চাকরির দাবিতে সোমবার দুপুর থেকে একটানা অবস্থান-আন্দোলন চলছে সল্টলেকের করুণাময়ীতে। প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদের অফিসের সামনে চলছে ধরনা-আন্দোলন। তবে ঠিক যে জায়গায় একটানা এই ধর্না চলছে তার পাশেই রয়েছে একটি হাসপাতাল। গতকাল দুপুর থেকে একটানা এই আন্দোলনের জেরে যারপরনাই সমস্যায় পড়তে হচ্ছে হাসপাতালে থাকা রোগীদের। হাসপাতালে ঢোকার ক্ষেত্রে সমস্যায় পড়ছেন সংকটাপন্ন রোগীদের।
চাকরির দাবিতে সোমবার দুপুর থেকে একটানা অবস্থান আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছেন ২০১৪ সালের নন-ইনক্লুডেড টেট উত্তীর্ণরা। চাকিরর দাবিতে আমরন অনশন শুরু করেছেন তাঁরা। এমনকী একটানা এই অবস্থান-বিক্ষোভের জেরে ইতিমধ্যেই বেশ কয়েকজন চাকরিপ্রার্থী অসুস্থও হয়ে পড়েছেন। তবে চাকরি প্রার্থীরা তাঁদের দাবিতে অনড়, নিয়োগপত্রের লিখিত সম্মতি না পেলে তাঁরা আন্দোলন থেকে একচুলও সরবেন না বলে সাফ জানিয়েছেন।
করুণামায়ীতে আন্দোলনস্থলের পাশেই রয়েছে একটি হাসপাতাল। একটানা এই আন্দোলনের জেরে ঘোরতর সমস্যায় পড়তে হচ্ছে হাসপাতালে থাকা রোগীদের। হাসপাতালে ঢোকা-বেরনোর পথে সমস্যায় পড়ছেন রোগীদের একটি বড় অংশ। শুধু তাই নয়, জরুরি প্রয়োজনে এই হাসপাতালে ঢোকার ক্ষেত্রে ভয়ঙ্কর দুর্ভোগে পড়তে হচ্ছে রোগীদের। হাসপাতালের সামনে চলা একটানা এই বিক্ষোভ তোলার আবেদন জনিয়েছেন সুপার তারকনাথ বন্দ্যোপাধ্যায়।
ওই বেসরকারি হাসপাতালের সুপার বলেন, ''এভাবে একটানা আন্দোলন চলায় সমস্যা হচ্ছে। হাসপাতালের সামনেই একসঙ্গে এত মানুষের চিৎকার-চেঁচামেচিতে রোগীদের সমস্যা হচ্ছে। এখানে ৪২ বেডের আইসিইউ রয়েছে। সেখানে সংকটাপন্ন রোগীদের ক্ষেত্রেও এই একই সমস্যা হচ্ছে। তাছাড়াও হাসপাতালে এমার্জেন্সি রোগীরা ঢুকতে পারছেন না। অন্য রোগীদের ঢোকা ও বেরনোর ক্ষেত্রেও সমস্যা হচ্ছে।''
আরও পড়ুন- ২০১৪-র টেট উত্তীর্ণদের আন্দোলন: দাবির আইনি বৈধতা নিয়ে প্রশ্ন পর্ষদ সভাপতির, রাজনৈতিক ইন্ধনের অভিযোগ
বেলঘড়িয়া থেকে পরিবারের এক সদস্যের গলব্লাডার স্টোনের অপরাশেন করাতে এই হাসপাতালে এসেছেন শম্ভুনাথ চক্রবর্তী। তাঁর গলাতেও ক্ষোভের একই সুর। হাসপাতালের সামনে এই বিক্ষোভের জেরে রোগী নিয়ে গাড়িতে করে তাঁরাও সরাসরি ঢুকতে পারেননি। অনেকটা দূরে গাড়ি ছেড়ে, পায়ে হেঁটে রোগী নিয়ে তাঁদের হাসপাতালে ঢুকতে হয়েছে।
এদিকে, চাকরির দাবিতে ২০১৪ সালের টেট উত্তীর্ণদের এই বিক্ষোভের যৌক্তিকতা নিয়েই প্রশ্ন তুলেছেন খোদ প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদের সভাপতি গৌতম পাল। তিনি বলেন, ''নিয়মের বাইরে কিছু করা যাবে না। চলতি বছরের নিয়োগ প্রক্রিয়ায় এঁদের অংশ নিতে হবে। আন্দোলনকারীরা কেউ প্যানেলভুক্ত হননি। ২০১৪ সালের টেট উত্তীর্ণদের নিয়োগের দাবি আইনসম্মত নয়।''