আগে তাঁকে অনেকে বলতেন বারদীর ব্রহ্মচারী। এখন অবশ্য তিনি আপামর ভক্তদের কাছে শুধুই লোকনাথ বাবা। যাঁকে রণে-বনে-জলে-জঙ্গলে বিপদে স্মরণ করেন ভক্তরা। ১৯ জ্যৈষ্ঠ, শুক্রবার তাঁর তিরোধান দিবস। ১৮৯০ সালের (১২৯৭ বঙ্গাব্দের, ১৯ জ্যৈষ্ঠ) ১ জুন তিনি দেহত্যাগ করেন। এবার অবশ্য ১৯ জ্যৈষ্ঠ পড়েছে শুক্রবার (৩ জুন)।
লোকনাথ বাবার অলৌকিক মাহাত্ম্য নিয়ে কাহিনির শেষ নেই। তিনি নাকি ছিলেন স্বয়ং শিব। অসংখ্য মানুষের নানা অভীষ্ট তিনি পূরণ করেছেন বলে কথিত আছে। কেউ মোকদ্দমায় বিপদে পড়েছেন। অথবা কেউ রোগে ভুগছেন। সব শ্রেণির মানুষের কাছে তিনিই ছিলেন ভরসা। তাঁরা বাংলাদেশের সোনারগাঁওয়ের বারদীতে বাবার আশ্রমে আসতেন। ফিরে যেতেন ভয়হীন ভাবে।
লোকনাথ বাবা ভক্তদের শিখিয়েছিলেন, প্রতিদিন রাতে শুতে যাবার সময় সারাদিনের কাজের হিসেব-নিকেশ করতে। মানে, ডায়েরি মেনটেন করতে। সেখান থেকে যেসব জিনিস খারাপ বিবেচিত হবে, সেদিকে খেয়াল রাখতে। যাতে, সেসব কাজ আর ফের না-হয়। ভক্তদের একাংশের মতে, তিনি ১৫০ বছরেরও বেশি বেঁচেছিলেন।
এক ব্যক্তি ছেলের যক্ষ্মা সারানোর জন্য তাঁর দ্বারস্থ হয়েছিলেন। সেই ছেলের যক্ষ্মা লোকনাথ বাবা নিজের শরীরে ধারণ করেছিলেন। সেই ছেলেটির যক্ষ্মা সেরে গেলেও, লোকনাথ বাবার শরীরে যক্ষ্মা ছড়িয়ে পড়ে। কবে তিনি দেহত্যাগ করবেন, সেই কথাও আগে থেকেই ভক্তদের জানিয়ে দিয়েছিলেন লোকনাথ বাবা।
আরও পড়ুন- হার্ট ফেলিওর আর হার্ট অ্যাটাক কি এক জিনিস? ভুল ধারণাগুলি দূর করুন
লোকনাথ বাবার জন্ম হয়েছিল ১৭৩০ সালের (১১৩৭ বঙ্গাব্দের ১৮ ভাদ্র) ৩১ আগস্ট। উত্তর ২৪ পরগনার কচুয়ায় জন্মাষ্টমীর দিন তিন জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর বাবার নাম ছিল রামনারায়ণ ঘোষাল। আর, মায়ের নাম কমলাদেবী। লোকনাথ বাবা ছিলেন তাঁর বাবা-মায়ের চতুর্থ সন্তান। তাঁর প্রধান ভোগ হল মিছরি ও মাখন।
কথিত আছে তিনি মক্কা, মদিনা, আফগানিস্তান থেকে শুরু করে বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তে ভ্রমণ করেছেন। তৈলঙ্গস্বামীর থেকে তিনি যোগশিক্ষা করেছেন। দীর্ঘদিন লোকনাথ বাবার সঙ্গে ছিলেন তাঁর বাল্যবন্ধু বেণীমাধব। আজও এপার এবং ওপার বাংলার মানুষ শ্রদ্ধার সঙ্গে লোকনাথ বাবার তিরোধান দিবস পালন করেন।