রাষ্ট্রদোহের সংজ্ঞা নির্ধারণ করবে আদালত। সোমবার ২টি তেলুগু চ্যানেলের বিরুদ্ধে অন্ধ্রপ্রদেশ সরকারের দায়ের করা রাষ্ট্রদ্রোহের মামলার শুনানি হয়েছে। সেই শুনানিতে শীর্ষ আদালতে বড় ধাক্কা খেয়েছে অন্ধ্রপ্রদেশ সরকার। সেই সময় এই মন্তব্য করেছে বিচারপতি ডি ওয়াই চন্দ্রচূড়ের বেঞ্চ। বিচারপতি বলেন, ‘‘২টি চ্যানেলের বিরুদ্ধে অন্ধ্রপ্রদেশ সরকারের দায়ের করা রাষ্ট্রদ্রোহের অভিযোগ, বিচলিত করা মতো ঘটনা। এখন রাষ্ট্রদ্রোহের সংজ্ঞা নির্ধারণ করতে হবে আদালতকে।’’
কোভিড মোকাবিলায় ব্যর্থতা-সহ একাধিক বিষয়ে বেশ কিছুদিন ধরে অন্ধ্রপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী ওয়াইএস জগন্মোহন রেড্ডির সমালোচনা করছে ২টি টিভি চ্যানেল। ২ সপ্তাহ আগে তাদের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রদ্রোহের মামলা দায়ের করে রাজ্য সরকার। পাশাপাশি, মুখ্যমন্ত্রীর বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ তোলার অভিযোগে শাসক দল ওয়াইএসআর কংগ্রেসের সাংসদ কে রঘু রামকৃষ্ণ রাজুর বিরুদ্ধে রাষ্ট্রদ্রোহের মামলা দায়ের করে তাঁকে গ্রেফতার করা হয়েছে। রাজু এবং সংশ্লিষ্ট ২টি টিভি চ্যানেল রাষ্ট্রদ্রোহের অভিযোগ চ্যালেঞ্জ করে সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হয়েছে।
সোমবার মামলার শুনানি-পর্বে দু’টি টিভি চ্যানেলের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রদ্রোহের মামলা দায়ের প্রসঙ্গে বিচারপতি চন্দ্রচূড়ের তির্যক মন্তব্য, ‘গতকাল সংবাদমাধ্যমে দেখলাম মৃতদের নদীতে ছুড়ে ফেলা হচ্ছে। জানি না টিভি চ্যানেলের বিরুদ্ধে কোনও রাষ্ট্রদ্রোহের মামলা দায়ের করা হয়েছে কি না!’
প্রসঙ্গত, ইতিমধ্যেই সাংসদ রাজুর জামিনের আবেদন মঞ্জুর করেছে সুপ্রিম কোর্ট। সোমবার রাষ্ট্রদ্রোহের সীমারেখা নির্ধারণের প্রয়োজনীয়তার কথা জানিয়ে শীর্ষ আদালতের পর্যবেক্ষণ জগন্মোহন সরকারের কাছে ‘ধাক্কা’ বলেই মনে করা হচ্ছে। ২০১৬ সালে সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি দীপক মিশ্র এবং বিচারপতি উদয় ললিতের ডিভিশন বেঞ্চ রায় দিয়েছিল, ‘নির্বাচিত সরকারের সমালোচনা করলেই তা রাষ্ট্রদ্রোহ হতে পারে না’। ভারতীয় দণ্ডবিধির ১২৪-এ ধারা (রাষ্ট্রদ্রোহ)-র অপপ্রয়োগ সম্পর্কেও সেসময় উদ্বেগ প্রকাশ করেছিল শীর্ষ আদালত।