Advertisment

চোর দায়ে গণপিটুনি, জয় শ্রীরাম বলতে বাধ্য যুবক মৃত ঝাড়খণ্ডে

ঝাড়খণ্ডের সেরাইকেলা খারসাওয়ান জেলার ধাতকিডি গ্রামে ঘটে যাওয়া এই ঘটনার একটি ভিডিওতে দেখা গেছে, আনসারিকে গণপ্রহার করা হচ্ছে, এবং বলা হচ্ছে "জয় শ্রীরাম" এবং "জয় হনুমান" বলতে।

author-image
IE Bangla Web Desk
New Update
jharkhand lynching

মৃত্যুর আগে তবরেজ আনসারি

কিছুদিন আগেই চোর অপবাদে ইলেকট্রিক খুঁটির সঙ্গে বেঁধে গণপ্রহার করা হয় তাঁকে। বাধ্য করা হয় "জয় শ্রীরাম" এবং "জয় হনুমান" বলতে। শনিবার মারা গেলেন তবরেজ আনসারি (২২)।

Advertisment

মঙ্গলবার ভোরে ঝাড়খণ্ডের সেরাইকেলা খারসাওয়ান জেলার ধাতকিডি গ্রামে ঘটে যাওয়া এই ঘটনার একটি ভিডিওতে দেখা গেছে, আনসারিকে গণপ্রহার করা হচ্ছে, এবং বলা হচ্ছে "জয় শ্রীরাম" এবং "জয় হনুমান" বলতে। আনসারি আদেশ মেনে তাই বলছেন, এবং মার থামানোর অনুরোধ করছেন।

চুরির দায়ে অভিযুক্ত বিচার বিভাগীয় হেফাজতে থাকা আনসারি শনিবার সকালে অসুস্থ বোধ করেন। তাঁকে প্রথমে সদর হাসপাতাল এবং পরে জামশেদপুরের টাটা মেইন হাসপাতালে নিয়ে গেলে তাঁকে মৃত ঘোষণা করা হয়।

সদর হাসপাতালের সিভিল সার্জন এ এন দে বলেন আনসারির মৃত্যুর কারণ "হার্ট অ্যাটাক বা ব্লকেজ", তবে ময়নাতদন্তের পরেই কারণ নিশ্চিত করা যাবে। আনসারির পরিবারের দাবি, চার ঘণ্টার "নির্মম প্রহারের" ফলেই মৃত্যু হয়েছে তাঁর।

আনসারিকে যেখানে বেঁধে রাখা হয়েছিল, সেখানে পুলিশ পৌঁছয় সকাল ছটা নাগাদ, জানিয়েছেন পুলিশ সুপার কার্তিক এস। তারপর আনসারিকে পুলিশ পোস্টে নিয়ে যাওয়া হয়। আদালতের নথি অনুযায়ী, সকাল সাড়ে নটার সময় তাঁর বয়ান রেকর্ড করা হয়, যেখানে তিনি আরো দুজনের সঙ্গে মিলে চুরির দায় স্বীকার করেন। এরপর তাঁকে আদালতে তোলা হয় এবং বিচার বিভাগীয় হেফাজতে পাঠানো হয়।

পুলিশ জানিয়েছে, অনসারির বিরুদ্ধে ভারতীয় দণ্ডবিধির ৪৫৭ (রাতে বাড়িতে অনধিকার প্রবেশ), ৩৮০ (চুরি), এবং ৪১১ (অসদুপায়ে চুরির দ্রব্য গ্রহণ করা) সমেত অন্যান্য ধারায় মামলা দায়ের করা হয়।

অভিযোগকারী কমল মাহতো পুলিশকে জানান, ১৮ জুন রাত দুটো নাগাদ তাঁর ও তাঁর পরিবারের সদস্যদের একটি আওয়াজ শুনে ঘুম ভেঙে যায়, এবং তাঁরা দেখেন, তাঁদের প্রতিবেশীদের ছাদে তিনজন লোক। তাঁদের চেঁচামেচি শুনে ছাদ থেকে লাফিয়ে পড়ে ওই তিনজন। দুজন পালিয়ে যায়, কিন্তু পায়ে চোট পাওয়ায় দৌড়তে পারেন নি আনসারি। একটি ঝোপের আড়ালে লুকিয়ে ছিলেন তিনি, যেখানে তাঁকে খুঁজে পান গ্রামবাসীরা।

মাহতোর অভিযোগে বলা হয়েছে, গ্রামবাসীরা আনসারির কাছে পান রেজিস্ট্রেশন নম্বর বিহীন একটি মোটরসাইকেল, একাধিক ওয়ালেট এবং একটি মোবাইল ফোন। পরে জানা যায় যে ফোনটি চোরাই মাল। অভিযোগ অনুযায়ী, এর পর পুলিশ ডেকে আনসারিকে তাদের হাতে তুলে দেওয়া হয়।মাহতোর অভিযোগ বা বয়ানে কোথাও গণপ্রহারের উল্লেখ নেই।

আনসারির আত্মীয় মকসুদ আলম বলছেন তাঁর কোনো অপরাধের ইতিহাস ছিল না। তাঁর বক্তব্য, "ধরে নিলাম ও চুরি করতে গিয়ে ধরা পড়ে, কিন্তু ওইভাবে বেঁধে ঘণ্টার পর ঘণ্টা মারা, জয় শ্রীরাম বলতে বাধ্য করা, অতীব জঘন্য।" আলম আরও বলেন, "ও মুসলিম, এটাই ওর ভুল। তা না হলে আজ বেঁচে থাকত ও।"

Read the full story in English

Advertisment