ফ্রান্স: ৩ (৩) (সেফেরোভিচ-২, গাভরানোভিচ)
সুইজারল্যান্ড: ৩ (৫) (বেনজেমা-২, পোগবা)
বিশ্বকাপে রানার্স ক্রোয়েশিয়া ছিটকে গিয়েছিল কিছুক্ষণ আগে। কয়েক ঘন্টা পরে আবার বিদায় ঘটল চ্যাম্পিয়ন ফ্রান্সের। সোমবার প্রথম ম্যাচের মতই ফ্রান্স-সুইজারল্যান্ড ম্যাচ চূড়ান্ত রোমাঞ্চ হাজির করল। যেখানে টাইব্রেকারে ফ্রান্সকে ছিটকে দিয়ে শেষ আটে উঠল সুইজারল্যান্ড। আর ফ্রান্সের পরাজয়ে জাতীয় ভিলেন হয়ে উঠলেন দলের একনম্বর তারকা কিলিয়ান এমবাপে। টাইব্রেকার মিস করে বসলেন যিনি মোক্ষম সময়ে।
নির্ধারিত সময়ে খেলার শেষে ৩-৩'এ অমীমাংসিত ছিল ফলাফল। তারপর অতিরিক্ত সময়ে খেলায় গোল না হওয়ায় টাইব্রেকারে গড়ায় ম্যাচ। যেখানে বাজিমাত করে সুইজারল্যান্ড।
আরো পড়ুন: ৮ গোলের থ্রিলার ইউরোয়! গোলবৃষ্টিতে ক্রোটদের হারিয়ে কোয়ার্টারে স্পেন
ম্যাচে টেনিস স্কোরের মত রোমহর্ষক ম্যাচে স্কোরলাইন বদলাল বারবার। ম্যাচের শুরুতেই হ্যারিস সেভেরোভিচ হেডে গোল করে সুইসদের প্রথমে এগিয়ে দিয়েছিলেন। এরপরে পেনাল্টি থেকে গোল করার সুযোগ পেলেও ২-০ করতে পারেনি সুইজারল্যান্ড। দ্বিতীয়ার্ধে দু-মিনিটের ব্যবধানে জোড়া গোল করে ফ্রান্সের হয়ে ২-১ করে দেন বেনজেমা। কিছুক্ষণ পরেই পোগবা গোল করে ৩-১ করে দেওয়ার পরেই ভাবা হয়েছিল ফ্রান্সই কোয়ার্টার ফাইনালে মুখোমুখি হতে চলেছে স্পেনের।
ঠিক সেই সময়েই অবিশ্বাস্য প্রত্যাবর্তনে ম্যাচে ফেরে সুইজারল্যান্ড। সেফেরোভিচ এবং গাভরানোভিচ জোড়া গোল করে ম্যাচ নিয়ে যান অতিরিক্ত সময়ে। যেখানে অমীমাংসিত থাকার পরে শেষমেশ টাইব্রেকার, এবং সেখানে এমবাপের ঐতিহাসিক মিস। টাইব্রেকারে একমাত্র মিস এমবাপেরই। তাঁর শট রুখে দেন সুইস গোলরক্ষক ইয়ান সোমের।
১৯৫৪ সালের পর এই প্ৰথমবার বড় কোনো টুর্নামেন্টের কোয়ার্টার ফাইনালে পৌঁছল সুইজারল্যান্ড। শেষবার ১৯৫৪-এর বিশ্বকাপে আয়োজক হয়ে সুইসরা। সেই টুর্নামেন্টেই কোয়ার্টার ফাইনালে পৌঁছয় তাঁরা। তারপরে দীর্ঘদিন পরে আবার বৈশ্বিক কোনো টুর্নামেন্টে শেষ আটে পৌঁছল তাঁরা।
চলতি ইউরোয় প্রথম দুই ম্যাচে মাত্র ১ পয়েন্ট সংগ্রহ করে গ্রুপ থেকেই ছিটকে যাওয়ার উপক্রম হয়েছিল সুইজারল্যান্ডের। তারপরে সুইস এক সংবাদপত্রে সমর্থকদের কাছে ক্ষমা চেয়ে শেষ ম্যাচে তুরস্কের বিরুদ্ধে সমর্থন করার আহ্বান জানান কোচ ভ্লাদিমির পেট্রোভিচ। শেষ ম্যাচে তুরস্ককে হারিয়ে তৃতীয় স্থান অর্জন করলেও অন্যতম সেরার ভিত্তিতে শেষ ষোলোয় পৌঁছয় তাঁরা।
ম্যাচে শুরু থেকেই চূড়ান্ত সমস্যায় ফেলেছিল হেভিওয়েট ফ্রান্সকে। জুবেরের ক্রস থেকে দারুণভাবে দলকে এগিয়ে দেন সেফেরোভিচ। এই প্রথমবারের মত কোন টুর্নামেন্টে ফ্রান্সের বিপক্ষে লিড নিয়েছিল সুইসরা।
জুবেরকে বক্সের মধ্যে পাভার্ড ফেলে দেওয়ার পরে পেনাল্টি পায় সুইসরা। তবে রিকার্ডো রদ্রিগেজ স্পট কিক থেকে গোল করতে পারেননি। এর ঠিক চার মিনিট তিন সেকেন্ড পরে বেনজেমার জোড়া গোল এবং পোগবার দুরন্ত ফিনিশ ফ্রান্সকে কার্যত কোয়ার্টার ফাইনালে পৌঁছে দিয়েছিল। কিন্তু তারপরেই ক্রোয়েশিয়া হয়ে ওঠে সুইসরা। শেষ ১০ মিনিটে জোড়া গোল করে দুরন্ত কামব্যাক ঘটায় তাঁরা। তারপর পুরোটাই রূপকথা। শেষদিকে কিংসলে কোমানের একটি শট ক্রশবারে লেগে প্রতিহত হয়।
ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা এখন টেলিগ্রামে, পড়তে থাকুন