বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র ইউনিয়নের প্রধান সহ ১৪ জন আলিগড় মুসলিম ইউনিভার্সিটির (এএমইউ) ছাত্রকে ক্যাম্পাসে অশান্তির জেরে দেশদ্রোহিতার দায়ে অভিযুক্ত করা হয়েছে। সংবাদ সংস্থা পিটিআই জানিয়েছে, অল ইন্ডিয়া মজলিস-এ-ইত্তিহাদুল মুসলিমিন (AIMIM) নেতা তথা সাংসদ আসাদুদ্দিন ওয়েসি বিশ্ববিদ্যালয়ে আসতে পারেন, এই খবর ছড়ানোর পরেই ক্যাম্পাসে শুরু হয় প্রতিবাদ।
খবরে প্রকাশ, মঙ্গলবার এএমইউ-এর কিছু পড়ুয়া বচসায় জড়িয়ে পড়েন রিপাবলিক টিভি চ্যানেলের কয়েকজন সাংবাদিক এবং চিত্রগ্রাহকের সঙ্গে। ছাত্রদের অভিযোগ, বিনা অনুমতিতে ক্যাম্পাসে শুটিং করছিলেন ওই চ্যানেলের কর্মীরা, পাশাপাশি এএমইউ সম্পর্কে আপত্তিজনক মন্তব্যও করছিলেন তাঁরা। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের বক্তব্য, ওই টিভি চ্যানেলের কর্মীরা ওয়েসির সফর ক্যামেরাবন্দি করতে আসেন, যে সফর শেষমেশ বাতিল হয়ে যায়।
ভারতীয় জনতা যুব মোর্চা ওয়েসির সফরের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ করে দাবী জানায়, ক্যাম্পাসে ঢোকা নিষেধ হোক সাংসদের। পুলিশ সূত্রে খবর, যুব মোর্চার সদস্য মুকেশ লোদীর বয়ানের ভিত্তিতে ওই ১৪ জন ছাত্রের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হয়। লোদীর অভিযোগ, পাকিস্তানের সমর্থনে স্লোগান চলাকালীন তিনি শারীরিকভাবে কিছু ছাত্রের দ্বারা আক্রান্ত হন।
পুলিশি পদক্ষেপের বিরুদ্ধে ক্লাস বয়কটের ডাক দিয়েছে ছাত্র ইউনিয়ন। পুলিশ আরও জানিয়েছে, এলাকায় নিরাপত্তা বাড়ানো হয়েছে, এবং ক্যাম্পাসের আশেপাশে র্যাপিড অ্যাকশন ফোর্স মোতায়েন করা হয়েছে।
দেশদ্রোহিতার অভিযোগ দায়ের করার ঘটনার নিন্দা করে আলিগড় মুসলিম ইউনিভার্সিটি টিচার্স অ্যাসোসিয়েশন একটি প্রস্তাব পাশ করে। শিক্ষকরা বিশ্ববিদ্যালয়ের আচার্য তথা ভারতের রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোবিন্দের কাছে আবেদন করেন, তিনি যেন রাজ্য সরকারের এই পদক্ষেপের প্রতি স্বতঃপ্রণোদিত ভাবে নজর রাখেন।
ঘটনার পর বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ আলিগড় পুলিশের কাছে এফআইআর করার দাবীতে দুটি পৃথক অভিযোগ দায়ের করেন। একটি রিপাবলিক টিভির কর্মীদের বিরুদ্ধে, বিনা অনুমতিতে ক্যাম্পাসে প্রবেশ করার জন্য, এবং দ্বিতীয়টি অজ্ঞাতপরিচয় দুষ্কৃতীদের বিরুদ্ধে, ক্যাম্পাসে ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করার জন্য।
এএমইউ ছাত্র ইউনিয়নের সহ-সভাপতি হামজা সুফিয়ান ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসকে জানান, "ছাত্রছাত্রীদের একটি অনুষ্ঠান ছিল, সমাজের নিপীড়িত মানুষদের নিয়ে। রিপাবলিক টিভির রিপোর্টারদের কোনো অনুমতি ছিল না এই অনুষ্ঠান কভার করার বা ক্যাম্পাসে ঢোকার। প্রক্টর তাঁদের আটকালে তাঁরা ইউনিভার্সিটি স্টাফের সঙ্গে দুর্ব্যবহার করেন, এবং আপত্তিজনক স্লোগান তুলে বলেন, এএমইউ ' উগ্রপন্থীদের ইউনিভার্সিটি'।"