মহিলাদের ব্ল্যাকমেল করে ধর্ষণে অভিযুক্ত ই-কমার্স সংস্থার এক ডেলিভারি বয়। তদন্তে নেমে পুলিশ জানতে পেরেছে, প্রায় ৬৬ জন মহিলাকে লালসার শিকার বানিয়েছে বিশাল বর্মা। চুঁচুড়ার এক গৃহবধূর অভিযোগের ভিত্তিতে প্রথম মামলা রুজু করে পুলিশ। তারপর তদন্তে নেমে বেরোয় কেঁচো খুঁড়তে গিয়ে কেউটে।
কী ভাবে ৬৬ জন মহিলা, তাঁর লালসার শিকার হলেন? জানা গিয়েছে, প্রথমে পরিষেবার ফিডব্যাক নেওয়ার নাম করে মহিলাদের ফোন নম্বর জোগাড় করত বিশাল। তার পর ভাব জমিয়ে ভিডিয়ো কল করে তাঁদের বিভিন্ন মুহূর্তের ছবির স্ক্রিন শট জমিয়ে রাখত অভিযুক্ত।
এরপর নিজের খোলস ছেড়ে বেরতো সে। সুযোগ বুঝে সেই ছবি দেখিয়ে ব্ল্যাকমেল করে একের পর এক মহিলাকে ধর্ষণ। এমন ফাঁদ পেতে অন্তত ৬৬ জন মহিলাকে ধর্ষণ
তবে শুধু বিশাল নয়। এই ঘটনায় অপর অভিযুক্ত বিশালের বন্ধু পেশায় রং মিস্ত্রি সুমন মণ্ডল। হুগলির ব্যান্ডেল থেকে সেই দুই যুবককে শনিবার রাতে গ্রেফতার করেছে চন্দননগর কমিশনারেটের পুলিশ। রবিবার দু'জনকে আদালতে তোলা হলে বিচারক ৫ দিন পুলিশ হেফাজতের নির্দেশ দিয়েছেন।
কমিশনারেট সূত্রে খবর, কেওটার বাসিন্দা বিশাল বর্মা চুঁচুড়ার এক গৃহবধূকে একই ভাবে ফাঁসিয়ে ধর্ষণ করেছিল। এমনকি আগ্নেয়াস্ত্র দেখিয়ে তাঁর গয়নাও হাতিয়ে নেয় অভিযুক্ত। এই মহিলাই প্রথম অভিযোগ দায়ের করেন। তিনি পুলিশকে জানান, নির্যাতনের সময় বিশাল তাঁকে জানায়, তিনি তার ৬৬তম ‘শিকার’।
পুলিশ সুত্রে আরও খবর, শনিবার রাতে চুঁচুড়া থানার আধিকারিক তীর্থসারথি হালদারের নেতৃত্বে একটি দল ব্যান্ডেলের কেওটার ত্রিকোণ পার্কে হানা দেয়। বিশালের বাড়িতে ঢুকে তাকে এক মহিলার সঙ্গে দেখতে পান পুলিশকর্মীরা।
জানা গিয়েছে, ওই মহিলাকেও বিশাল একই ভাবে ভয় দেখিয়ে শ্লীলতাহানি করেছে। বিশালের মোবাইল এবং তার কাছে থাকা বেশ কিছু মাইক্রোচিপে অসংখ্য মহিলার ছবি এবং ভিডিয়ো পেয়েছে পুলিশ। তবে অভিযুক্তের দাবি, সে যৌনকর্মীদেরও নিয়ে আসত। একটি ভিডিয়োয় দেখা গিয়েছে, বিশাল আগ্নেয়াস্ত্র হাতে দাঁড়িয়ে এবং তার পায়ের কাছে হাতজোড় করে রয়েছেন এক মহিলা। যদিও বিশালের দাবি ওটা আসল আগ্নেয়াস্ত্র নয়।
বিশালের মোবাইলে পাওয়া ছবি দেখে সুমন মণ্ডলের সন্ধান পান তদন্তকারীরা। মাস চারেক আগে বিয়ে করেছে সুমন। সুমনের পরিবারের সদস্যদের অবশ্য দাবি, এ সব তাঁরা কিছুই জানতেন না। এ নিয়ে বিশালের ঘাড়েই দোষ চাপাচ্ছেন তাঁরা।