Advertisment

হাওড়া জেলা হাসপাতালের সুপারই করোনা আক্রান্ত, পরিষেবা চালু রাখা নিয়ে আশঙ্কিত প্রশাসন

ডাক্তারবাবু, নার্সরাও অনেকে আসছেন না। এই খবর প্রকাশ হওয়ার পর পরিস্থিতি আরও খারাপ হয়েছে বলে খবর। 

author-image
IE Bangla Web Desk
New Update
NULL

হাওড়া জেলা হাসপাতালের সুপার করোনা আক্রান্ত, আশঙ্কিত জেলা প্রশাসন এবং স্বাস্হ্য মহল। ছবি- অরিন্দম বসু

করোনা আক্রান্ত হলেন এবার খোদ হাওড়া জেলা হাসপাতালের সুপার ডাঃ নারায়ণ চট্টোপাধ্যায়। সর্দি, কাশি, জ্বরের মত করোনা সংক্রমণের যাবতীয় উপসর্গ নিয়ে তিনি এ মুহূর্তে ভর্তি রয়েছেন কলকাতার এম আর বাঙুর হাসপাতালে। এই ঘটনায় রীতিমত আশঙ্কিত জেলা প্রশাসন এবং স্বাস্হ্য মহল।

Advertisment

কিছুদিন আগে হাওড়া হাসপাতালে সালকিয়ার বাসিন্দা এক মহিলা করোনা উপসর্গ নিয়ে ভর্তি হয়েছিলেন। তাঁর মৃত্যুর পর জানা যায় যে তিনি করোনা আক্রান্ত ছিলেন। প্রথমে মহিলাদের সাধারণ ওয়ার্ডের বেডে রেখেই চিকিৎসা করা হয়েছিল। পরে তাঁকে সিসিইউ-তে স্থানান্তরিত করা হয়েছিল। ফলে হাসপাতালের চিকিৎসক, নার্স, স্বাস্থ্যকর্মীর একাংশের মধ্যে সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কা তৈরি হয় এবং প্রায় ৩০ জনকে ডুমুরজলায় কোয়ারেন্টাইনে পাঠাতে হয়। যে ওয়ার্ডে ওই রোগী ছিলেন সেখানে ও তার সঙ্গে সিসিইউ এবং লাগোয়া এলাকায় পরে ভালোভাবে জীবাণুমুক্ত করা হয়।

এই ঘটনার পর কয়েকদিন আগেই নারায়ণবাবু জানিয়েছিলেন, হাওড়া জেলা হাসপাতালে করোনা সংক্রান্ত রোগী নেওয়া আপাতত বন্ধ রাখা হয়েছে। অন্যান্য রোগের জন্য প্রস্তুত রাখা হয়েছে হাসপাতালকে। কিন্তু এরপরও কীভাবে খোদ সুপারের শরীরে করোনা বাসা বাঁধল, তা নিয়ে ঘোর দুশ্চিন্তায় হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।

আরও পড়ুন- লকডাউনে একগুচ্ছ ছাড় ঘোষণা মমতার

দুশ্চিন্তা অবশ্য এখানেই শেষ নয়। সুপারের শরীরে সংক্রমণের খবর জানার পর থেকে গত কয়েকদিনে তাঁর সংস্পর্শে আসা লোকজনকে চিহ্নিত করে এখন কোয়ারেন্টাইনে পাঠানোর কাজ শুরু করেছে জেলা স্বাস্থ্য দফতর। কিছুদিন আগেই জেলা হাসপাতালের সুপারের সঙ্গে বৈঠক করেন জেলা স্বাস্থ্য দফতরের আধিকারিকরা। সূত্রের খবর, এখন তাঁদেরও চিহ্নিত করে হোম কোয়ারেন্টাইনে থাকার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। এমনকী ডাক্তার, নার্স এবং স্বাস্থ্যকর্মীদের অনেককেই এবার কোয়ারেন্টাইনে পাঠানো হচ্ছে। ইতিমধ্যে প্রায় শতাধিক জনের তালিকা তৈরি করার কাজ শুরু করে দিয়েছে জেলা প্রশাসন। কিন্তু প্রশাসনের বেশিরভাগ শীর্ষকর্তা কোয়ারেন্টাইনে চলে গেলে হাওড়ার মতো গুরুত্বপূর্ণ জেলার পরবর্তী পরিস্থিতি কীভাবে সামাল দেওয়া হবে তা নিয়ে চিন্তিত রাজ্য স্বাস্থ্য দফতর। এই পরিস্থিতিতে হাওড়া হাসপাতালের স্বাভাবিক পরিষেবা নিয়েই বড়সড় প্রশ্ন দেখা দিয়েছে।

বৃহস্পতিবার খোদ সুপারের আক্রান্ত হওয়ার খবর হাসপাতালে চাউর হতেই আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে নার্স, অবশিষ্ট চিকিৎসক এবং স্বাস্থ্যকর্মীদের মধ্যে। হাসপাতালের এক কর্মী জানান, পুরো হাসপাতালে মাত্র জনা দশেক রোগী আছেন। ডাক্তারবাবু, নার্সরাও অনেকে আসছেন না। এই খবর প্রকাশ হওয়ার পর পরিস্থিতি আরও খারাপ হয়েছে বলে খবর।

রাজ্যের মন্ত্রী তথা জেলা হাসপাতালের রোগীকল্যাণ সমিতির চেয়ারম্যান অরূপ রায় বলেন, "এই অবস্থায় সুপারের সংস্পর্শে যাঁরা যাঁরা এসেছিলেন, তাঁদের সবাইকেই কোয়ারেন্টাইনে পাঠানো দরকার। তবে হাসপাতাল নিয়ে এখন যা সিদ্ধান্ত নেওয়ার, তা রাজ্য স্বাস্থ্য দফতরই নেবে। এর আগের পর্যায়ে যাঁদের কোয়ারেন্টাইনে পাঠানো হয়েছিল তাঁদের সবারই রিপোর্ট নেগেটিভ এসেছে।" তাঁদের এবার কাজে যোগ দিতে বলা যাবে বলে আশা প্রকাশ করেন অরূপবাবু।

ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা এখন টেলিগ্রামে, পড়তে থাকুন

coronavirus corona
Advertisment