কেন্দ্রীয় মন্ত্রী জ্যোতিরাদিত্য সিন্ধিয়া ২১ অক্টোবর গোয়ালিয়রের সিন্ধিয়া স্কুলের ১২৫তম প্রতিষ্ঠাদিবস উদযাপন অনুষ্ঠানে মনোযোগ আকর্ষণের কেন্দ্রবিন্দু ছিলেন। সেখানে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীও উপস্থিত ছিলেন। এই অনুষ্ঠানে ভাষণ দেওয়ার সময়, প্রধানমন্ত্রী মোদী তাঁর বক্তৃতার একটি অংশে সিন্ধিয়ার প্রশংসা করেন। তিনি জ্যোতিরাদিত্য সিন্ধিয়াকে 'গুজরাট কা দমাদ (জামাই)' বলে অভিহিত করেন। গোয়ালিয়র রাজপরিবারের বংশধর পরে নাচেও তাঁর কৃতিত্ব দেখান। মঞ্চে উঠে তিনি ছাত্রদের সঙ্গে নেচেছেন।
আরও পড়ুন- আইনের মাত্রতিরিক্ত প্রয়োগ, আদালতে সমালোচনার মুখে তেলেঙ্গানা সরকার, প্রতিরোধমূলক আটক কী?
ক্ষমতাসীন বিজেপি ইতিমধ্যেই ১৭ নভেম্বর হতে চলা বিধানসভা নির্বাচনের পঞ্চম প্রার্থীতালিকা প্রকাশ করেছে। সেখানে সিন্ধিয়ার বেশিরভাগ বিশিষ্ট অনুগতদের নাম রয়েছে।কয়েক মাস ধরেই সিন্ধিয়া শিবির রাজ্য বিজেপির গোষ্ঠীকোন্দলকে ঘিরে অন্তর্দ্বন্দ্বে ভুগছিল। জ্যোতিরাদিত্যর অনুগত নেতাদের মধ্যে বেশ কিছু বিধায়ক, যাঁরা ২০২০ সালের প্রথম দিকে কংগ্রেস থেকে বিজেপিতে তাঁর সঙ্গে এসেছিলেন, তাঁদের সঙ্গে বিজেপির পুরোনো নেতাদের মতানৈক্য চলছে। তাঁরা কমলনাথ সরকারের পতন ঘটিয়ে সিন্ধিয়াদের বিজেপিতে আসা পছন্দ করছিলেন না।
এর জেরে সাম্প্রতিক মাসগুলোতে, জ্যোতিরাদিত্য সিন্ধিয়ার ঘনিষ্ঠ বেশ কয়েকজন নেতা তাঁদের সমর্থকদের নিয়ে কংগ্রেসে ফিরেছেন। এমনকী মধ্যপ্রদেশের রাজনৈতিক মহলেও জল্পনা চলছিল যে, বিজেপি প্রবীণদের সন্তুষ্ট করতে তাঁদেরকেই বিধানসভা নির্বাচনের টিকিট দেবে। মধ্যপ্রদেশ বিধানসভায় মোট আসনসংখ্যা ২৩০। প্রধান প্রতিপক্ষ বিজেপি এবং কংগ্রেস ইতিমধ্যে এই সমস্ত আসনে তাদের প্রার্থীর নাম ঘোষণা করেছে। আর, তাতেই দেখা যাচ্ছে, সিন্ধিয়ার অনুগতদের টিকিট দেওয়া হয়েছে। যা দেখে সিন্ধিয়া অনুগতরা বলছেন, 'মহারাজ কা চল গয়া'।
সিন্ধিয়ার ২৫ জন মূল অনুগত নেতা যাঁরা তাঁকে অনুসরণ করে কংগ্রেস থেকে বিজেপিতে এসেছিলেন, তাঁদের মধ্যে ১৮ জন বর্তমান বিধায়ক। তাঁদেরকে ফের টিকিট দিয়েছে গেরুয়া শিবির। এই তালিকায় রয়েছেন মধ্যপ্রদেশের ১০ জন বর্তমান মন্ত্রীও। তাঁরা হলেন প্রদ্যুমন সিং তোমর (গোয়ালিয়র), জলসম্পদমন্ত্রী তুলসি সিলাভাত (সানওয়ার, ইন্দোর), শিল্পনীতি ও বিনিয়োগ প্রচারমন্ত্রী রাজ্যবর্ধন সিং দত্তিগোয়ান (বদনাওয়ার, ধর), জনস্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণমন্ত্রী প্রভুরাম চৌধুরি (সাঁচি, রাইসেন), রাজস্বমন্ত্রী গোবিন্দ সিং রাজপুত (সুরখী, সাগর), খাদ্যমন্ত্রী বিসাহুলাল সিং (অনুপপুর), পরিবেশমন্ত্রী হরদীপ সিং ডাং (সুওয়াসরা, মানসৌর), পঞ্চায়েত ও গ্রামীণ উন্নয়নমন্ত্রী মহেন্দ্র সিং সিসোদিয়া (বামোরি, গুনা), এমপি স্টেট সিভিল সাপ্লাই কর্পোরেশনের চেয়ারম্যান প্রদ্যুমন সিং লোধি (মালহারা, ছাতারপুর) এবং রাজ্যের পূর্তমন্ত্রী সুরেশ ধাকড় (পোহারি, শিবপুরী)। পাঁচ জন বর্তমান সিন্ধিয়া অনুগত বিধায়কও আবার বিজেপির প্রার্থী হয়েছেন। তাঁরা হলেন, জয়পাল সিং জাজ্জি (অশোক নগর), কমলেশ জাটভ (আম্বা, মোরেনা), ব্রজেন্দ্র সিং যাদব (মুঙ্গাওলি, অশোক নগর), মনোজ চৌধুরি (হাটপিপলিয়া, দেওয়াস), এবং নারায়ণ প্যাটেল (মান্ধাতা, নিমাদ)। বিজেপি নেতৃত্ব এমনকী সিন্ধিয়ার অনুগতদের মধ্যে তিন জনকে এমন নেতাকে পুনরায় মনোনয়নপত্র দিয়েছেন, যাঁরা ২০২০ সালের দলত্যাগের পরে উপনির্বাচনে হেরেছিলেন। তাঁদের মধ্যে রয়েছেন প্রাক্তন মহিলা ও শিশু উন্নয়নমন্ত্রী ইমারতি দেবী (ডাবরা, গোয়ালিয়র), আইদাল সিং কানসানা (সুমাওয়ালি, মোরেনা) এবং রঘুরাজ সিং কানসানা (মোরেনা)।