শনিবার পশ্চিম আফগানিস্তানে ভূমিকম্পে অন্তত ১৫ জন নিহত ও ৪০ জন আহত হয়েছেন। সংবাদ সংস্থা রয়টার্সকে এমনটাই জানিয়েছে আফগানিস্তানের দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষ। আফগানিস্তানের দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা মন্ত্রকের মুখপাত্র মোল্লা জান সায়েক বলেছেন, হেরাট প্রদেশের জিন্দা জান জেলার প্রাথমিক রিপোর্টের ভিত্তিতে এই পরিসংখ্যানগুলো তৈরি করা হয়েছে। হেরাট শহরের বাসিন্দা আবদুল শাকোর সামাদি বার্তা সংস্থা অ্যাসোসিয়েটেড প্রেসকে বলেছেন, দুপুরের দিকে শহরে অন্তত পাঁচটি শক্তিশালী ভূমিকম্প আঘাত হেনেছে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ভূতাত্ত্বিক সমীক্ষক সংস্থা জানিয়েছে, শনিবার পশ্চিম আফগানিস্তানে ৬.৩ মাত্রার একজোড়া ভূমিকম্প আঘাত হেনেছে। ভূমিকম্পের কেন্দ্র ছিল হেরাট শহরের ৪০ কিলোমিটার (২৪.৮ মাইল) উত্তর-পশ্চিমে। এর পরে ৫.৫ মাত্রার একটি আফটারশক অনুভূত হয়েছে বলেই জানিয়েছে ইউএসজিএস।
ইউএসজিএস ওয়েবসাইটে পোস্ট করা একটি মানচিত্র এই অঞ্চলে সাতটি ভূমিকম্প চিহ্নিত করেছে। যার মধ্যে একটি ৫.৯ মাত্রার ভূমিকম্পও রয়েছে। কম্পনের উৎসস্থল হেরাটের ৩৫ কিলোমিটার (২১.৭ মাইল) উত্তর এবং উত্তর-পশ্চিমে। একটি ৬.৩ মাত্রার ভূমিকম্প ৩৩ কিলোমিটার (২০.৫ মাইল) উত্তর এবং উত্তর-পূর্বে। ৬.৩ মাত্রার ভূমিকম্প ২৯ কিলোমিটার (১৮ মাইল) উত্তর-উত্তর-পূর্ব জিন্দাহ জান, যা হেরাত শহর থেকে প্রায় ৪৩ কিলোমিটার (২৬ মাইল) পশ্চিমে অনুভূত হয়েছে। সামাদি বলেন,'এই সব কম্পনের পর বিভিন্ন বাড়ির মানুষজন ভয়ে রাস্তায় বেরিয়ে আসেন। বাড়ি, অফিস এবং দোকান সব খালি হয়ে যায়। আরও ভূমিকম্পের আশঙ্কা রয়েছে বলেই প্রশাসন জানিয়েছে।'
আরও পড়ুন- শক্তিধর ইজরায়েলে হামলা চালিয়ে তছনছ করেছে, গাজার শাসক, কী এই হামাস?
সামাদি বলেন, 'আমি এবং আমার পরিবারের লোকজন বাড়ির ভিতরে ছিল। আমি ভূমিকম্প অনুভব করেছি। পরিবারের লোকজন কম্পনের পরই চিৎকার করতে শুরু করে এবং বাইরে দৌড়ে যায়। বেশ কিছুক্ষণ বাড়ির ভিতরে ঢুকতে সাহস পায়নি। সম্ভাব্য হতাহত বা ক্ষয়ক্ষতির ব্যাপারে তালিবান কর্তৃপক্ষ কোনও মন্তব্য করেনি। টেলিফোন সংযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। যার ফলে ক্ষতিগ্রস্ত এলাকা থেকে সঠিক বিবরণ পেতেও অসুবিধা হচ্ছে। সোশ্যাল মিডিয়ায় প্রকাশিত ভিডিওতে দেখা গেছে, শত শত লোককে হেরাট শহরে তাঁদের বাড়ি আর অফিস ছেড়ে রাস্তায় বেরিয়ে আসতে।
হেরাট প্রদেশ ইরানের সীমান্তবর্তী। স্থানীয় সংবাদমাধ্যমের খবর অনুযায়ী, ফারাহ এবং বাদঘিস প্রদেশেও ভূমিকম্প অনুভূত হয়েছে। ২০২২ সালের জুনে, এমনই এক শক্তিশালী ভূমিকম্পে পূর্ব আফগানিস্তানের একটি রুক্ষ, পার্বত্য অঞ্চলে, পাথর এবং কাদা-ইটের বাড়িগুলো ভেঙে পড়েছিল। ভূমিকম্পটি দুই দশকের মধ্যে আফগানিস্তানের সবচেয়ে বেশি ক্ষতি করেছে। সেই ভূমিকম্পে কমপক্ষে ১,০০০ মানুষ মারা গিয়েছেন। আহত হয়েছেন ১,৫০০ জনেরও বেশি।