Advertisment

দেউচা-পাঁচামি নিয়ে আত্মবিশ্বাসী অনুব্রত, গ্রামবাসীদের পাশে প্রকল্পের বিরোধিতায় বামেরা

এদিন সিপিএমের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য সুজন চক্রবর্তী, রামচন্দ্র ডোমের নেতৃত্বে একটি প্রতিনিধি দল হরিণসিংহা গ্রামে যান।

author-image
IE Bangla Web Desk
New Update
NULL

আদিবাসীদের সঙ্গে দেখা করে বাম প্রতিনিধি দল, সুজনদের সফরকে কটাক্ষ অনুব্রত মণ্ডলের। ছবি- আশিস মণ্ডল

"কয়লাখনি দেউচা-পাঁচামীতে হবেই। হবে লক্ষ বেকারের চাকরি"। শুক্রবার কয়লাখনি সংলগ্ন শেওড়াফুলির মাঠে দলে দলীয় যোগদান সভায় একথা বলেন তৃণমূলের জেলা সভাপতি অনুব্রত মণ্ডল। দিন কয়েক আগেই বিজেপি ছেড়ে তৃণমূল যোগদান করেছেন সুনীল সোরেন। আদিবাসীদের কাছে গ্রহণযোগ্য ওই নেতাকে দলে পেয়ে উচ্ছ্বসিত তৃণমূল। তাঁরই নেতৃত্বে এদিন ওই সভায় বহু আদিবাসী তৃণমূলে যোগদান করেন।

Advertisment

মঞ্চে বক্তব্য রাখতে গিয়ে অনুব্রত বলেন,"সুনীল ভুল করে অন্য দলে গিয়েছিল। খুব ভাল ছেলে। সুনীল আদিবাসীদের উন্নয়ন চায়। আমি ওঁর সঙ্গে কথা বলেই আদিবাসী উন্নয়নে কাজ করব। এই এলাকায় কয়লাখনি হবেই। এক লক্ষ বেকারের চাকরি হবে। এক পরিবারে যতগুলো ছেলে থাকবে প্রত্যেকে বাড়ি পাবে। এখানে কেউ বাধা দিতে পারবে না। ২০১০ সালে এই ব্লকেই মুখ্যমন্ত্রী বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যকে আটকে দিয়েছিল। আদিবাসীরা কয়লাখনি গড়তে এগিয়ে আসবে"।

এদিকে, অনুব্রতর ঠিক উল্টো কথা বলছে বামেরা। "আমরা কয়লাখনি গড়তে জমি ছাড়ব না। যে সরকার বেকারদের চাকরি দিতে পরে না। তাদের কাছে এই প্যাকেজ আশা করা যায় না। আমরা যেমন আছি তেমনিই থাকতে চাই"। শুক্রবার দেউচা পাঁচামি প্রস্তাবিত কয়লাখনি নিয়ে বাম প্রতিনিধি দলের কাছে এমনটাই জানালেন গ্রামের মানুষ।

এদিন সিপিএমের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য সুজন চক্রবর্তী, রামচন্দ্র ডোমের নেতৃত্বে একটি প্রতিনিধি দল হরিণসিংহা গ্রামে যান। গ্রামে ঢোকার মুখে কিছু মানুষ তাদের পথ আটকায়। কালো পতাকা দেখিয়ে গ্রামে ঢুকতে বাধা দেয়। বাম প্রতিনিধি দল তাদের বাধা টপকে বিভিন্ন গ্রাম ঘুরে মানুষের সঙ্গে কথা বলেন। হরিণসিংহা গ্রামের বাসিন্দা স্মিতা মুর্মু বলেন, "আমি ডি এড করেছি সাত বছর আগে। দুই বোন তারাও শিক্ষিতা। কিন্তু কেউ চাকরি পাইনি। তাই এই সরকারের প্রতিশ্রুতিকে আমরা ভরসা করি না। এদের কথার সঙ্গে কাজের কোন মিল নেই। তাই আমরা জমি দেব না। আমরা যেমন ছিলেন তেমনিই থাকতে চাই"।

সুজনবাবু বলেন, "আমরা সাধারণ মানুষের সঙ্গে কথা বলার জন্য গ্রামে গিয়েছিলাম। আমরা যে যাচ্ছি তাতে তৃণমূলের খুব অপছন্দ হয়েছে। ওদের ওটা যেন জমিদারি। ওদের জমিদারিতে যাব কেন এরকম একটা ভাব ওদের। এমন ভাব লোকেও কিছু বলতে পারবে না। আমরাও কিছু শুনতে পালব না। তাই তারা বাইরে থেকে কিছু লোক নিয়ে এসে আমাদের পথ আটকানোর চেষ্টা করে। কালো পতাকা দেখায়। তাতে খুব একটা লাভ হয়নি। আমরা তাদের বাধা অতিক্রম করেই মানুষের সঙ্গে কথা বলেছি। আমরা হরিণসিংহা, দেওয়ানগঞ্জ, চাঁদা-সহ বেশ কয়েকটি গ্রাম ঘুরে মানুষের সঙ্গে কথা বলেছি। তাতে বোঝা গেল সরকারের কোন প্রতিনিধি সাধারণ মানুষের সঙ্গে কথা বলেনি। জেলাশাসক, মহকুমা শাসক, বিডিও, প্রধানের মাধ্যমে কে কি কথা বলে দিয়েছেন কেউ জানে না।"

আরও পড়ুন ফুলের তোড়া নিয়ে সায়ন্তিকার ‘দুয়ারে’ বিজেপি বিধায়ক, দলবদলের জল্পনা তুঙ্গে

তিনি আরও বলেন, "সাধারণ মানুষের বক্তব্য আমাদের জীবন, জীবিকা, পরিবেশ ধ্বংস করলে আমরা যাব কোথায়। মানুষ অসহায় বোধ করছে। আতঙ্কে রয়েছে। তাঁরা যাবে কোথায়। মানুষ ওখানে কয়লাখনি চাইছেন না। সরকারের উচিত মানুষের জীবন, জীবিকা ও পরিবেশের মতো গুরুত্বপূর্ণ বিষয় যেন খতিয়ে দেখে। মধ্যপ্রদেশ, ছত্রিশগড়ে কর্পোরেট কোম্পানি যখন খনি দখল নিতে চাই তখন বিজেপি তাদের পাশে দাঁড়ায়। এরাজ্যে সরকার কি বিজেপির পথে হাঁটবে? সরকারকে চিন্তাভাবনা করে এগোতে হবে।"

অন্যদিকে, সিপিএম নেতা সুজন চক্রবর্তীর সফর প্রসঙ্গে অনুব্রত বলেন, "আগেই বলেছি এখানে বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যকে আটকে দিয়েছিল আদিবাসীরা। ফলে কে এল গেল দেখে লাভ নেই। মুখ্যমন্ত্রী এলাকার উন্নয়ন নিয়ে যা ভাবনা চিন্তা করছেন। ৩৪ বছরে বামফ্রন্ট করেনি। আমরা আদিবাসীদের নিয়েই কয়লাখনি গড়ব"।

ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা এখন টেলিগ্রামে, পড়তে থাকুন

anubrata mondal Cpm Deucha-Panchami Coal Block
Advertisment