আফগানিস্তান: ২৭২/৮
ভারত: ২৭৩/২
নতুন দিল্লির অরুণ জেটলি স্টেডিয়াম। ব্যাটিং স্বর্গ। রানের পাহাড় গড়ার ম্যাচ। সেই ম্যাচে দুর্বল আফগানিস্তানের বিপক্ষে যে ব্যাট হাতে তান্ডব উঠবে, তা প্রত্যাশিতই ছিল। আর বুধবার ঝড়ের নাম ছিল রোহিত শর্মা। রাজধানী শহরে আফগান শাসকদের সামনে যেন ছত্রপতি শিবাজি তিনি। ব্যাট হাতে সাইক্লোন তুললেন। রেকর্ডের পর রেকর্ড ভেঙে চুরমার করলেন। ৩০ বলে হাফসেঞ্চুরি সমেত রশিদ খানের বলে আউট হওয়ার আগে হিটম্যানের ব্যাট থেকে বেরোল ৮৪ বলে ১৩১ রানের বিধ্বংসী ইনিংস। ১৫৫.৯৫ স্ট্রাইক রেটে হাঁকালেন ১৬ বাউন্ডারি। পাঁচ বার বল মাঠের বাইরে ফেললেন ক্যাপ্টেন।
রোহিতের বিধ্বংসী ইনিংসের সৌজন্যেই ভারত আফগানিস্তানের ২৭৩ রানের টার্গেট পেরোল ১৫ ওভার বাকি থাকতে। হাতে ৮টা উইকেট নিয়ে। বিরাট কোহলি তিন নম্বরে নেমে ফেলে একবার ৫৬ বলে ৫৫ করে অপরাজিত থাকলেন। শ্রেয়াস আইয়ারকে নিয়ে দলের ফিনিশিং টাচ দিলেন মহাতারকা।
তবে বুধবার পুরোটাই হিটম্যান ম্যাজিক। কোহলির শহরে। আফগানিস্তানের ২৭৩ রানের টার্গেট তাড়া করতে নেমে ক্যাপ্টেন রোহিত শর্মা রশিদ খানদের নিয়ে প্ৰথম ১০ ওভারে কার্যত ছেলেখেলা করে তান্ডব করে গেলেন। একের পর এক রেকর্ড নতুন করে লিখতে বাধ্য হলেন ক্যাপ্টেন রোহিত। ৩০ বলে হাফসেঞ্চুরি করলেন। আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে ক্রিস গেইলের সর্বাধিক ছক্কা হাঁকানোর রেকর্ডও ভেঙে দিলেন হিটম্যান। সেই সঙ্গে বিশ্বকাপের ইতিহাসে দ্রুততম ১০০০ রান করলেন ডেভিড ওয়ার্নারকে পেরিয়ে। ওয়ার্ল্ড কাপে ভারতীয়দের মধ্যে সবথেকে বেশি রানের মালিক-ও এর শচীন নন, বুধবারের পর। মাস্টার ব্লাস্টারের কীর্তি দখল করে নিলেন রোহিত। বিশ্বকাপের ইতিহাসে ভারতীয়দের মধ্যে দ্রুততম সেঞ্চুরির কীর্তিও রোহিতের পকেটে।
দিল্লিতে আগের দুই ম্যাচেই রানের ফোয়ারা ছুটেছিল। দক্ষিণ আফ্রিকা-শ্রীলঙ্কা ম্যাচে তো সাতশোর বেশি রান হয়েছিল ম্যাচে। এমন পিচে টসে জিতে ব্যাটিং করতে বিন্দুমাত্র দেরি করেননি আফগান অধিনায়ক হাসমাতুল্লাহ শাহিদি। তবে এমন পাটা ব্যাটিং পিচেও আফগানরা একসময় ৬৩/৪ হয়ে গিয়ে ব্যাটিং বিপর্যয়ের মুখে পড়েছিল। পঞ্চম উইকেটে ক্যাপ্টেন শাহিদি এবং ওমরজাই ১২১ রান যোগ করে দলের বড় স্কোরের পাটাতন গড়ে দেন। ওমরজাই ৬৯ বলে ৬২ করে আউট হলেও শাহিদি থামেন ৮৮ বলে ৮০ করে। নিজের ইনিংসে আটটা বাউন্ডারির সঙ্গে একটা ওভার বাউন্ডারিও হাঁকিয়ে যান। অন্যদিকে, ওমরজাই চারটে ওভার বাউন্ডারি হাঁকান। আফগান ইনিংসের অধিকাংশ রান-ই আসে দুজনের ব্যাটে ভর করে। দুই ওপেনার রহমনুল্লাহ গুরবাজ এবং ইব্রাহিম জাদরান যথাক্রমে ২১ এবং ২২ করেন।
ভারতের বোলারদের মধ্যে সেরা বোলিং করে যান বুমরা। নিজের ১০ ওভারের কোটায় ৩৯ রানের বিনিময়ে ৪ উইকেট তুলে নেন তিনি। বিশ্বকাপ কেরিয়ারে এটাই বুমরার সেরা বোলিং পারফরম্যান্স। হার্দিক পান্ডিয়াও ২ উইকেট শিকার করেন। মহম্মদ সিরাজের জন্য অবশ্য দিনটা ভাল গেল না। ৯ ওভারে ৭৬ রান বিলিয়ে দেন তিনি। কোনও উইকেট ছাড়াই। অশ্বিনের জায়গায় ভারত বুধবার খেলিয়েছিল শার্দূল ঠাকুরকে। তিনিও ৬ ওভারে ৩১ খরচ করেন। নেন ১ উইকেট।
বাকি রান তুলে দেন কোহলি-শ্রেয়স।