/indian-express-bangla/media/media_files/qaBSK2C1OiaZygASNhbk.jpg)
Muizzu Indians: প্রধানমন্ত্রী মোদী ও প্রেসিডেন্ট মুইজ্জু, যৌথ সহযোগিতার ওপর জোর দিয়েছেন। (ফাইল ছবি)
Muizzu Indians: মালদ্বীপে ভারতীয়দের আমন্ত্রণ জানালেন সেদেশের প্রেসিডেন্ট মহম্মদ মুইজ্জু। সোমবার তিনি প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর সঙ্গে যৌথ সাংবাদিক বৈঠক করেন। সেখানে প্রেসিডেন্ট মুইজ্জু বলেন, 'ভারত আমাদের বৃহত্তম পর্যটন বাজার। আমরা মালদ্বীপে আরও ভারতীয় পর্যটক চাই। মালদ্বীপের অনেকেই পর্যটন, চিকিৎসা, শিক্ষার মত নানা কারণে ভারতে আসেন। মালদ্বীপও চায়, বিপুল সংখ্যক ভারতীয় মালদ্বীপে আসুক। আর মালদ্বীপের আর্থিক উন্নয়নে অবদান রাখুক।'
গত একবছরে ভারত থেকে মালদ্বীপে যাওয়া পর্যটকের সংখ্যা কমেছে। লাক্ষাদ্বীপ-মালদ্বীপ বিতর্কের প্রেক্ষিতে ভারতের সঙ্গে মালদ্বীপের কূটনৈতিক সম্পর্ক খারাপ হয়েছে। যা দ্বীপরাষ্ট্রের আয়ে নেতিবাচক প্রভাব ফেলেছে। কারণ, মালদ্বীপের পর্যটন শিল্পের বাজার প্রায় ৬ কোটি মার্কিন ডলার। যার বেশিটাই আয় হয় ভারতীয় পর্যটকদের থেকে। পিক সিজনের পাশাপাশি, অফ সিজনেও প্রচুর ভারতীয় মালদ্বীপে ঘুরতে যান। ভারতীয়দের আকর্ষণ করতে মাস দুয়েক আগে, মালদ্বীপের পর্যটনমন্ত্রী ইব্রাহিম ফয়সাল, 'ওয়েলকাম ইন্ডিয়া' নামে এক রোড শো করেছেন। তিনি ভারতীয়দের মালদ্বীপের পর্যটনে অবদান রাখার অনুরোধ করেন। ফয়সাল সরাসরি স্বীকার করে নিয়েছেন যে, মালদ্বীপের অর্থনীতি পর্যটন-নির্ভর।
যদিও ভারত থেকে মালদ্বীপে পর্যটক যাওয়ার সংখ্যা কমার পিছনে সবচেয়ে বড় কারণ মালদ্বীপ নিজেই। গত বছরের নভেম্বরে মালদ্বীপের নির্বাচনের আগে মুইজ্জু 'ইন্ডিয়া আউট' প্রচার চালিয়েছেন। কিন্তু, এবার পরিস্থিতি দেখে তিনি উলটো সুরে গাইতে শুরু করেছেন। শুধু তাই নয়, যেদিন মুইজ্জুর ভারত সফরের কথা ঘোষণা করা হয়, তাঁর দুই মন্ত্রী- মালশা শরিফ ও মরিয়ম শিউনা ব্যক্তিগত কারণ দেখিয়ে সরকার থেকে পদত্যাগ করেছেন। মুইজ্জুর সরকারের এই দুই মন্ত্রী ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর বিরুদ্ধে অবমাননাকর মন্তব্য করেছিলেন।
প্রধানমন্ত্রী মোদীর লাক্ষাদ্বীপ সফরের পরে মালদ্বীপের ওই মন্ত্রীরা বিতর্কিত মন্তব্যগুলো করেছিলেন। এবার, ভারত সফরে এসে ভারতীয় পর্যটকদের মালদ্বীপে যাওয়ার জন্য মুইজ্জুর আহ্বান, তাঁর সরকারের নীতিগত পরিবর্তন হিসেবে দেখা হচ্ছে। আর, সেটাও বাধ্য হয়ে। কারণ, মালদ্বীপ ইতিমধ্যেই অর্থনৈতিক সংকটের মুখোমুখি হয়েছে।
মালদ্বীপের তিন জন উপমন্ত্রী লাক্ষাদ্বীপে পর্যটন সম্প্রসারণ নিয়ে ভারতের সিদ্ধান্তকে উপহাস করেছিলেন। যাতে প্রবল ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছিল। এর পরেই কয়েক হাজার পর্যটক তাঁদের মালদ্বীপ বেডা়নোর পরিকল্পিত বাতিল করেন। তারপরই, মালদ্বীপের বিদেশ দফতর তাদের মন্ত্রীদের বক্তব্যের দায় অস্বীকার করে।
মালদ্বীপ প্রেসিডেন্টের এই সফরে প্রধানমন্ত্রী মোদী ও প্রেসিডেন্ট মুইজ্জু, ওয়েবলিংকের মাধ্যমে, মালদ্বীপে RuPay কার্ড ব্যবহার করে একটি সরাসরি আর্থিক লেনদেনের সূচনা করেছেন। এর ফলে, মালদ্বীপে বেড়াতে যাওয়া ভারতীয় পর্যটকদের আর্থিক লেনদেন সহজ হবে। এতে মালদ্বীপের আর্থিক অগ্রগতি ঘটবে বলেও আশা করা হচ্ছে।
আরও পড়ুন- অ-জাঠ ভোটে হরিয়ানায় কুপোকাত কংগ্রেস, বাজিমাত বিজেপির
বিতর্ক শুরুর আগে ২০২৩ সালে ভারতই ছিল মালদ্বীপের পর্যটনের সবচেয়ে বড় বাজার। মালদ্বীপে সেবছর ১.৮ মিলিয়ন পর্যটক গিয়েছিলেন। যার মধ্যে ১১%-এরও বেশি পর্যটক ছিল ভারতীয়। বিতর্ক শুরু হওয়ার পর, ২০২৪ সালের জুলাইয়ে ভারত থেকে ৭১,৩৮১ জন পর্যটক মালদ্বীপে গিয়েছিলেন। যা আগের বছরের চেয়ে ৪২.৫% কম। এই পরিসংখ্যানের ফলে, মালদ্বীপে ঘুরতে যাওয়া পর্যটকদের সংখ্যার বিচারে ভারত প্রথম স্থান থেকে পিছিয়ে ষষ্ঠ স্থানে চলে যায়।