ভবানীপুরের উপনির্বাচনে তৃণমূল প্রার্থীর মুখে ঘুরে ফিরে সেই নন্দীগ্রাম প্রসঙ্গ। শুক্রবার শম্ভূনাথ বাজার এলাকায় প্রচারসভা করেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সেখানেই নন্দীগ্রামে বিজেপি কী কায়দায় ভোট করিয়ে জয় হাসিল করেছে তার নমুনা তুলে ধরেন। এক কথায় সেই ব্যাখ্যা ভয়ঙ্কর।
তৃণমূল নেত্রীর কথায়, 'অনেক ঝুঁকি নিয়ে ভবানীপুর ছেড়ে নন্দীগ্রাম থেকে লড়াই করেছি। কারণ আমি কৃষকদের ভালোবাসি। কিন্তু দেখলাম এজেন্সি আর অস্ত্র নিয়ে নন্দীগ্রামে ভোট প্রভাবিত করেছে বিজেপি। আমি এতদিন রাজনীতি করছি, তবে এ জিনিস কোনওদিন দেখিনি।'
একই সঙ্গে তাঁর অভিযোগ, 'নন্দীগ্রামে একাধিক বুথে ভোটে কারচুপি হয়েছে। একটি বুথে যত ভোট পড়েছিল, তা কমিয়ে-বাড়িয়ে দেখানো হয়েছে। যার নজির রয়েছে একাধিক।' তাঁর কথায় কারচুপির অভিযোগের প্রমাণ রয়েছে বলেই নন্দীগ্রামের ফলাফলকে চ্যালেঞ্জ করে মামলা গ্রহণ করেছে কলকাতা হাইকোর্ট।
আরও পড়ুন- ‘তুম তো ঠ্যায়রে পরদেশি’, প্রচারে বিজেপির সম্বিতকে দেখেই কটাক্ষ তৃণমূলের
মাথা নত করবেন না বলেই বিজেপি ও কেন্দ্রের নিশানায় তিনি ও তৃণমূল বলে দাবি করেছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বলেছেন, 'ভোটের সময় বিজেপি পরিকল্পনা করেই আমায় আঘাত করেছিল। ওরা জানত যে সবাই মাথা নোয়ালেও মমতা মাথা নত করবে না। ফলে আমাকে আটকানো যাবে না। প্রধানমন্ত্রী থেকে চুনোপটি মন্ত্রীরা এলেও বাংলার মানুষ বিজেপিকে প্রত্যাখ্যান করেছে।'
কেন্দ্রীয় এজেন্সিকে কেন্দ্রীয় শাসক দল রাজনৈতিক স্বার্থে ব্যবহার করছে বলে বিগত কয়েক বছর ধরেই সরব বিরোধী দলগুলি। ভবানীপুর উপনির্বাচনের প্রচারেও বিজেপির বিরুদ্ধে একই অভিযোগ করলেন তৃণমূল প্রার্থী। প্রশ্ন তুললেন, কেন সিপিএমের আমলে কোনও দুর্নীতির তদন্ত কেন্দ্রীয় এজেন্সি মারফত হবে না? মমতা বন্দ্যোপাধ্যারে কথায়, 'সিপিআইএমের ৩৪ বছর রাজ্য চালিয়েছে। কিন্তু ওদের বিরুদ্ধে একটা সিবিআই-ইডি হয়েছে? কংগ্রেসের চিদম্বরমজিকে পর্যন্ত গ্রেফতার করেছে। তবে, ওদের পার্টির মাথাদের গায়ে হাত পড়েনি। কিন্তু, আমাদের পার্টির সবাইকে কেস দিয়েছে। কাউকে বাদ দেয়নি। যে পার্টি সবচেয়ে নির্ভীক, সৎ, সেই পার্টির সদস্যদের গায়েই হাতে দিয়েছে। এমনকী, পার্থ চট্টোপাধ্যায়, সৌগত রায়ের মতো মানুষকেও বাদ দিচ্ছে না।'
পেগাসাস, দিল্লি হাইকোর্টে দুষ্কৃতীতাণ্ডব, অসমে পুলিশ বিক্ষোভকারী সংঘর্ষ নিয়েও এদিন বিজেপিকে কড়া তোপ দেগেছেন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী। তবে, জানান, বিজেপি বাংলার উন্নয়ন রুখতে পারবে না। মমতার ঘোষণা, 'রাজ্যের সরকারের আগামী টার্গেট হল বাংলাকে বাণিজ্যিক ডেস্টিনেশন হিসেবে গড়ে তোলা। গতবছর না হলেও এ বছর কোভিড বিধি মেনে হবে গ্লোবাল বিজনেস সামিট।'
ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা এখন টেলিগ্রামে, পড়তে থাকুন