তাঁর 'জাগ্রত ভোলানাথ'-এর দর্শন করতে এই মন্দিরে ছুটে আসতেন শ্রীরামকৃষ্ণ

আজও এই মন্দিরে নিয়মিত পুজো দিতে আসেন বেলুড় মঠের স্বামীজিরা।

আজও এই মন্দিরে নিয়মিত পুজো দিতে আসেন বেলুড় মঠের স্বামীজিরা।

author-image
IE Bangla Web Desk
New Update
BALLY kALYANESHWAR TEMPLE

স্বয়ং শ্রীরামকৃষ্ণ বলতেন, এই মন্দিরে রয়েছেন 'জাগ্রত ভোলানাথ'। আর, সেই ভোলানাথের দর্শন করতে তিনি ছুটে আসতেন এখানে। তাঁর প্রধান শিষ্যরাও তাঁকে অনুসরণ করেছেন। স্বামী বিবেকানন্দ থেকে স্বামী ব্রহ্মানন্দরা ছুটে এসেছেন। দর্শন করেছেন 'জাগ্রত ভোলানাথ' আর কষ্টিপাথরের দেবী সিদ্ধেশ্বরীকে। গুরুর দেখানো পথেই 'জাগ্রত ভোলানাথ'-এর কাছে প্রার্থনা করেছেন। সেই রীতি আজও বজায় রেখেছে বেলুড় মঠ। প্রথা মেনে বেলুড় মঠ থেকে স্বামাজিরা আজও আসেন এই মন্দিরে পুজো দিতে।

Advertisment

শুধু তাঁরাই নন। যাঁরা জানেন, 'জাগ্রত ভোলানাথ' দর্শন করতে দূর-দূরান্ত থেকে আসেন এই মন্দিরে। পুজো দেন সাধ্যমতো। যার কারণে, শিবরাত্রি থেকে শুরু করে নীলষষ্ঠী, চড়ক- এই মন্দিরে অসংখ্য ভক্ত সমাগম হয়। আর, এসবের দৌলতেই হাওড়ার বালির কল্যাণেশ্বর মন্দির হয়ে উঠেছে এক দর্শনীয় স্থান। যার একপাশে বেলুড় মঠ। অন্যপাশে দক্ষিণেশ্বর। তারই মধ্যে, এই মন্দিরের গা ঘেঁষে কুলকুল শব্দে বয়ে চলেছে পুণ্যতোয়া গঙ্গা। স্থানীয়দের অনেকে যাকে ডাকেন হুগলি নদী নামে।

ভক্তদের দাবি, এই মন্দির অতি প্রাচীন। তৈরি হয়েছিল প্রায় ছশো বছর আগে। সেই সময় বালি ছিল জঙ্গলে ভরা এক এলাকা। তৎকালীন জমিদার দয়ারাম বোস স্বপ্নাদেশ পেয়ে স্থাপন করেছিলেন এই শিবমন্দির। চার ব্রাহ্মণ পরিবারকে এই মন্দিরের সেবাইতের দায়িত্ব দিয়ে তিনি নিযুক্তও করেছিলেন। বংশপরম্পরায় তাঁরাই রয়ে গিয়েছেন এই মন্দিরের সেবাকার্যের দায়িত্বে।

আরও পড়ুন- জলপাইগুড়ির জাগ্রত ভদ্রকালী মন্দির, মঙ্গলময়ী দেবী পূর্ণ করেন মনস্কামনা

Advertisment

তবে, দূর-দূরান্তের ভক্তরা যা জানেন, আশপাশের জেলার এমন অনেকেই আছেন- যাঁরা এই মন্দিরের খবরটুকুও পর্যন্ত রাখেন না। অবশ্য এটাই মানুষের স্বভাব। কাছের কিছু ফেলে দূরের দিকে ছুটে যাওয়া। যা দেখে কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের 'একটি শিশির বিন্দু'র ভাষায় বলতে হয়, 'বহু দিন ধরে' বহু ক্রোশ দূরে বহু ব্যয় করি, বহু দেশ ঘুরে দেখিতে গিয়েছি পর্বতমালা দেখিতে গিয়েছি সিন্ধু। দেখা হয় নাই চক্ষু মেলিয়া ঘর হতে শুধু দুই পা ফেলিয়া একটি ধানের শিষের উপরে একটি শিশিরবিন্দু।।'