Advertisment

কুড়মি আন্দোলন: পঞ্চায়েত ভোটের আগে বড় ইস্যু, কৌশলে ব্যস্ত রাজনৈতিক নেতৃত্ব

তাঁদের এই আন্দোলনের সঙ্গে রাজনীতির কোনও যোগ নেই বলে স্পষ্ট করে জানিয়ে দিয়েছেন কুড়মি নেতারা।

author-image
Joyprakash Das
New Update
Ahead of the panchayat polls, Kurmi protests are a major issue

একটানা ৬ দিন ধরে আন্দোলন চলে। মহালয়ার দিনই আন্দোলন তুলে নেয় কুড়মিরা।

সামনেই পঞ্চায়েত নির্বাচন। তারপরের বছরই লোকসভার ভোট। এরই মধ্যে জঙ্গলমহল দেখল লাগাতার রেল ও সড়ক অবরোধ। দক্ষিণ-পূর্ব রেলের এই রুটে ট্রেন চলাচল সম্পূর্ণ বন্ধ ছিল। সড়কে দীর্ঘ গাড়ির লাইনের সাড়ি। অবশেষে ৬ দিনের মাথায় মহালয়ায় অবরোধ তুলে নেয় কুড়মি সমাজের আন্দোলনকারীরা। তাঁদের দাবি, তফসিলি জনজাতিভুক্তকরণ করার। এই আন্দোলনের সঙ্গে রাজনীতির কোনও সংযোগ নেই বলে জানিয়ে দিয়েছে কুড়মি সমাজ।

Advertisment

রাজনৈতিক মহলের মতে, দাবির যৌক্তিকতা নিয়ে প্রশ্ন না তুলেও বলা যায় পুজোর মুখে লক্ষ লক্ষ মানুষ এই আন্দোলনের ফলে দুর্ভোগে পড়েছেন। দূর-দূরান্তে যাতায়াতকারী গাড়ির চালক ও সহকারিরা খাদ্য সংকটে পড়েছেন। আন্দোলনকারীদের দাবি অনুযায়ী রাজ্য সরকার কেন্দ্রের কাছে চিঠি পাঠিয়েছে। আপাতত আন্দোলন উঠেছে কিন্তু সাধারণের দুর্ভোগ নিয়ে প্রশ্ন থেকেই গেল।

নির্বাচন এলেই এরাজ্যে মতুয়া সম্প্রদায়ের ওপর কতগুলি বিধানসভা বা লোকসভা আসনের জয়-পরাজয় ফ্যাক্টর, তা নিয়ে রাজনৈতিক মহলে কাটাছেঁড়া চলতে থাকে। তৃণমূল কংগ্রেস ও বিজেপি মতুয়া ভোট পাওয়ার লক্ষ্যে সরাসরি নানা কর্মসূচি ঘোষণা করে। মতুয়াদের জন্য তারা কি করছে, কি করতে চায় তা নিয়ে নির্বাচনে প্রচারও করে। রাজনৈতিক মহলের মতে, তেমনই জঙ্গলমহলে আদিবাসী সম্প্রদায়ের ভোট নির্বাচনে জয়ের ক্ষেত্রে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। যদিও কুড়মি সমাজ এখন খাতায়-কলমে তফসিলি জাতিভুক্ত নয়। তবে বাস্তবে তাঁদের মূলবাসী মেনেই চলা হয়।

পুরুলিয়া, ঝাড়গ্রাম, পশ্চিম মেদিনীপুর ও বাঁকুড়া মূলত জঙ্গলমহলের এই চার জেলায় কুড়মি সম্প্রদায়ের বসবাস। এরাজ্যে কুড়মি সম্প্রদায়ের জনসংখ্যা প্রায় ৬৬ লক্ষ। কুড়মি সম্প্রদায়ের বক্তব্য, ব্রিটিশ আমল থেকেই তাঁর আদিবাসি জনজাতিভুক্ত। ফের সেই তালিকায় তাঁদের স্থান দিতে হবে। এদিকে আগামী বছর পঞ্চায়েত নির্বাচন। পঞ্চায়েত, লোকসভা বা বিধানসভা নির্বাচনে কুড়মি সমাজের ভোট জঙ্গলমহলে বেশ কিছু আসনে হার-জিতের ফ্যাক্টর হতে পারে।

আরও পড়ুন- অবশেষে স্বস্তি এল মহালয়ার সকালে! লাগাতার আন্দোলন প্রত্যাহার কুড়মিদের

রাজনৈতিক মহলের মতে, কোনও সম্প্রদায় যদি ঐক্যবদ্ধ থাকে সেক্ষেত্রে ভোট বাক্সে প্রভাব পড়ার সম্ভাবনা বেশি। সেই ভোট কোনও একটি রাজনৈতিক দলের পক্ষে গেলেই বড় বিপদ অন্য দলের। যে কারণে সাধারণ মানুষের সমস্যা দীর্ঘতর হলেও মন্তব্যে সতর্ক রাজনৈতিক দলগুলি।

বিগত লোকসভা নির্বাচনে জঙ্গলমহলে একচেটিয়া জয় পেয়েছে বিজেপি। ২০১৮ পঞ্চায়েত নির্বাচনে যার কিছুটা ইঙ্গিত মিলেছিল। এরইমধ্যে আদিবাসী সম্প্রদায় থেকে রাষ্ট্রপতি করেছে পদ্মশিবির। এরাজ্যে তা নিয়ে জোরদার প্রচারও করেছে গেরুয়ামহল। ২০২১ বিধানসভা নির্বাচনে তৃণমূল কংগ্রেস জঙ্গলমহলে লোকসভার ক্ষত কিছুটা শুকিয়েছে।

আরও পড়ুন- তর্পনে গিয়ে শুভেন্দু-দিলীপের ছবিতে মালা, ‘কালারফুল’ মদনের নয়া কাণ্ডে বিতর্ক

স্বাভাবিক ভাবে এবার লোকসভায় আসন বৃদ্ধির জন্য ঝাঁপাবে। এরইমধ্যে সিপিএম নতুন করে ছাত্র-যুবদের নিয়ে লড়াই শুরু করেছে। লোকসভার আগে পঞ্চায়েত ভোটের মহড়া। এই পরিস্থিতিতে কুড়মি সম্প্রদায়ের দাবি-দাওয়া নিয়ে আন্দোলন অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ বলে মনে করছে অভিজ্ঞমহল।

panchayat election West Bengal kurmi Andolon
Advertisment