ওভার পিছু দশেরও বেশি রান করে স্কোরবোর্ডে তোলার চ্যালেঞ্জ। ঘরের মাঠে সাউদি-স্যান্টনার। এমন অবস্থাতে ভারত ১ ওভার বাকি থাকতেই জয় ছিনিয়ে নিল ভারত। তা-ও আবার মাত্র ৪ উইকেট হারিয়ে। নিউজিল্যান্ডের ২০৩-এর জবাবে ভারত ৪৯ ওভারে তুলে দিল ২০৪। ছয় উইকেটে এক ওভার হাতে নিয়ে জয় ভারতের।
২০৩ রানের টার্গেট তাড়া করতে নেমে রোহিত শুরুতেই ফিরে গিয়েছিলেন। দ্বিতীয় ওভারেই ক্রিজে নামতে হয়েছিল কোহলিকে। প্রাথমিক ধাক্কা সামলে লোকেশ রাহুলের সঙ্গে জুটি বেঁধে ৯৯ রানের পার্টনারশিপ গড়ে তোলেন কোহলি। দুই তারকাই নিউজিল্যান্ড বোলারদের রীতিমতো পাড়ার স্তরে নামিয়ে এনেছিলেন।
ইনিংসের মাত্র পঞ্চম ওভারে স্কোরবোর্ডে ফিফটি। আর তিন ওভারের মধ্যেই স্কোরবোর্ডে একশো রান তুলে ফেলেছিল ভারত। ঠিক যখন মনে হচ্ছিল ভারত হেসেখেলে জিতবে, সেই সময়েই ধাক্কা ভারতের। কোহলি ও রাহুলকে পরপর দু-ওভারে ফিরিয়ে দিয়েছিলেন ইশ সোধি ও টিকনার। প্রথমে ইশ সোধির বলে সাউদির হাতে ক্যাচ তুলে আউট হয়ে গিয়েছিলেন লোকেশ রাহুল (২৭ বলে ৫৬)। ঠিক তার পরের ওভারেই গুপ্টিলের হাতে ক্যাচ তুলে আউট হয়ে যান কোহলি (৩২ বলে ৪৫)।
শিবম দুবে-ও বেশিক্ষণ টেকেননি ক্রিজে। ৯ বলে ১৩ রান করার পরে দুবে-কে ফেরান ইশ সোধিই। পরপর তিন উইকেট হারিয়ে ভারত যখন ম্যাচে নিজেদের ক্রমশ আধিপত্য হারিয়ে ফেলার মুখে, সেই সময়েই ত্রাতা শ্রেয়স আইয়ার। আগামী প্রজন্মের তারকাদের মধ্যে শ্রেয়সকে কেন বিশেষজ্ঞরা গুরুত্ব দেন, তা তিনি বুঝিয়ে দেন এদিন।
কঠিন সময়ে নেমে ২৯ বলে ৫৮ রান তুলে দলকে জিতিয়ে দেন। স্ট্রাইক রেট ২০০! শেষ দু-ওভারে জয়ের জন্য ভারতের প্রয়োজন ছিল ১৮ রান। শ্রেয়স ১৯তম ওভারেই সেই রান তুলে দেন। অন্যপ্রান্তে ১২ বলে ১৪ করে অপরাজিত থাকেন মণীশ পাণ্ডে। পঞ্চম উইকেটে শ্রেয়স-মণীশ ৬২ রান যোগ করে যান। ম্যাচের সেরাও শ্রেয়স।
তার আগে প্রথমে ব্যাটিং করে অকল্যান্ডের ইডেন পার্কে পাহাড়প্রমাণ স্কোর খাড়া করেছিল কিউয়িরা। ২০ ওভারে ৫ উইকেট হারিয়ে নিউজিল্যান্ড তুলেছিল ২০৩। নিউজিল্যান্ডের প্রত্যেক ব্যাটসম্যানই এদিন সফল। টপ অর্ডারের প্রথম তিন ব্যাটসম্যানের মধ্যে দু-জনই হাফসেঞ্চুরি করে গিয়েছিলেন। শেষ দিকে হাফসেঞ্চুরি করে গেলেন রস টেলরও (৫৪)।
ইনিংসের প্রথম বল থেকেই ভারতীয় বোলারদের ওপর চড়াও হয়েছিলেন কিউয়ি ব্যাটসম্যানরা। ওভার পিছু ১০ রানের মোমেন্টাম সেট করে দেন দুই ওপেনার মার্টিন গুপ্টিল ও কলিন মুনরো। মার্টিন গুপ্টিলকে (৩০) যখন শিবম দুবে অষ্টম ওভারে ফেরান, তখন ইতিমধ্যেই স্কোরবোর্ডে ৮০ উঠে গিয়েছে। এরপরে কলিন মুনরো (৫৯), অধিনায়ক কেন উইলিয়ামসন (৫১) হাফসেঞ্চুরি করে রান তোলার গতি বজায় রাখেন।
ভারতীয় বোলারদের মধ্যে এদিন সবথেকে বেশি খরুচে মহম্মদ শামি ও শার্দুল ঠাকুর। শামি নিজের ৪ ওভারের কোটায় ৫৩ রান খরচ করলেন। কোনও উইকেট না নিয়েই। অন্যদিকে, শার্দুল ঠাকুর ১ উইকেট দখল করলেও ৩ ওভারে ৪৪ রান বিলিয়ে দিলেন। বাকি প্রত্যেকেই ১টি করে উইকেট পেয়েছেন।
গুপ্টিলকে ফিরিয়ে উচ্ছ্বাস শিবম দুবের (বিসিসিআই টুইটার)
টসে জিতে প্রথমে বোলিং করার সিদ্ধান্ত নিয়েছিল ভারত। ভারতের প্রথম একাদশে এদিন একাধিক চমক ছিল। ঋষভ পন্থ যে বাদ পড়বেন, তার ইঙ্গিত আগেই দিয়েছিলেন কিং কোহলি। তবে জায়গা হয়নি সঞ্জু স্যামসনেরও। রোহিত শর্মার সঙ্গে ওপেনিংয়ের দায়িত্ব সামলাতে হবে লোকেশ রাহুলকে। সেইসঙ্গে লোকেশই পার্টটাইম কিপারের ভূমিকা পালন করলেন।
পাঁচ নম্বর ব্যাটিং পজিশনে খেলছেন মণীশ পাণ্ডে। অলরাউন্ডারের কোটায় জায়গা পেয়েছেন শিবম দুবে। দুই স্পিনার হিসেবে প্রথম একাদশে খেলবেন যুজবেন্দ্র চাহাল ও রবীন্দ্র জাদেজা। শামি, বুমরা এবং শার্দুল ঠাকুর পেস ডিপার্টমেন্টে থাকছেন। বাদ পড়েছেন নভদীপ সাইনিও।
অন্যদিকে, নিউজিল্যান্ডের জার্সিতে আজ টি২০তে অভিষেক ঘটালেন হামিশ বেনেট।
ভারতের প্রথম একাদশ– রোহিত শর্মা, লোকেশ রাহুল, বিরাট কোহলি, শ্রেয়স আইয়ার, মণীশ পাণ্ডে, শিবম দুবে, রবীন্দ্র জাদেজা, যুজবেন্দ্র চাহাল, জসপ্রীত বুমরা, মহম্মদ শামি, শার্দুল ঠাকুর