Advertisment

মমতার হুঁশিয়ারিকে বুড়ো আঙুল, ফের মধ্যরাতে উপাচার্য নিয়োগ রাজ্যপালের, তুঙ্গে সংঘাত

কৃষ্ণনগরের কন্যাশ্রী বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্তর্বর্তীকালীন উপাচার্য নিয়োগ করা হল অধ্যাপক কাজল দে-কে।

author-image
IE Bangla Web Desk
New Update
Mamata governor

মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ও রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস। (প্রতীকী ছবি)

মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের হুঁশিয়ারির পরও রাজ্যের সঙ্গে সংঘাত জারি রাখলেন রাজ্যপাল সি ভি আনন্দ বোস। শিক্ষক দিবসের অনুষ্ঠানে বিশ্ববিদ্যালয়গুলিকে রাজ্যপালের কথা শুনলে চরম হুঁশিয়ারি দিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। তার কয়েক ঘণ্টা পরই মধ্যরাতে ফের অন্তর্বর্তীকালীন উপাচার্য নিয়োগ করলেন রাজ্যপাল। মঙ্গলবার মধ্যরাতে রাজভবনের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, কৃষ্ণনগরের কন্যাশ্রী বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্তর্বর্তীকালীন উপাচার্য নিয়োগ করা হল অধ্যাপক কাজল দে-কে।

Advertisment

প্রসঙ্গত, গতকাল শিক্ষক দিবসের অনুষ্ঠানে রাজ্যপালকে চরম হুঁশিয়ারি দিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। সেই সঙ্গে বিশ্ববিদ্যালয়গুলি তাঁর কথা শুনলে আর্থিক নিষেধাজ্ঞার মুখে পড়তে পারে বলে হুঁশিয়ারি দেন মমতা। রাজ্যপাল যদিও সেই হুঁশিয়ারিকে বুড়ো আঙুল দেখিয়ে আগের মতোই মঙ্গলবার মধ্যরাতে আবার উপাচার্য নিয়োগ করেছেন। এর ফলে রাজ্য এবং রাজভবনের সংঘাত আরও তীব্র হল বলেই মনে করা হচ্ছে।

সম্প্রতি রাজ্যের একাধিক বিশ্ববিদ্যালয়ে অন্তর্বর্তী উপাচার্য নিয়োগ করেছেন রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস। যা নিয়ে আগেই আইনি লড়াইয়ের বার্তা দিয়েছিলেন শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু। মঙ্গলবার মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘এখানে বসে আছেন মাননীয় রাজ্যপাল। তিনি বলছেন আমিই স্কুল, কলেজ দেখবো, ইউনিভার্সিটি দেখবো, আমি বলি আইন মেনে চলুন, কোনও আপত্তি নেই। সংবিধান মোতাবেক সরকার তিন জনের নাম পাঠাবে আপনি তার মধ্যে থেকে একজনকে বেছে নেবেন। ইইউজি-র নিয়ম মেনে ওটা অ্যাসেম্বিলে ওটা পাঁচ জন করা হয়েছে। কিন্তু বলতে পারেন কেন দুটো বিজ্ঞপ্তি দেওয়া হয়েছে। ইউনিভার্সিটিতে ওনার ফোন যায়। এসব খবর আমার হৃদয়বিদারণ করে। আমি অনেকবার বলেছি ওনাকে যে এসব করবেন না। স্বাধীনতার পর দেশে দু-তিনটে বিশ্ববিদ্যালয় ছিল। তাই ভাইসরয় চেয়ারটাকে সম্মান জানানোর জন্য গর্বনর পদ তৈরি হয়েছিল। আজ তো ৪২-৪৩টা ইউনিভার্সিটি তৈরি হয়েছে।’

এরপরই বিস্ফোরক মুখ্যমন্ত্রী। বলেন, ‘টাকা দেব আমরা, পলিসি করব আমরা। আর আপনি খবরদারি করবেন? কখনো শুনেছেন মধ্যরাতে হঠাৎ করে যাদবপুরের ভিসি চেঞ্জ হয়ে গেল। ১৬ জনকে টপকে। শুনলাম আলিয়ার মত স্পর্শকাতর বিশ্ববিদ্যালয়ে কেরল থেকে একজনকে করে দিয়েছেন ভাইস চ্যান্সেলর। তাঁর শিক্ষায় ১০ বছরের কোনও অভিজ্ঞতাই নেই। রবীন্দ্রভারতীতে প্রাক্তন বিচারপতিকে চ্যান্সেলর করে দিচ্ছে। তাঁর তো শিক্ষায় কোনও অভিজ্ঞতা নেই। তার মানে সিস্টেমটাকে কোল্যাপস করে দেওয়ার চক্রান্ত। এই চক্রান্ত আমরা মানব না। যদি রাজ্যপাল মনে করেন নির্বাচিত সরকারের প্রয়োজন নেই, তিনিই সব করবেন তাহলে তা মানব না। আপনি যদি কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয়ে হস্তক্ষেপ করেন, আর যদি আপনার কথা শুনে কাজ হয় আমি কিন্তু অর্থনৈতিক বাধা তৈরি করব। এখানে টিট ফর ট্যাট। কোনও আপস নয়। দেখি আপনি কোন কলেজের শিক্ষকদের মাইনে দেন।’

আরও পড়ুন Exclusive: পড়ুয়া ০-অধ্যাপক ২, পড়ুয়া ১-অধ্যাপক ৩, বাংলার বহু কলেজের ভয়ঙ্কর অবস্থায় প্রশ্নের মুখে উচ্চশিক্ষা

মুখ্যমন্ত্রীর দাবি, ‘আমি আজ পর্যন্ত এসব ভাবিনি। আমরা কোনও শিক্ষায় কোনও হস্তক্ষেপ করি না। কারণ শিক্ষকরাই আমাদের শিক্ষা দেন। কেরলের লোকে আমার আপত্তি নেই। কিন্তু এভাবে নিয়োগ আবার কেমন করে? আমরা অ্যাসেম্বলিতে বিল পাস করেছি, এটাকে চ্যালেঞ্জ করছি।’ সংবিধানের প্রশ্ন তুলে বিধানসভায় পাস করা বিল আটকে রাখা নিয়েও রাজ্যপালের বিরুদ্ধে বিস্তর অভিযোগ করেছেন মুখ্যমন্ত্রী।

যুক্তরাষ্ট্রীয় ব্যবস্থাকে চুরমার করে রাজ্যের অধিকার কেড়ে নিলে মুখ্যমন্ত্রী রাজভনের সামনে ধর্না দিতে বাধ্য হবেন বলেও হুঙ্কার দিয়েছেন এদিন। অর্থাৎ, উপাচার্য নিয়োগ ইস্যুতে রাজভবনের পদক্ষেপ যে নবান্ন কোনও মতেই মানবে না এদিন সংঘাতের ফাটল আরও চওড়া করে সেই বার্তাই স্পষ্ট করে দিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।

Mamata Banerjee West Bengal c v anand bose
Advertisment