমা ফাটালেন প্রাক্তন ভারতীয় নৌবাহিনীর আধিকারিকের বোন।

Advertisment

গত বছরের আগস্টে কাতার কর্তৃপক্ষের হাতে গ্রেফতার হওয়া আট প্রাক্তন ভারতীয় নৌসেনা কর্মীকে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়েছে। এই ঘটনায় বৃহস্পতিবার বিদেশ মন্ত্রক ক্ষোভ প্রকাশ করেছে। নয়াদিল্লি বলেছে যে, ভারত বিষয়টি নিয়ে কাতার কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলবে। সূত্রের খবর, ওই নৌ অফিসারদের এমন অভিযোগে কারাগারে পাঠানো হয়েছিল, যা প্রকাশ্যে আসেনি। এই ব্যাপারে বিদেশ মন্ত্রক বলেছে, ‘আমরা মৃত্যুদণ্ডের রায়ে গভীরভাবে মর্মাহত। বিস্তারিত রায়ের জন্য অপেক্ষা করছি। আমরা পরিবারের সদস্যদের এবং আইনি বিশেষজ্ঞদের সঙ্গেও কথা বলছি। আমরা সমস্ত আইনি বিকল্পগুলি সন্ধান করছি।’ এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে একথা জানিয়েছে বিদেশ মন্ত্রক।

কাতারে ভারতীয় নৌবাহিনীর আট প্রাক্তন কর্মীর বিচারে করা স্বচ্ছতার অভাব নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে মিতু ভার্গব। যিনি কমান্ডার পূর্ণেন্দু তিওয়ারির (অবসরপ্রাপ্ত) বোন। তিনি দ্য ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসকে রবিবার , 'সময়ের অভাব উল্লেখ করে আট ভারতীয় সেনা আধিকারিকে ফিরিয়ে আনতে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর "ব্যক্তিগত হস্তক্ষেপের' দাবি করেন। ।

তিনি বলেন, ভারতীয় প্রক্তন আট সেনা কর্মীর পরিবার বৃহস্পতিবার নৌবাহিনী প্রধানের সঙ্গে দেখা করেছে এবং শীঘ্রই বিদেশ মন্ত্রী এস জয়শঙ্করের সাথে দেখা করার সম্ভাবনা রয়েছে বলেও জানিয়েছেন তিনি। গোয়ালিয়রের বাসিন্দা ভার্গব গত বছরের অক্টোবরে আট নৌসেনার মুক্তির জন্য কেন্দ্রের সাহায্য চাইতে এগিয়ে আসেন। এক বছর পরে, তিনি এখন মনে করেন এবার প্রধানমন্ত্রীর ব্যক্তিগতভাবে পদক্ষেপ নেওয়ার সময় এসেছে।

দ্য ইণ্ডিয়ান এক্সপ্রেসের সঙ্গে কথা বলার সময় ভার্গব বলেন, “আমরা এর আগে প্রতিরক্ষামন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করেছি। গত বছর, সংসদে জয়শঙ্কর জি বলেছিলেন যে এটি একটি সংবেদনশীল বিষয় এবং তাদের মুক্তি আমাদের অগ্রাধিকার। কিন্তু এখন আমাদের হাতে বেশি সময় নেই। আমরা আমাদের প্রধানমন্ত্রীর কাছে আমাদের আট প্রবীণ সেনাকে ফিরিয়ে আনার জন্য তাঁর ব্যক্তিগত হস্তক্ষেপের জন্য অনুরোধ ও করছি"। তিনি আরও বলেন, “কাতারের সঙ্গে ভারতের একটি বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক রয়েছে। মোদীর এবিষয়ে অবশ্যই হস্তক্ষেপের সময় এসেছে। আমরা আমাদের আট নৌসেনা কর্মীকে ফেরত চাই"। পাশাপাশি ভার্গব বলেন, “আমার ভাই একজন সিনিয়র সিটিজেন। তার বয়স ৬৩ বছর। তিনি ২০১৯ সালে প্রবাসী ভারতীয় সম্মানে ভূষিত হন। কেন তিনি ইসরায়েলের জন্য গুপ্তচরবৃত্তি করবেন?"

