Purba Bardhaman News: মুখ্যমন্ত্রীর হুঁশিয়ারি থোড়াই কেয়ার! 'বাংলার বাড়ি' প্রাপকদের থেকে মোটা টাকা আদায় পঞ্চায়েতের

Banglar Bari: 'বাংলার বাড়ি' প্রকল্পের উপভোক্তাদের কাছ থেকে 'ডেভলপমেন্ট ফি' বাবদ টাকা নিচ্ছে একের পর এক পঞ্চায়েত। ফের বড়সড় দুর্নীতির অভিযোগ বিরোধীদের।

Banglar Bari: 'বাংলার বাড়ি' প্রকল্পের উপভোক্তাদের কাছ থেকে 'ডেভলপমেন্ট ফি' বাবদ টাকা নিচ্ছে একের পর এক পঞ্চায়েত। ফের বড়সড় দুর্নীতির অভিযোগ বিরোধীদের।

author-image
Pradip Kumar Chattopadhyay
New Update
Malda News,Banglar Bari,Purba Bardhaman News,west bengal news,বাংলার বাড়ি,পূর্ব বর্ধমানের খবর

Banglar Bari: বাংলার বাড়ি প্রকল্পের উপভোক্তাদের কাছ থেকে 'ডেভলপমেন্ট ফি' নিচ্ছে একাধিক পঞ্চায়েত।

Purba Bardhaman News: ‘বাংলার বাড়ি’ (Banglar Bari) প্রকল্পে পঞ্চায়েতকে ‘নাক গলাতে’ নিষেধ করেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee)। তার পরেও মুখ্যমন্ত্রীর নিষেধাজ্ঞাকে অমান্য পূর্ব বর্ধমানের মেমারি ১ ব্লকের অধিকাংশ গ্রাম পঞ্চায়েতের। 'ডেভেলপমেন্ট ফি' বাবদ তৃণমূল কংগ্রেস পরিচালিত ওই পঞ্চায়েতগুলি 'বাংলার বাড়ি' প্রকল্পের সরকারি অনুদান-প্রাপকদের কাছ থেকে ৫০০- ১০০০ টাকা করে আদায় করেছে বলে অভিযোগ। এই ঘটনা জানাজানি হতেই নড়েচড়ে বসেছে ব্লক ও জেলা প্রশাসন। জেলাশাসক আয়েষা রানি এ ঘটনার তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন।

Advertisment

মেমারি ১ ব্লকে ১০ টি গ্রাম পঞ্চায়েত রয়েছে।  সবকটি গ্রাম পঞ্চায়েতই তৃণমূল কংগ্রেসের দখলে রয়েছে। ব্লকের পঞ্চায়েত সমিতির কর্তৃপক্ষের কথায় জানা গিয়েছে, 'বাংলার বাড়ি' প্রকল্পে মেমারি ১ ব্লকের প্রায় ৪৫০০ জন সরকারি অনুদান পাচ্ছেন। তাঁদের বেশিরভাগ জনের কাছেই প্রথম কিস্তির ৬০ হাজার টাকা ঢুকে গিয়েছে। অভিযোগ,অনুদান পেয়ে যাঁরা বাড়ি তৈরির কাজ শুরু করছেন, তাঁদের কাছ থেকেই ব্লকের বেশিরভাগ পঞ্চায়েত ‘ডেভেলপমেন্ট ফি’ নিচ্ছেন। তার মধ্যে দলুইবাজার ২ পঞ্চায়েত নাকি রীতিমতো মাইকে প্রচার করে  জানিয়ে দিয়েছে ‘বাংলার বাড়ি’ তৈরির সময় ‘ডেভেলপমেন্ট ফি’ দিতে হবে। 

এই অভিযোগ সত্য বলে স্বীকার করে নিয়েছেন দলুইবাজার ২ পঞ্চায়েতের সদস্য রাজীব মালিক। তিনি বলেন, "বাংলার বাড়ি প্রকল্পের জন্যে শংসাপত্র নিতে হবে বলে পঞ্চায়েত থেকে প্রচার করা হয়েছিল। সেই শংসাপত্র নেওয়ার জন্য ১০০০ টাকা করে পঞ্চায়েতকে দিতে হবে বলেও পঞ্চায়েত থেকে এলাকায় প্রচার করা হয়েছে।" মেমারি ১ পঞ্চায়েত সমিতির সদস্য অর্ক বন্দ্যোপাধ্যায় জানান, বাংলার বাড়ি প্রকল্পে প্রাপকদের কাছ থেকে দলুইবাজার ২ পঞ্চায়েতের টাকা নেওয়ার খবর পেয়েই তিনি ব্লকের বিডিও-র কাছে গিয়ে অভিযোগ করেছিলেন। পরে তিনি জানতে পারেন, শুধু দলুইবাজার ২ পঞ্চায়েতই নয়, দুর্গাপুর, নিমো ২ সহ ব্লকের  বেশিরভাগ পঞ্চায়েতই ‘বাংলার বাড়ি’ প্রাপকদের কাছ থেকে টাকা নিচ্ছে। 

