করোনা অতিমারীর শুরুতে মনে করা হয়েছিল কোভিড-১৯ ভাইরাস ষাটোর্ধ্বদের জন্য ঝুঁকি প্রবণ হলেও শিশুদের ক্ষেত্রে বিপজ্জনক হবে না। কিন্তু সে তথ্যও যে সঠিক নয়, কোভিডের দ্বিতীয় ঢেউয়ে গুজরাটে দুই শিশুর মৃত্যু প্রশ্ন তুলে দিল।
সুরাট থেকে আসা ১৫ দিনের এক কন্যাশিশু এবং দক্ষিণ গুজরাটের তাপি জেলার ১৪ দিনের শিশুর করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু চিন্তায় ফেলেছে গবেষকদেরও। বৃহস্পতিবার এই দুই শিশুকেই সুরাটের ডায়মন্ড হাসপাতালে ভেন্টিলেশনে রাখা হয়েছে। বুধবার শিশু কন্যাটিকে রেমডেসেভির ওষুধও দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু করোনার প্রাবল্যের কাছে হার মানে শিশু দেহ।
পয়লা এপ্রিল জন্মগ্রহণ করা দুই শিশুর প্রথম থেকেই শারীরিক সমস্যা ছিল বলে জানান হয়। তাঁদের শিশু বিশেষজ্ঞ ওয়ার্ডে স্থানান্তরিত করা হয়। ওই হাসপাতালের শিশু বিশেষজ্ঞ ডাঃ অল্পেশ সাংভি বলেন, "আমরা প্রথমে মায়েদের র্যাপিড অ্যান্টিজেন টেস্ট করিয়েছিলাম। রিপোর্ট নেগেটিভ এসেছিল। কন্যা সন্তান জন্মানোর পর দু'দিন চিকিৎসার পর শিশুকে স্তন্যপান করান মা। এরপর আবার ওই শিশুটির শারীরিক সমস্যা দেখা দেয়। আমরা সবরকম চেষ্টা করেছি।"
আরও পড়ুন, করোনায় শিশুরা আক্রান্ত কম, কিন্তু তাদের ঝুঁকি বেশি
চিকিৎসক বলেন, "শিশুটির ফুসফুসের এক্স রে রিপোর্টে কোভিডের উপস্থিতি দেখা গিয়েছে। ডাক্তারের কথায়, “আমরা আইসিইউতে সমস্ত ডাক্তার এবং নার্সিং কর্মীদের পরীক্ষা করেছিলাম এবং কেউই কোভিড পজিটিভ ছিলেন না। আমরা পরে তার মায়ের পরীক্ষা করেছিলাম এবং তাকে কোভিড পজিটিভ পেয়েছি। যখন আমরা শ্বাসকষ্টজনিত সমস্যার দেখা পেলাম তখন আমরা শিশুটিকে ভেন্টিলেটরে রেখেছিলাম। রেমডেসিভির ইঞ্জেকশন এবং পুষ্টির পরিপূরক দেওয়া শুরু করি। কিন্তু এই ধকল ওই শিশু শরীরের পক্ষে নেওয়া সহজ ছিল না।"
একই ঘটনা ঘটে তাপি জেলার শিশুপুত্রের দেহেও। জন্মের পর পরই কোভিড জ্বর দেখা দেয় ওই বাচ্চার দেহে। পরবর্তীতে করোনার একাধিক উপসর্গ পরিলক্ষিত হয়। ১১দিন ধরে চিকিৎসার পরও প্রাণ বাচানো যায়নি ওই শিশুর।
আরও পড়ুন, জুনেই করোনায় দৈনিক মৃত্যু ছাড়াতে পারে ২০০০? কী বলছে ল্যানসেট কোভিড রিপোর্ট
দেশে প্রতিনিয়ত বৃদ্ধি পাচ্ছে করোনা। মাস্ক বিধি, সামাজিক দূরত্বের তোয়াক্কা না করেই চলছে জনসমাগম, যাতায়াত। অনায়াসেই দাপট বাড়াচ্ছে কোভিড। কিন্তু এখন সেই সময় অঙ্গীকার নেওয়ার। এ পৃথিবীকে শিশুর বাসযোগ্য করে তোলার।
Read the story in English
ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা এখন টেলিগ্রামে, পড়তে থাকুন