আন্তর্জাতিক জলসীমা বুঝতে না পারায় পাক নৌসেনার হাতে প্রাণ গেল ভারতীয় এক মৎস্যজীবীর। গুলিবিদ্ধ হয়ে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আরও ১। এই ঘটনায় পাক বাহিনীর ভূমিকায় ক্ষোভে ফুঁসছে ভারত। কূটনৈতিকস্তরে মৎস্যজীবী খুন নিয়ে সোচ্চার হবে নয়াদিল্লি। ইতিমধ্যেই ভারতের তরফে একটি এফআইআর দায়ের করা হয়েছে। কেন্দ্রের একটি সূত্র জানিয়েছেন, “এই ঘটনাটি অত্যন্ত গুরুত্ব সহকারে দেখা হচ্ছে। পাকিস্তানের সঙ্গে এব্যাপারে কূটনৈতিকস্তরে কথাবার্তা হবে।”
গুজরাতের দেবভূমি দ্বারকার পুলিশ সুপার জানিয়েছেন, গত ২৫ অক্টোবর গুজরাতের ওখা বন্দর থেকে 'জলপরী' নামে একটি বোটে চেপে সমুদ্রে মাছ ধরতে গিয়েছিলেন সাত মৎস্যজীবী। যাঁদের মধ্যে পাঁচজন ছিলেন গুজরাতের বাসিন্দা, বাকি দু'জন মহারাষ্ট্রের বাসিন্দা। গভীর সমুদ্রে আন্তর্জাতিক জলসীমার কাছে পৌঁছে গিয়েছিলেন তাঁরা। আরব সাগরে ভারতীয় মৎস্যজীবীদর সেই নৌকা পাক সীমান্তের কাছে চলে যায়। ঠিক সেই সময় তাঁদের সতর্ক করার বদলে এলোপাথাড়ি গুলি ছুঁড়তে শুরু করে পাক বাহিনী। গুলিবিদ্ধ হয়ে মৃত্যু হয় মহারাষ্ট্রের পালঘরের ৩২ বছরের মৎস্যজীবী শ্রীধর চামরের। গুলিতে জখম হন আরও এক মৎস্যজীবী।
গুজরাতের ওখা থেকে 'জলপরী' নামে ওই বোটে গত ২৬ অক্টোবর মাছ ধরতে বেরোন ওই সাত মৎস্যজীবী। দেবভূমি দ্বারকার পুলিশ সুপার সুনীল জোশি বলেন, “তাঁরা জাখাউ উপকূলে মাছ ধরছিলেন। শনিবার পাক বাহিনী বিকেল ৪টের দিকে তাঁদের ধাওয়া করে এবং গুলি চালায়।” পাক বাহিনীর গুলিতে জখম আরও এক মৎস্যজীবী দিলীপ সোলাঙ্কি চিকিৎসাধীন রয়েছেন। তবে আপাতত তাঁর বিপদের আশঙ্কা নেই।
পাক বাহিনীর গুলিতে নিহত মহারাষ্ট্রের শ্রীধর চামরে নামে ওই মৎস্যজীবীর এক আত্মীয় বলেন, “মাঝেমধ্যেই সমুদ্রে মাছ ধরতে যেতেন শ্রীধর। মাছ যখন মিলত না তখন তিনি ফিরে আসতেন। এবার অগাস্ট মাসে মাছ ধরতে বেরিয়েছিলেন তিনি। তারপর থেকে সেখানেই ছিলেন। পরিবারের একমাত্র উপার্জনকারী সদস্য ছিলেন শ্রীধর। সরকারের তাঁর পরিবারের পাশে দাঁড়ানো উচিত।”
আরও পড়ুন- রোগ প্রতিরোধ ও চিকিৎসাকল্পে তিরিশ ঊর্ধ্বদের ডেটাবেস গড়ছে কেরল সরকার
এদিকে, পোরবন্দরের একজন মৎস্যজীবী মণীশ লোধারি জানিয়েছেন, PMSA বা পাক বাহিনী অন্য আরও একটি মাছ ধরার নৌকা আটক করেছে। 'শ্রী পদ্মানি' নামে ওই ভারতীয় নৌকায় ৬ মৎস্যজীবী ছিলেন। তাঁদেরও আটক করা হয়েছে। সূত্র মরফত জানা গিয়েছে, 'শ্রী পদ্মানি' এবং 'জলপরী' নামে দুটি বোটই একই মৎস্যজীবীদের গ্রুপের ছিল। গুজরাতের জাখাউ উপকূল থেকে বোট দুটির সঙ্গে যোগাযোগ রাখা হচ্ছিল।
এর আগে গত বছরের ফেব্রুয়ারিতেও সমুদ্রে পাকিস্তানের হাতে ভারতীয় মৎস্যজীবীদের ধরা পড়ার ঘটনা বাড়তে শুরু করেছিল। সেই সময়ে রাজ্য বিধানসভায় গুজরাত সরকারের তরফে জানানো হয়েছিল ১৩-১৮ ফেব্রুয়ারির মধ্যে পাক বাহিনী ১১ টি বোট-সহ ৬৩ জন মৎস্যজীবীকে আটক করে। এঁদের মধ্যে একদিনে সর্বোচ্চ ২৩ ভারতীয় মৎস্যজীবীকে আটক করেছিল পাকিস্তান।
Read full story in English
ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা এখন টেলিগ্রামে, পড়তে থাকুন