Advertisment

আরও পড়ুন- West Bengal News Live Updates: অঙ্গপ্রত্যঙ্গ বিকল হয়েই প্রসূতির মৃত্যু, বিষাক্ত স্যালাইন কাণ্ডে ময়নাতদন্তের রিপোর্ট প্রকাশ্যে

এই বিষয়ে মেমারি ১ ব্লকের নিমো ২ পঞ্চায়েতের উপ-প্রধান শেখ আব্দুল রহমান কোন রাখঢাক না রেখেই বলেন, “বাংলার বাড়ি প্রকল্পের অনুদানকে কাজে লাগিয়ে যাঁরা ’বড় বাড়ি’ তৈরি করছেন, তাঁদের কাছ থেকেই ‘ডেভেলপমেন্ট ফি’ নেওয়া হয়েছে। আর যাঁরা ‘বাংলার বাড়ির’ মডেল অনুযায়ী বাড়ি করছেন, তাঁদের কাছ থেকে কোনও টাকা নেওয়া হচ্ছে না।” অন্যদিকে দুর্গাপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের উপ-প্রধান নিতাই ঘোষ বলেন, "আমরা কাউকে জোর করে উন্নয়ন খাতে অর্থ দিতে বলিনি। যাঁরা দিতে ইচ্ছুক, তাঁদের কাছ থেকেই নেওয়া হচ্ছে।" পঞ্চায়েতের উপ-প্রধানরা অকপটে ’ডেভেলপমেন্ট ফি’ নেওয়ার কথা স্বীকার করে নিলেও উপভোক্তারা এ নিয়ে পথে নেমে আন্দোলনে নামার সাহস দেখাতে পারছেন না। প্রতিবাদ করলে নানা অজুহাত দেখিয়ে পঞ্চায়েত দ্বিতীয় কিস্তির টাকা আটকে দিতে পারে, এমন ভয় তাঁদের মনে কাজ করছে। 

আরও পড়ুন- Poush Parbon: পৌষ পার্বণে সাবেকি ঢেঁকিতে সামান্য রোজগার, অতীতের 'সোনালী স্মৃতি' আজও আঁকড়ে বাংলার এপ্রান্ত!

এলাকার(মেমারি) তৃণমূল বিধায়ক মধুসূদন ভট্টাচার্য এই প্রসঙ্গে বলেন, “ডেভেলপমেন্ট ফি’ নেওয়া তো দূরের কথা 'বাংলার বাড়ি' প্রকল্পে পঞ্চায়েতের নাক গলানোয় নিষেধাজ্ঞা রয়েছে মুখ্যমন্ত্রীর। তারপরেও মেমারি ১ ব্লকের বেশ কিছু পঞ্চায়েত এই প্রকল্পের প্রাপকদের কাছ থেকে ‘ডেভেলপমেন্ট ফি’ নিচ্ছে। এটা জানার পরেই আমি  বিডিও-কে তদন্ত করে দেখতে বলেছিলাম।" মেমারি ১ ব্লক  তৃণমূলের সভাপতি তথা জেলা পরিষদের কর্মাধ্যক্ষ নিত্যানন্দ বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “দল ও সরকারের নির্দেশ রয়েছে 'বাংলার বাড়ি’ প্রাপকদের কাছ থেকে কেউ টাকা নিতে পারবে না। প্রকৃত ঘটনা কী তা প্রশাসন খতিয়ে দেখছে।” 

আরও পড়ুন- Tiger Panic: ফের পুরুলিয়ার জঙ্গলে বাঘের হানা? পায়ের ছাপ দেখেই শিউরে উঠলেন গ্রামবাসীরা!

তৃণমূল পরিচালিত গ্রাম পঞ্চায়েতের এই কীর্তির তীব্র সমালোচনা করেছে বিজেপি নেতৃত্ব। জেলা বিজেপির সহ-সভাপতি মৃত্যুঞ্জয় চন্দ্র  বলেন, "যা বোঝা যাচ্ছে মুখ্যমন্ত্রীর নিষেধাজ্ঞা এখন মূল্যহীন হয়ে পড়েছে। তৃণমূল কংগ্রেস পরিচালিত গ্রাম পঞ্চায়েতের কর্তা-ব্যক্তিরাও এখন মুখ্যমন্ত্রীর  নিষেধাজ্ঞা অমান্য করার স্পর্ধা দেখাচ্ছেন। তার প্রমাণ, 'ডেভেলপমেন্ট ফি'-এর নামে পঞ্চায়েতের প্রধান এবং পঞ্চায়েত সহায়কের স্বাক্ষর ও সিলমোহর দেওয়া রসিদ দিয়ে বাংলার বাড়ি প্রাপকদের কাছ থেকে মোটা টাকা আদায় কাণ্ড।" 

Bangla News Bengali News Today Purba Bardhaman news in west bengal news of west bengal Banglar Bari