Advertisment

Sharad Pawar: অদৃশ্য শক্তিতেই 'পাওয়ারহীন' শরদ! সুপ্রিয়ার বড় দাবি, সংকট মোকাবিলা কোন পথে?

কমিশন শরদ পাওয়ারকে বলেছে যে তিনি তার নতুন দল গঠনের জন্য কমিশনকে যে কোনও তিনটি নাম তিনি জমা দিতে পারেন। এর জন্য কমিশন বুধবার বিকেল ৪টা পর্যন্ত সময় দিয়েছে শরদ পাওয়ার শিবিরকে।

author-image
IE Bangla Web Desk
New Update
sharad pawar

এনসিপি প্রধান শরদ পাওয়ার তাঁর নাতনি এবং দলের বিধায়ক রোহিত পাওয়ার এবং সাংসদ সুপ্রিয়া সুলের সাথে দলের সদর দফতরে। (পিটিআই ছবি)

লোকসভা নির্বাচনের আগেই ক্ষমতা হারালেন শরদ পাওয়ার। ছয় মাসেরও বেশি সময় ধরে শরদ পাওয়ার এবং অজিত গোষ্ঠীর মধ্যে যে উত্তেজনা চলছিল তা মঙ্গলবার নির্বাচন কমিশনের রায়ের পর তা নতুন মোড় নিয়েছে। কমিশন তার সিদ্ধান্তে অজিত শিবিরকেই আসল জাতীয়তাবাদী কংগ্রেস পার্টি (এনসিপি) হিসাবে মর্যাদা দিয়েছে।

Advertisment

কমিশন বলেছে যে প্রায় ছয় মাসে এই বিষয়ে ১০ টিরও বেশি শুনানির পরে, সমস্ত দিক বিবেচনা করে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে যে অজিত গোষ্ঠীই আসল এনসিপি। কমিশন তার সিদ্ধান্তে আরও বলেছে যে অজিত গোষ্ঠীর এনসিপির নাম এবং নির্বাচনী প্রতীক ব্যবহারের সম্পূর্ণ অধিকার রয়েছে। ।তবে, কমিশন শরদ পাওয়ারকে বলেছে যে তিনি তার নতুন দল গঠনের জন্য কমিশনকে যে কোনও তিনটি নাম তিনি জমা দিতে পারেন। এর জন্য কমিশন বুধবার বিকেল ৪টা পর্যন্ত সময় দিয়েছে শরদ পাওয়ার শিবিরকে।

শরদ পাওয়ার গোষ্ঠী নির্বাচন কমিশনের সিদ্ধান্তের সমালোচনা করে বলেছে যে তারা কমিশনের এই পদক্ষেপকে সুপ্রিম কোর্টে চ্যালেঞ্জ করবে। এনসিপির কার্যকরী সভাপতি সুপ্রিয়া সুলে বলেছেন যে এটি গণতন্ত্রের হত্যা, কারণ নির্বাচন কমিশন বিধায়কের সংখ্যার ভিত্তিতে তার সিদ্ধান্ত দিয়েছে, তবে এর পিছনে রয়েছে 'অদৃশ্য শক্তির' উপস্থিতি।

সুপ্রিয়া সুলে বলেন, 'নির্বাচন কমিশনের সিদ্ধান্তে আমরা মোটেও বিস্মিত নই। এটি অন্যায়ভাবে দলের রাশ প্রতিষ্ঠাতা শারদ পাওয়াররের থেকে কেড়ে নেওয়া হয়েছে। আমরা ন্যায়বিচার পেতে কমিশনের এই সিদ্ধান্তের প্রেক্ষিপ্তে পূর্ণ শক্তি দিয়ে সুপ্রিম কোর্টে চ্যালেঞ্জ করব'। মহারাষ্ট্র এনসিপি-এসপি সভাপতি জয়ন্ত পাটিল বলেছেন যে দল বুধবার সুপ্রিম কোর্টে নির্বাচন কমিশনের সিদ্ধান্তকে চ্যালেঞ্জ করবে।

