Kerala Greeshma Sharon Case: প্রেমিককে বিষ প্রয়োগ করে নৃশংস খুন। সোমবার কেরলের তিরুবনন্তপুরমের নেয়াত্তিনকারার আদালত ২৪ বছরের তরুণী গ্রীষ্মাকে ফাঁসির আদেশ দিল। কন্যাকুমারীর বাসিন্দা গ্রীষ্মা এবং তাঁর প্রেমিক তিরুবনন্তপুরমের বাসিন্দা শ্যারন রাজ ২০২১ সাল থেকে সম্পর্কে ছিল। গ্রীষ্মা ইংরাজিতে স্নাতকোত্তর স্তরে পড়াশোনা করত এবং শ্যারন স্নাতক স্তরের তৃতীয় বর্ষের ছাত্র ছিল। এই খুনে প্ররোচনা দেওয়ার অভিযোগে গ্রীষ্মার মামা নির্মলাকুমারণ নায়ারকে ৩ বছরের জেলের সাজা দেওয়া হয়েছে। গত সপ্তাহেই তরুণীর মাকে বেকসুর খালাস করেছে আদালত।
গত ২০২২ সালের মার্চে শ্যারনের সঙ্গে সম্পর্কে থাকার সময়ই গ্রীষ্মার পরিবার এক সেনা অফিসারের সঙ্গে তাঁর বিয়ে ঠিক করে। সেই বিয়েতে রাজিও হয় গ্রীষ্মা। সরকারি কৌঁসুলির দাবি, বিয়ের দিন যত এগিয়েছে ততই গ্রীষ্মা শ্যারনকে খুনের ছক কষতে থাকে। বিয়ের পথে কাঁটা হিসাবে শ্যারনকে দুনিয়া থেকে সরাতে চেয়েছিল সে। বিয়ের প্রস্তুতির মধ্যেই শ্যারনের সঙ্গে সম্পর্কে ছিল তরুণী।
অনলাইনে পেনকিলার দিয়ে কীভাবে শরীরে প্রভাব ফেলে তা সার্চ করতে থাকে গ্রীষ্মা। এইভাবেই শ্যারনকে কখনও জল কখনও জ্যুসের সঙ্গে ওষুধ খাইয়ে বিষক্রিয়ার চেষ্টা করত গ্রীষ্মা। এতেও কাজ না হওয়ায় একদিন জ্যুস খাওয়ার চ্যালেঞ্জ করে তরুণী। তাতেও কোনও কাজ না হওয়ায় গ্রীষ্মা অন্য পন্থা অবলম্বন করে। গত ২০২২ সালের ১৪ অক্টোবর বিয়ের ঠিক এক মাস আগে গ্রীষ্মা শ্যারনকে বাড়িতে ডাকে। তখন শ্যারনকে সে আয়ুর্বেদিক পানীয় খেতে দেয়। তার মধ্যে বিষাক্ত পদার্থ মেশায় গ্রীষ্মা। যেহেতু আয়ুর্বেদিক ঔষধি খেতে একটু তিতকুটে হয় তাই কিছু বুঝতে পারেননি শ্যারন। এরপর প্রেমিকার বাড়ি থেকে ফেরার পর অসুস্থ বোধ করতে থাকেন শ্যারন। একাধিকবার বমি হয় তাঁর, রাতে হাসপাতালে ভর্তি হতে হয় তাঁকে।
এরপর ২৫ অক্টোবর ২৩ বছরের শ্যারনের অঙ্গপ্রত্যঙ্গ বিকল হওয়ার জেরে তিরুবনন্তপুরমের মেডিক্যাল কলেজে মৃত্যু হয়। তাঁর মৃত্যু আগে, গ্রীষ্মা তাঁকে বিষ দিয়েছে বলে সন্দেহ করেছিলেন শ্যারন। নিজের এক বন্ধুকে একথাও জানান, প্রেমিকা তাঁকে ধোঁকা দিয়েছে। শ্যারনের মৃত্যুর পর তাঁর পরিবার পুলিশের কাছে অভিযোগ দায়ের করে।
আরও পড়ুন সাজা ঘোষণার আগের দিন জেলে 'তাপ-উত্তাপ' নেই সঞ্জয়ের, চুটিয়ে খেললেন ক্যারাম
অক্টোবরের ৩১ তারিখ গ্রীষ্মাকে গ্রেফতার করা হয়। একবছর পরই জামিনে মুক্তি পান তরুণী। মা এবং মামাকেও খুনের প্ররোচনার অভিযোগে গ্রেফতার করা হয়। পুলিশ জানিয়েছে, জেরার সময় গ্রীষ্মা জানান, শ্যারনের সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্ন করতে চেয়েছিল সে। প্রেমিকের সঙ্গে অন্তরঙ্গ মুহূর্তের ছবিও মোবাইল থেকে মুছে ফেলতে বলেছিল। গ্রীষ্মার ভয় ছিল যে, সেইসব ছবি হবু বরকে পাঠাতে পারেন শ্যারন, তাঁকে খুনের পরিকল্পনা করে সে।