গোটা পরিস্থিতির ওপর নজর রাখছে বিদেশমন্ত্রক। এই ব্যাপারে বিদেশ মন্ত্রক বিবৃতিতে বলেছে, ‘আমরা এই মামলাটিকে অত্যন্ত গুরুত্ব দিচ্ছি। গোটা পরিস্থিতির ওপর নজর রাখছি। আমরা সমস্ত কূটনৈতিক এবং আইনি সহায়তা অব্যাহত রাখব। আমরা কাতারি কর্তৃপক্ষের সঙ্গেও কথা বলব। মামলা প্রক্রিয়ার গোপনীয়তার কারণে, এই সন্ধিক্ষণে আর কোনও মন্তব্য করা উপযুক্ত হবে না।’ ওই নৌ সেনাকর্মীদের বিচারের প্রথম শুনানি ২৯ মার্চ অনুষ্ঠিত হয়। নৌবাহিনীর ওই প্রাক্তন আধিকারিকদের বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ নিয়ে ব্যাপক জল্পনা-কল্পনা ছড়িয়ে পড়ে। তার পর ওই নৌ আধিকারিকদের পারিবারিক সূত্র জানায়, কাতারি কর্তৃপক্ষের পক্ষ থেকে কোন আনুষ্ঠানিক অভিযোগে বিচার হচ্ছে, সেই বিষয়ে তাঁদের জানানো হয়নি। অথবা, ভারতীয় কর্তারা, যাঁরা বন্দিদের সঙ্গে কূটনৈতিক যোগাযোগ রাখছিলেন, তাঁরাও কিছু জানাননি।

এর আগে গত ৬ এপ্রিল, বিদেশ মন্ত্রক বলেছিল যে ভারত সরকার ধৃত প্রাক্তন নৌসেনা আধিকারিকদের আইনি সহায়তা দেবে। গত বছরের ৩০ আগস্ট রাতে কাতারের গোয়েন্দা সংস্থা স্টেট সিকিউরিটি ব্যুরো ওই প্রাক্তন ভারতীয় নৌসেনা আধিকারিকদের ধরে নিয়ে যায়। ভারতীয় দূতাবাস সেপ্টেম্বরের মাঝামাঝি প্রথমে ওই নৌসেনা আধিকারিকদের গ্রেফতারের কথা জানতে পারে। ৩০ সেপ্টেম্বর, ধৃতদের পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে, ‘টেলিফোনে সংক্ষিপ্ত যোগাযোগ’ করার অনুমতি দেওয়া হয়েছিল।

সেটাও কার্যকর হয় ৩ অক্টোবরের পরে। পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে সাপ্তাহিক ফোন কলের মাধ্যমে যোগাযোগ করার অনুমতি দেওয়া হয়েছিল। ওই প্রাক্তন নৌসেনা আধিকারিকদের পুরুষদের নির্জন কারাগারে রাখা হয়েছিল। তাঁদের বিরুদ্ধে অভিযোগের কোনও প্রকাশ্য তথ্য নেই। ধৃত প্রাক্তন নৌসেনা আধিকারিকদের পরিবার তাঁদের দ্রুত মুক্তি নিশ্চিত করার জন্য বিদেশ মন্ত্রকের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন। যে আট প্রাক্তন নৌসেনা আধিকারিককে গ্রেফতার করা হয়েছে, তাঁরা হলেন- প্রবীণ – ক্যাপ্টেন নভতেজ সিং গিল, ক্যাপ্টেন সৌরভ বশিষ্ট, কমান্ডার পুর্ণেন্দু তিওয়ারি, ক্যাপ্টেন বীরেন্দ্রকুমার ভার্মা, কমান্ডার সুগুনাকর পাকালা, কমান্ডার সঞ্জীব গুপ্ত, কমান্ডার অমিত নাগপাল ও নাবিক রাগেশ। তাঁরা দাহরা গ্লোবাল টেকনোলজিস অ্যান্ড কনসার্ট সার্ভিসেসে কাজ করছিলেন। এই সংস্থা ছিল একজন ওমানি নাগরিকের মালিকানাধীন সার্ভিস প্রোভাইডার কোম্পানি। সংস্থাটির মালিক রয়্যাল ওমানি এয়ার ফোর্সের একজন অবসরপ্রাপ্ত স্কোয়াড্রন লিডার। তিনিও আট ভারতীয়ের সঙ্গে গ্রেফতার হয়েছিলেন। গত নভেম্বরে তিনি মুক্তি পান।

Quarter India Indian Navy
Advertisment