দেরিতে হলেও টনক নড়েছে জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের। ২০০২-এর গুজরাত দাঙ্গার সময় বিলকিস বানোকে গণধর্ষণ ও তাঁর পরিবারের সদস্যদের খুনের দায়ে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডপ্রাপ্ত ১১ আসামিকে গোধরা সাব-জেল থেকে মুক্তি দেওয়া হয়েছে। যা নিয়ে বিজেপিকে তুলোধনা করে সুর চড়াচ্ছে বিরোধীরা। সমাজের বিভিন্ন মহল থেকে বিজেপি নেতৃত্বাধীন গুজরাত সরকারের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন উঠছে।
সানডে এক্সপ্রেস জেনেছে, এই বিষয়টি নিয়েই সোমবার জরুরি আলোচনায় বসছে জাতীয় মানবাধিকার কমিশন (NHRC)। জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের চেয়ারপার্সন বিচারপতি অরুণ মিশ্র তাঁদের আলোচনায় বসার বিষয়টি মেনে নিয়েছেন।
গুজরাতে গর্ভবতী বিলকিস বানোকে গণধর্ষণ করা হয়েছিল। তাঁর তিন বছরের মেয়ে সালেহাকেও খুন করা হয়েছিল। ২০০২-এর ৩ মার্চ গোধরায় সবরমতী এক্সপ্রেসে আগুন লাগানোর পর গুজরাতজুড়ে সাম্প্রদায়িক হিংসা ছড়িয়ে পড়েছিল। সেই সময়ে দাহোদে উন্মত্ত জনতার হাতে ১৪ জনের মৃত্যু হয়েছিল। সবরমতী এক্সপ্রেসে হামলার জেরে ৫৯ যাত্রী নিহত হয়েছিলেন, যাঁদের মধ্যে অধিকাংশই ছিলেন করসেবক।
বিলকিস বানোর মামলাটি গুজরাত পুলিশ বন্ধই করে দিয়েছিল। তবে ২০০৩ সালে বিলকিসের পাশে দাঁড়ায় জাতীয় মানবাধিকার কমিশন। তাঁরাই পরে বানোকে সুপ্রিম কোর্টে যাওয়ার জন্য আইনি সহায়তাও দিয়েছিল। এমনকী প্রাক্তন প্রধান বিচারপতি জে এস ভার্মার অধীনে মানবাধিকার সংস্থাটি ২০০২-এর মার্চে গোধরার একটি ত্রাণ শিবিরে গিয়ে বানোর সঙ্গে দেখাও করেছিল। NHRC-এর সিনিয়র আইনজীবী এবং প্রাক্তন সলিসিটর জেনারেল হরিশ সালভেকে সুপ্রিম কোর্টে বানোর হয়ে সওয়াল করার জন্য নিয়োগ করা হয়েছিল।
আরও পড়ুন- অধিকারের জন্য আদালতের রায়ই যথেষ্ট নয়, সোচ্চার হওয়াও জরুরি, মত বিচারপতি চন্দ্রচূড়ের
সালভে সেই সময়ে একটি নতুন মামলা শুরুর আর্জি জানিয়েছিলেন। মামলাটি যাতে সিবিআই গুজরাত থেকে সরিয়ে মুম্বইয়ে নিয়ে যায় সেব্যাপারেও আর্জি জানিয়েছিলেন তিনি। বানোর মামলাটি ছিল একমাত্র গুজরাত দাঙ্গা-সংক্রান্ত মামলা।
উল্লেখ্য, মানবাধিকার লঙ্খন সংক্রান্ত যে কোনও বিষয়ে স্বতঃপ্রণোদিত হয়ে বা অভিযোগ পাওয়ার পরে হস্তক্ষেপের ক্ষমতা রয়েছে NHRC-এর। এমনকী এই সংস্থা মনে করলে রাজ্য সরকারের কাছ থেকে একটি প্রতিবেদনও তলব করতে পারে। আদালতের সামনে সরকারের সিদ্ধান্তকে চ্যালেঞ্জ করে আক্রান্তের জন্য আইনি ও আর্থিক সহায়তাও নিশ্চিত করতে পারে।