Advertisment

ভাঙনের মুখে ত্রিপুরার বিজেপি-আইপিএফটি জোট?

সাংবাদিকদের দেওয়া এক বিবৃতিতে বিজেপি রাজ্য জনজাতি মোর্চার সভাপতি সঞ্জয় দেববর্মা অভিযোগ করেন, আইপিএফটি সারা রাজ্যে বিভিন্ন কারণে বিশৃঙ্খলার সৃষ্টি করছে।

author-image
IE Bangla Web Desk
New Update
NULL

ছমাস ঘুরতে না ঘুরতেই আড়ি। ত্রিপুরার শাসক জোটে চিড় ধরার ইঙ্গিত। শাসক বিজেপির তফসিলি উপজাতি সংস্থা জনজাতি মোর্চা দাবি জানিয়েছে, অবিলম্বে রাজ্য সরকারে উপজাতি অংশীদার দল ইন্ডিজেনাস পিপলস ফ্রন্ট অফ ত্রিপুরার (আইপিএফটি) সঙ্গে সম্পর্ক ত্যাগ করা হোক।

Advertisment

এ বছরের ফেব্রুয়ারিতে বিজেপি-আইপিএফটি জোট ৪৪টি আসন পেয়ে বিধানসভায় নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা অর্জন করে, এবং রাজ্যে ২৫ বছরের বাম শাসনের ইতি ঘটায়। বিজেপি একাই ৩৬টি আসন জিতে সংখ্যাগরিষ্ঠ দলের স্বীকৃতি পায়। তাদের জেতা আটটি আসনের ভিত্তিতে আইপিএফটি রাজ্য ক্যাবিনেটে দুটি আসনও লাভ করে।

আরও পড়ুন: মনোনয়ন জমা দিতে না পারায় নির্বাচন পিছনোর আর্জি, অভিযোগের আঙ্গুল বিজেপির দিকে

আজ সাংবাদিকদের দেওয়া এক বিবৃতিতে বিজেপি রাজ্য জনজাতি মোর্চার সভাপতি সঞ্জয় দেববর্মা অভিযোগ করেন, আইপিএফটি সারা রাজ্যে বিভিন্ন কারণে বিশৃঙ্খলার সৃষ্টি করছে। তিনি বলেন, "সরকারের উন্নয়নমূলক কাজ সমস্ত আটকে রয়েছে। এদের কাজকর্মে সাধারণ মানুষ অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছেন।" সঞ্জয়বাবু আরও বলেন, আইপিএফটি-র সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্ন করার দাবি মুখ্যমন্ত্রী তথা রাজ্য বিজেপি সভাপতি বিপ্লব দেবের সামনে রাখা হয়েছে। তাঁর কথায়, "আমরা মুখ্যমন্ত্রীর কাছে আবেদন জানিয়েছি, আইপিএফটি-কে জোট থেকে সরিয়ে দেওয়ার। তিনি বলেছেন, এই জোটের সিদ্ধান্ত পার্টির কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের, এবং তিনি তাঁদের সঙ্গে এ নিয়ে কথা বলবেন।"

বিজেপির রাজ্য সহ-সভাপতি এবং জনজাতি মোর্চা নেতা রামপদ জামাতিয়া দাবি করেন, কিল্লা অঞ্চলে তাঁর বাসভবনের ওপর গতকাল কিছু আইপিএফটি সমর্থক হামলা চালায়। তিনি আরও বলেন, গোলাঘাটির বিধায়ক বীরচন্দ্র দেববর্মা সহ বেশ কিছু বিজেপি নেতা আইপিএফটি সমর্থকদের হাতে নিগৃহীত হয়েছেন। তিনি বলেন, "বিধায়ক বীরচন্দ্র দেববর্মা পুলিশে এফআইআর দায়ের করেছিলেন। কিন্তু তাঁর এবং তাঁর পরিবারের ওপর আইপিএফটি সমর্থকদের আক্রমণের ফলে সেটি তুলে নিতে বাধ্য হন। তাছাড়াও এরা রাজ্যের বিভিন্ন জায়গায় অপরাধমূলক কাজে জড়িত। আমরা চাই এদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হোক, এবং অবিলম্বে এই জোট ভেঙে দেওয়া হোক।"

publive-image ধলাই জেলায় অশান্তির চিত্র

এই অভিযোগের প্রতিক্রিয়া দিতে গিয়ে আইপিএফটি মুখপাত্র তথা সহযোগী সাধারণ সম্পাদক মঙ্গল দেববর্মা বলেন, তাঁর দল শান্তি এবং উন্নতির পক্ষে, কিন্তু বিজেপি জোট ভেঙে দিতে চাইলে তাঁদের আপত্তি নেই। তাঁর দাবি, বিজেপি সমর্থকরাই সংঘর্ষ শুরু করে পরে আইপিএফটি-র ঘাড়ে দোষ চাপানোর চেষ্টা করছে। তিনি আরও জানান, বিজেপির কিছু তফসিলি উপজাতি নেতা মন্ত্রীত্বের লোভে আইপিএফটি-র সঙ্গে বিজেপির জোট ভেঙে দিতে চাইছেন। মঙ্গল আরও বলেন, আইপিএফটি বিজেপির সঙ্গে হাত মিলিয়েছিল 'টিপরাল্যান্ডের' দাবি জোরদার করতে।

টিপরাল্যান্ড রাজ্যের উপজাতিদের নিয়ে গঠিত একটি প্রস্তাবিত আলাদা রাজ্য, যার দাবিতে ১৯৯৭ সালে গঠিত হয় আইপিএফটি। পরবর্তীকালে দলে ফাটল ধরলেও ২০০৯ সালে তার পুনরুজ্জীবন হয়, এবং প্রধান দাবি বলবৎ থাকে। "টিপরাল্যান্ডের দাবিতে আমরা অনড় থাকব। বিজেপি যদি মনে করে একাই রাজ্য চালাবে তাহলে তাই চালাক, তাদের একক বহুমত আছে। কিন্তু উপজাতিরা আমাদের সঙ্গেই আছেন," বলেন মঙ্গল।

publive-image পশ্চিম ত্রিপুরার ডুকলি গ্রামোন্নয়ন ব্লক অফিসের সামনে জটলা

ইতিমধ্যে গত তিনদিনে দুদলের সংঘর্ষে রাজ্যের বিভিন্ন জায়গা থেকে অন্তত ১৯ জনের আহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে, যাদের মধ্যে কিছু পুলিশকর্মীও রয়েছেন। মূলত আসন্ন পঞ্চায়েত উপনির্বাচনের মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার সময় সংঘর্ষ বাঁধে। উল্লেখ্য, পঞ্চায়েত উপনির্বাচনে বিজেপি এবং আইপিএফটি পৃথকভাবে প্রার্থী দিচ্ছে।

দুদলই সংঘর্ষের জন্য একে অপরকে দায়ী করেছে। হিংসার কারণে তাদের দলের প্রার্থীরা তিনটি ব্লকে মনোনয়ন জমা দিতে পারেন নি, এই অভিযোগ করে আইপিএফটি রাজ্য নির্বাচন কমিশনকে চিঠি দিয়ে আবেদন জানিয়েছে যে ওই ব্লকগুলিতে নির্বাচন প্রত্যাহার করা হোক।

bjp tripura biplab kumar deb
Advertisment