‘জয় শ্রীরাম’ ধ্বনি ঘিরে এবার অশান্তি ছড়াল শিক্ষাঙ্গনেও। ‘জয় শ্রীরাম’ বলা নিয়ে বিবাদে জড়াল স্কুলের পড়ুয়ারা, যা ঘিরে রণক্ষেত্রের চেহারা নিল মুর্শিদাবাদের রঘুনাথগঞ্জ এলাকা। ‘জয় শ্রীরাম’ ধ্বনি ঘিরে ক্লাসরুমেই ছাত্রদের দু’পক্ষের মধ্যে মারামারি হয় বলে অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় দু-তিন জন পড়ুয়া আহত হয়েছে বলেও জানা গিয়েছে। অন্যদিকে, ঘটনার প্রতিবাদ করায় ভূগোলের শিক্ষককে মারধর করা হয় বলে অভিযোগ উঠেছে। স্কুলে এ ঘটনার খবর ছড়িয়ে পড়তেই তেতে ওঠে এলাকা। ৩৪নং জাতীয় সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ দেখান এলাকাবাসীদের একাংশ।
আরও পড়ুন: ‘সারদাকাণ্ডে তৃণমূলের সব পদাধিকারীকেই ডাকবে সিবিআই’, জিজ্ঞাসাবাদ শেষে বিস্ফোরক দীনেশ ত্রিবেদী
ঠিক কী ঘটেছে?
সূত্র মারফৎ জানা গিয়েছে, কয়েক দিন ধরেই জয় শ্রীরাম ধ্বনি ঘিরে উত্তপ্ত ছিল রঘুনাথগঞ্জের শ্রীকান্তবাটি এলাকা। এদিন শ্রীকান্তবাটি হাইস্কুলের মধ্যেই কয়েকজন ছাত্রছাত্রীর ক্লাস অফ থাকায় গল্প করছিল তারা। সে সময়ই একদল ছাত্রের সঙ্গে আরেক দল ছাত্রের আচমকা ‘জয় শ্রীরাম’ বলা নিয়ে তর্ক-বিতর্ক বেঁধে যায়। সেখান থেকে মারপিট শুরু হয়ে যায়। প্রধান শিক্ষক-সহ অন্যান্য শিক্ষকেরা অফিস ঘর থেকে ছুটে এসে পরিস্থিতি সামাল দেন।
মারপিটের ঘটনার জেরে দু-তিনজন ছাত্র আহত হয় বলে জানা গিয়েছে। তাদের জঙ্গিপুর মহকুমা হাসপাতালে পাঠানো হয়। পরে প্রাথমিক চিকিৎসার পর তাদের ছেড়ে দেওয়া হয়। এ ঘটনার প্রতিবাদ করায় ভূগোলের শিক্ষক প্রকাশ মন্ডলকে মারধর করা হয় বলে অভিযোগ উঠেছে স্কুলের ছাত্র ও কয়েকজন বহিরাগতদের বিরুদ্ধে। ওই শিক্ষককেও চিকিৎসার জন্য জঙ্গিপুর মহকুমা হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
এদিকে, এ ঘটনা চাউর হতেই রণক্ষেত্রের চেহারা নেয় এলাকা। হাজার খানেক মারমুখী বিক্ষোভকারী জড়ো হয়ে ওমরপুরে ৩৪নং জাতীয় সড়ক অবরোধ করেন। পুলিশের বিশাল বাহিনী ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি সামাল দেয়।
আরও পড়ুন: নদীর জলে ভেসে গেল অর্ধেক জাতীয় সড়ক
এ ঘটনা প্রসঙ্গে স্কুলের প্রধান শিক্ষক উৎপল মণ্ডল জানান, "এক ছাত্রের জয় শ্রীরাম বলা নিয়ে বাদানুবাদ শুরু হয়ে যায় সহপাঠীদের সঙ্গে। সেখান থেকে মারপিট বেঁধে গেলে দু-তিনজন ছাত্র সামান্য আহত হয়। সকলকে জঙ্গিপুর মহকুমা হাসপাতালে নিয়ে গিয়ে ভর্তি করানো হয়। যদিও প্রাথমিক চিকিৎসার পর তাদের ছেড়ে দেওয়া হয়।" এই ঘটনার জেরে স্কুলের প্রধান শিক্ষকের নির্দেশে আগামী ১৫ অগাস্ট পর্যন্ত স্কুলের একাদশ ও দ্বাদশ শ্রেণির পঠনপাঠন বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
উল্লেখ্য, 'জয় শ্রীরাম' ধ্বনি ঘিরে এর আগেও বাংলার বিভিন্ন প্রান্তে অশান্তি ছড়িয়েছে। কখনও ‘জয় শ্রীরাম’ বলায় মারধরের অভিযোগ উঠেছে। কখনও ‘জয় শ্রীরাম’ না বলায় আক্রান্ত হতে হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। ‘জয় শ্রীরাম’ ধ্বনি ঘিরে বাংলায় অশান্তির ঘটনায় মুখ খুলেছেন নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ অমর্ত্য সেন সহ একাধিক বিশিষ্ট নাগরিক।