সাংবাদিক প্রিয়া রামানির বিরুদ্ধে দিল্লির পাতিয়ালা হাউজ আদালতে ফৌজদারি মানহানির মামলা দায়ের করলেন কেন্দ্রীয় বিদেশ প্রতিমন্ত্রী তথা প্রাক্তন সম্পাদক এম.জে. আকবর। #MeToo আন্দোলনে সমাজের নানা ক্ষেত্রের প্রতিষ্ঠিত মানুষদের নামে যৌন হেনস্থার অভিযোগ এনেছেন অসংখ্য মহিলা। আকবরের ক্ষেত্রে এখনও পর্যন্ত এমন অভিযোগ জানিয়েছেন দশ মহিলা। তাঁদের মধ্যে প্রথম প্রিয়া রমানিই এম.জে. আকবরের নাম করে সরাসরি অভিযোগ করেন। সোমবার করনজওয়ালা অ্যান্ড কোং-এর মাধ্যমে আইনি পদক্ষেপ গ্রহণ করেন আকবর।
আরও পড়ুন- #MeToo ঝড় সামাল দিতে কেন্দ্রের হস্তক্ষেপ, তৈরি হবে আইনি প্যানেল
#MeToo সূত্রে আকবরের নাম যখন সামনে আসে, সে সময় তিনি বিদেশ মন্ত্রকের কাজে দেশের বাইরে ছিলেন। রবিবার দেশে ফিরেই এম জে আকবর জানান, কিছুক্ষণের মধ্যেই তাঁর বিরুদ্ধে ওঠা যৌন হেনস্থার অভিযোগ প্রসঙ্গে তিনি মুখ খুলবেন। এরপর তিনি সরাসরি সব অভিযোগকে 'উদ্দেশ্যপ্রণোদিত ও বানানো' বলে খারিজ করে দেন এবং আইনি পদক্ষেপ গ্রহণ করবেন বলে জানান। এরপর সোমবারই প্রিয়া রমানির বিরুদ্ধে ফৌজদারি মানহানির মামলা করলেন তিনি। এদিন ভারতীয় দন্ডবিধির ৪৯৯ (মানহানি) ও ৫০০ ধারায় রামানিকে নোটিস পাঠাতে আবেদন করেছেন আকবর। উল্লেখ্য ভারতীয় দন্ডবিধির ৫০০ ধারা অনুযায়ী, অভিযুক্ত দোষী সাব্যস্ত হলে দু'বছরের কারাদন্ড অথবা জরিমানা কিংবা দুটি একই সঙ্গে হতে পারে। এম.জে. আকবর তাঁর আবেদনে জানিয়েছেন, প্রিয়া রামানির অভিযোগ শুধু তাঁর সুনাম ক্ষুণ্ণ করেনি, পাশাপাশি সমাজে ও আত্মীয়-বন্ধুদের মধ্যে এ জন্য তাঁর বদনাম হয়েছে। এটিকে 'অপূরণীয় ক্ষতি' বলে উল্লেখ করেছেন তিনি। এছাড়া, তাঁর বিরুদ্ধে এসব অভিযোগ কেন ঠিক লোকসভা নির্বাচনের আগেই তোলা হচ্ছে, সে বিষয়েও ইঙ্গিতবহ প্রশ্ন তুলেছেন একদা দুঁদে সাংবাদিক এম.জে. আকবর।
আরও পড়ুন- #MeToo: লড়াই জারি থাকবে, জানিয়ে দিলেন এম জে আকবরের বিরুদ্ধে যৌন হেনস্থার অভিযোগ আনা পাঁচ সাংবাদিক
'এশিয়ান এজ' খবরের কাগজে একদা তাঁর সহকর্মী প্রিয়া রামানির অভিযোগের বিষয়ে বলতে গিয়ে এম.জে. আকবর বলেন, গতবছরও এই একই অভিজ্ঞতার কথা উল্লেখ করে একটি নিবন্ধ লিখেছিলেন রামানি। কিন্তু, সেখানে কোনও ব্যক্তির নাম প্রকাশ করেননি তিনি। আকবরের দাবি, রামানি জানতেন এটা মিথ্যা, তাই সে সময় নাম উল্লেখ করেননি। এরপরই তিনি বলেন, "সম্প্রতি রামানিকে প্রশ্ন করা হয়েছিল যে কেন তিনি আমার নাম লেখেননি"? এর উত্তরে রামানির টুইটে লেখেন, "তাঁর নাম লিখিনি, কারণ তিনি কিছুই করেননি"। এর মাধ্যমে রামানির এই অভিযোগ যে অসত্য এবং ভোটের আগে বিশেষ কুউদ্দেশ্য নিয়ে করা তাই বোঝাতে চেয়েছেন এম.জে. আকবর।
উল্লেখ্য, প্রিয়া রমানিই প্রথম সরাসরি এম.জে. আকবরের বিরুদ্ধে মুখ খোলেন। এরপর আরও কয়েকজন মহিলা সাংবাদিকও তাঁদের অভিজ্ঞতার কথা প্রকাশ করেন। ৮ অক্টোবরের টুইটে প্রিয়া রামানি লেখেন, গতবছর তিনি একটি নিবন্ধে লিখেছিলেন যে এক সম্পাদক তাঁকে চাকরির ইন্টারভিউ নিতে নিজের হোটেলে ডেকেছিলেন এবং বিছানায় তাঁর সঙ্গে বসতেও বলেছিলেন। সেই সম্পাদক হলেন এম.জে.আকবর। রামানির এই টুইটের পরই দেশ জুড়ে তোলপাড় শুরু হয়। একাধিক মহিলা সাংবাদিক যাঁরা অতীতে আকবরের সঙ্গে কাজ করেছেন, তাঁরাও প্রাক্তন সম্পাদকের বিরুদ্ধে অভিযোগে সোচ্চার হন।
Read this story in English