শারদ পাওয়ার গোষ্ঠীর বিধায়ক এবং দলের জাতীয় সাধারণ সম্পাদক জিতেন্দ্র আওহাদ অজিত পাওয়ারকে নিজের দল গঠন করে নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার চ্যালেঞ্জ জানিয়েছেন। তিনি বলেছেন 'যদি সাহস থাকে তাহলের নিজের দল গঠন করে এনসিপির সঙ্গে সরাসরি লড়াই করুন অজিত'।

পাওয়ারের দলের একটি সূত্র জানিয়েছে যে নতুন দলের নামের যে ডেডলাইন দেওয়া হয়েছে তার মধ্যে কমিশনের কাছে নতুন নাম পেশ করা হবে। তাতে সম্ভবত "জাতীয়তাবাদী" এবং "কংগ্রেস" শব্দগুলি বজায় রাখা হবে। মহারাষ্ট্রের ছয়টি আসনে রাজ্যসভা নির্বাচন ২৭ ফেব্রুয়ারি।

লোকসভা নির্বাচনের তোলপাড় মহারাষ্ট্রের রাজনীতি। নির্বাচন কমিশন অজিত পাওয়ার গোষ্ঠীকে ‘আসল এনসিপি’ বলে ঘোষণা করেছে। অজিত পাওয়ার শিবির ইতিমধ্যেই দলের নাম ও নির্বাচনী প্রতীক পেয়েছেন। কমিশনের এই ঘোষণা অজিত পাওয়ারের জন্য বড় জয় এবং লোকসভা নির্বাচনের আগে শরদ পাওয়ারের কাছে এক বিশাল ধাক্কা বলেই মনে করছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা।

২রা জুলাই, ২০২৩-এ এনসিপিতে বিভাজন সামনে আসে। অজিত পাওয়ার তার শিবিরের বিধায়কদের নিয়ে মহারাষ্ট্রের এনডিএ- সরকারে যোগ দেন এবং মহারাষ্ট্রের উপমুখ্যমন্ত্রী হিসাবে কুর্সিতে বসেন। এনসিপি থেকে বেরিয়ে আসার পরই অজিত পাওয়ার এনসিপির উপর নিজের অধিকারের দাবি তুলেছিলেন। এরপর বিষয়টি নির্বাচন কমিশনের দ্বারস্থ হয়। উভয় শিবিরই নির্বাচন কমিশনের সামনে নিজ নিজ যুক্তি উপস্থাপন করেছে। এখন নির্বাচন কমিশন ‘আসল এনসিপি’ কে তা জানিয়ে দিয়েছে।

কমিশনের এই সিদ্ধান্ত ইন্ডিয়া জোটের জন্য বড় ধাক্কা। এখন দলের নতুন নাম ও প্রতীক নিয়ে ভাবতে হবে শরদ পাওয়ারকে। এর আগে মহারাষ্ট্রে শিবসেনার মধ্যে বিভাজন সামনে আসে। সেই ঘটনায় আসল শিবসেনা উদ্ধব ঠাকরের কাছ থেকে দলীয় নাম ও প্রতীক ছিনিয়ে নেন শিন্ডে শিবির।

কমিশনের সিদ্ধান্তের পর অজিত পাওয়ার বলেন, “দলের কিছু ঘটনার প্রেক্ষিপ্তে আমাদেরকে ন্যায়বিচারের জন্য নির্বাচন কমিশনের দ্বারস্থ হতে হয়। উভয় পক্ষই তাদের যুক্তি উপস্থাপন করেছিল, কিন্তু গণতন্ত্রে সংখ্যাগরিষ্ঠতাই শেষ কথা। অবশেষে, দলের নাম এবং প্রতীকের রায় আমাদের পক্ষে এসেছে । আমরা কমিশনকে ধন্যবাদ জানাই,”।

এনসিপি রাজ্য সভাপতি সাংসদ সুনীল তাটকরে কমিশনের এই সিদ্ধান্তকে “সত্যের জয়! গণতন্ত্রের জয়!” বলে উল্লেখ করেছেন। অন্যদিকে ‘পাওয়ার’ হাতছাড়া হতেই শরদ শিবিরের অন্যতম বড় মুখ অনিল দেশমুখ বলেছেন, ‘যা ঘটল, তা অত্যন্ত দুর্ভাগ্যজনক। এই সিদ্ধান্ত গণতন্ত্রের হত্যার সমান’।

Sharad Pawar
Advertisment