বিহারের নির্বাচনী ফলাফলে দাগ কাটতে পেরেছে আসাউদ্দিন ওয়েইসির অল ইন্ডিয়া মজলিস-ই-ইত্তেহাদ-দুল মুসলিমিন। এবার তাদের লক্ষ্য বাংলা। ছয় মাস পরেই এ রাজ্যে বিধানসভা ভোট। আপাতত সেই ভোটেই প্রার্থী দিতে ব্লুপ্রিন্ট সাজাচ্ছে এআইএমআইএম। বিহারের মতই এনআরসি ও সিএএ বিরোধী প্রচারকে হাতিয়ার করেই পশ্চিমবঙ্গেও ভোটে ঝাঁপাতে মরিয়া ওয়েইসির দল। আর এতেই চওড়া হাসি বিজেপি নেতৃত্বের মুখে। এআইএমআইএম প্রার্থী দিলে হিন্দু ভোটের একত্রিকরণে যেমন সুবিধা হবে, তেমনই তৃণমূলের মুলসিম ভোট ব্যাংকে থাবা পড়তে পারেও বলেও মনে করছে গেরুয়া থিঙ্ক ট্যাঙ্ক।
প্রতিবেশী রাজ্য বিহারের ভোট ফলাফলের বিশ্লেষণ থেকেই স্পষ্ট, আসাউদ্দিন ওয়েইসির এআইএমআইএম-এর সাফল্য এনডিএ-র লক্ষ্যে পৌঁছনোর সহায়ক হয়েছে। তারপর থেকেই বিজেপির 'বি টিম' হিসাবে এআইএমআইএম-কে দেহে দেওয়ার চেষ্টা করছেন বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলো। তবে, একে গুরুত্ব দিতে নারাজ পদ্ম বাহিনী। যদিও তাঁরা মানছেন যে, 'দলের নির্বাচনী কার্যকলাপে যুক্ত বাংলার এক বিজেপি নেতার কথায়, 'কংগ্রেস, বাম, তৃণমূল যা পারেনি এই মুসলিম সংগঠনটি তা করতে পারবে। ওদের যে আদর্শ, কর্মসূচি তাতে হিন্দু ভোট সহ সচেতন মানুষদের ভোট আমাদের পক্ষে আসবে।'
এ রাজ্যের বিজেপি নেতাদের কথায়, মোট ২৯৪ আসনের মধ্যে ৭৫-৮০ আসনে মুসলিমরা নির্ণায়ক শক্তি। পশ্চিমবঙ্গের মোট ভোটের ২৭ শতাংশ মুসলিম ভোট রয়েছে। মালদা, মুর্শিদাবাদ, উত্তর দিনাজপুরে প্রায় ৫০ শতাংশের বেশি সংখ্যালঘু ভোটার। এছাড়াও বীরভূম, দুই ২৪ পরগনা, হাওড়া, নদিয়াতেও মুসলিম ভোটারদের প্রভাব রয়েছে। হিন্দু ভোট একত্রিত করে নিজেদের শক্তি বাড়াতে এই সব জেলায় ইতিমধ্যেই জোর প্রচার চালাচ্ছে বিজেপি।
বাংলা লাগোয়া বিহারের সীমাঞ্চলের ১৪টি সহ মোট ২০ আসনে প্রার্থী দিয়েছিল এআইএমআইএম। এর মধ্যে ৫টিতে জয় পেয়েছে ওয়েইসির দল।
সম্প্রতি এআইএমআইএম প্রধান আসাউদ্দিন ওয়েইসি বলেছেন, বাংলায় মুসলিমরা আর্থ-সামাজিক দিক থেকে অনেকরটাই পিছিয়ে রয়েছেন। তাদের উন্নয়ন থেকে বিচ্ছিন্ন করে রাখা হয়েছে। দেশের অনেক জায়গার থেকে বাংলায় মুসলমানদের অবস্থা খারাপ। আগামী বিধানসভা ভোটে মুসলিম সম্প্রদায়ের অনুন্নয়নকে প্রচারে তুলে ধরার পাশাপাশি সিএএ-এনআরসি ইস্যুকে পুঁজি করেই বাংলায় বাজিমাতের চেষ্টার এআইএমআইএম।
তৃণমূলও সিএএ-এনআরসি বিরোধী। এই কারণের সঙ্গেই রাজ্যের নানান উন্নয়ন কর্মসূচিকে তুলে ধরে জোড়া-ফুলের বিরুদ্ধে সংখ্যালঘু 'তুষ্টিকরণ' রাজনীতির অভিযোগ তুলে সরব বিজেপি। এই পরিস্থিতিতে এআইএমআইএম প্রার্থী দিলে তৃণমূলের ভোট ব্যাংকেই থাবা বসবে বলে অনুমান করছে বিজেপি শিবির। আর তাতেই নির্বাচনী সুবিধা মিলতে পারে বলে আশা পদ্ম বাহিনীর।
Read in English
ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা এখন টেলিগ্রামে, পড়তে থাকুন