বিদ্রোহী শিবসেনা বিধায়কদের হুমকি মহারাষ্ট্রে উদ্ধব ঠাকরে সরকারের ক্ষমতাচ্যুত হওয়ার কারণ হতে পারে না। এমনটাই জানিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট। এই ক্ষেত্রে রাজ্যপালের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে আদালত। কীসের ভিত্তিতে তৎকালীন রাজ্যপাল ভগৎ সিং কোশিয়ারি মহারাষ্ট্রে আস্থাভোটের নির্দেশ দিয়েছিলেন, তা নিয়ে খোঁজ নেওয়ার পরই সুপ্রিম কোর্ট তার মত প্রকাশ করেছে।
এই প্রসঙ্গে শীর্ষ আদালতের প্রধান বিচারপতি ডিওয়াই চন্দ্রচূড় বলেছেন, একটা নির্বাচিত সরকারকে ফেলে দেওয়ার কাজে অংশ নেবেন, এমন ব্যাপারে রাজ্যপালের ঢোকাই উচিত না। পাঁচ বিচারপতির সাংবিধানিক বেঞ্চের নেতৃত্বে সুপ্রিম কোর্টে এই মামলা চলছে। বেঞ্চের নেতৃত্বে আছেন প্রধান বিচারপতি ডিওয়াই চন্দ্রচূড়।
আদালতে রাজ্যপালের হয়ে সওয়াল করছেন সলিসিটর জেনারেল তুষার মেহতা। আদালতকে তিনি জানান, বিদ্রোহী বিধায়করা হুমকি দিয়েছিলেন। রাজ্যে যাতে স্থায়ী সরকার থাকে, সেই কথা মাথায় রেখে রাজ্যপাল তাই আস্থা ভোটের নির্দেশ দেন। পালটা প্রধান বিচারপতি বলেন, 'এটা তো কোনও একটা সরকারকে ক্ষমতাচ্যুত করার কারণ হতে পারে না। বড়জোর এফআইআরের ভিত্তিতে ১৫৬ (৩) ধারায় তদন্তের আদেশ দেওয়া যেতে পারত।'
বিচারপতি পরিষ্কার জানিয়ে দেন, কোনও একটি দলের গোলযোগ সেই দলের অভ্যন্তরীণ বিষয়। এর সঙ্গে তো রাজ্যপালের কোনও সম্পর্কই নেই। বিচারপতি বলেন, 'যখন সরকারের সংখ্যাগরিষ্ঠতা হারানোর মত কিছুই নেই, তখন রাজ্যপাল আস্থাভোট চাইতেই পারেন না। কোনও দলের নেতা কে হবেন, তা ঠিক করার জন্য আস্থাভোট নয়। যখন সরকারের সংখ্যাগরিষ্ঠতা নড়বড়ে, তখন আস্থাভোট চাওয়া যেতে পারে। এখানে তো সরকার নড়বড়ে থাকার কোনও ইঙ্গিতই ছিল না।'
আরও পড়ুন- অরুণাচলে ভেঙে পড়েছে চিতা কপ্টার, এই পুরোনো বিমান এখনও কেন ভারতীয় সেনায়?
বিচারপতি চন্দ্রচূড়ের নেতৃত্বাধীন এই সাংবিধানিক বেঞ্চে রয়েছেন বিচারপতি এমআর শাহ, বিচারপতি কৃষ্ণা মুরারী, বিচারপতি হিমা কোহলি, বিচারপতি পিএস নরসিমহা। সলিসিটর জেনারেল আদালতকে জানান, বিক্ষুব্ধ শিবসেনার বিধায়করা রাজ্যপালের কাছে চিঠি দিয়েছিলেন। জানিয়েছিলেন, তাঁদের জীবনের সংশয় রয়েছে। আর, তাঁরা এই দুর্নীতিগ্রস্ত সরকারের সঙ্গে থাকতে চান না।
মেহতা বলেন, 'বিদ্রোহীদের আশঙ্কা বিরোধী দলনেতার একটি চিঠিতে স্বীকৃতি পেয়েছে। শুধু তাই নয়, বিদ্রোহীরা কিছু ভিডিওর লিংকও দিয়েছিলেন। যাতে, প্রকাশ্যে হুমকিমূলক কথাবার্তা রয়েছে।' পালটা প্রধান বিচারপতি বলেন, 'সেটা তো আইন-শৃঙ্খলাজনিত সমস্যা।' তিনি প্রশ্ন তোলেন, এর সঙ্গে রাজ্যপালের আস্থাভোটের নির্দেশ দেওয়ার কী সম্পর্ক?